দেশের ৭৩টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে

    1
    314

    আমারসিলেট24ডটকম,৩১মার্চঃ আজ সোমবার চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম দফায় ৭৩ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। আর এ ভোটগ্রহণ উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যেই ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতিও সুসম্পন্ন করেছে ইসি। নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজ রবিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যা যা করা প্রয়োজন কমিশন তার সব ব্যবস্থাই করেছে। দেশের ৩৫ জেলার ৭৩ উপজেলায় নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের সব মালামাল পাঠানোও সম্পন্ন করেছে কমিশন। নির্বাচনে সকল ধরনের প্রচার প্রচারণা শনিবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যান্ত্রিক যান চলাচলের উপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
    সোমবারের নির্বাচনে ৭৩টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৩৬৪ জন, ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থী ৪২০ জন ও মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থী ২৭৯ জন। ৭৩ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৩৮০ জন, মহিলা ভোটার ৭১ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৭০৩টি ও ভোটকক্ষ ৩৫ হাজার ৯৪১টি। প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৫ হাজার ৭০৩ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোট কক্ষের জন্য একজন করে মোট ৩৫ হাজার ৯৪১ জন। পোলিং অফিসার ৭১ হাজার ৮৮২ জন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫২৬ জন দায়িত্ব পালন করবেন।
    প্রসঙ্গত দেশের ৪৮৭টি উপজেলার মধ্যে এর আগে গত প্রথম দফায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৭ উপজেলা, ২৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ১১৫ উপজেলা, ১৫ মার্চ তৃতীয় দফায় ৮১ উপজেলা এবং ২৩ মার্চ চতুর্থ দফায় ৯২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি উপজেলাগুলোর নির্বাচনের তফসিলও শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।
    এদিকে ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান বলেন, নিয়মানুযায়ী নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা আগে সব ধরনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ রয়েছে। তা অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পর ৬৪ ঘণ্টা পর পর্যন্ত। কেউ আইন ভঙ্গ করলে কারাদন্ড ও আর্থিক দন্ডে দন্ডিত হবেন। এমনকি প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে। এছাড়া নির্বাচনে শান্তিশৃংখলা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী সদস্যরা মাঠে নেমেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। নির্বাচনের আগে দুদিন, নির্বাচনের দিন এবং পরে দুদিন মোট ৫ দিন সেনা সদস্যরা মাঠে থাকবে।
    এ নির্বাচনে প্রতি উপজেলায় এক প্লাটুন সেনাবাহিনী সদস্য এবং প্রতি উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি করে গাড়ি টহলে থাকবে। প্রতি প্লাটুনে ৩৪জন সেনাসদস্য থাকবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়। মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। এ ছাড়া প্রতিকেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (নারী-৪, পুরুষ-৬ জন) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রাম-পুলিশ একজন করে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন। পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর এলাকায় এ সংখ্যা শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে দুজন হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ২৯২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
    পঞ্চম দফায় যে ৭৩ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হলো- দিনাজপুর জেলার বিরল, পার্বতীপুর ও হাকিমপুর, নীলফামারী জেলার ডোমার, লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ। বগুড়া জেলার বগুড়া সদর, রাজশাহী জেলার পবা, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি ও শাহজাদপুর। পাবনা সদর ও বেড়া, চূয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা ও চূয়াডাঙ্গা সদর, সাতক্ষীরা জেলার সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও তালা, বরগুনা জেলার বামনা, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর ও আমতলী, পটুয়াখালী জেলার দশমিনা ও কলাপাড়া, টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর ও গোপালপুর, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও, ত্রিশাল ও নান্দাইল।
    কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম ও পাকুন্দিয়া, মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী, সিরাজদিখান ও লৌহজং, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ, নরসিংদী জেলার মনোহরদী, নরসিংদী সদর ও রায়পুরা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ। সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর, সিলেট জেলার বিয়ানিবাজার, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী ও রাজনগর, হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা, আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর ও চান্দিনা।
    ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া, লক্ষীপুর জেলার রামগতি, লক্ষ্মীপুর সদর, রামগঞ্জ ও রায়পুর, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, টেকনাফ ও উখিয়া, খাগড়াছড়ি জেলার দিঘিনালা, রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, লংগদু, রাজস্থলী ও বিলাইছড়ি এবং গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা।