ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের অভ্যন্তরীণ ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলন

0
86

অদ্য ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের অভ্যন্তরীণ ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন। সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের মহাসচিব ও ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন- সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে আমরা কূটনীতিকদের গতিবিধি ও মন্তব্যসমূহ লক্ষ্য করছি যে তারা একটি বিশেষ মহলকে সহায়তার উদ্দেশ্যে কূটনৈতিক আচরণের পরিপন্থি কার্যক্রমে জড়িয়ে পরেছেন। ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ গুলশানে বিএনপি নেতা ড. মঈন খান এর বাসায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার, স্পেনের রাষ্ট্রদূত, সুইডেনের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত, জাপানের মিনিস্টার কাউন্সিলর একটি সভায় যোগ দেন। ৬ ডিসেম্বর ১৫টি দেশের কূটনীতিকদের যৌথ বিবৃতি, পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি সহ বিভিন্ন বিষয় আমাদের কাছে উদ্বেগ জনক ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, জাতিসংঘ ভিয়েনা কনভেনশন এর আলোকে একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব, কর্তব্য, আচারণ এর সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশে কূটনীতিকগণ তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দায়িত্ব পালন করছেন। যে সকল কূটনীতিকগণ বাংলাদেশের মানবাধিকার, নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আচরণ বিধি বহির্ভূত মন্তব্য-বিবৃতি প্রদান করেন তাদের দেশে কি কূটনৈতিকরা এভাবে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারে? উন্নয়নের অংশীদার ও বন্ধু প্রতিম রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে যেকোন সু-পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণযোগ্য কিন্তু অনধিকারচর্চা অবশ্যই নিন্দনীয়।
গত ১৪ই ডিসেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে মায়ের কান্না নামক একটি সংগঠনের কর্মীগণ তাদের মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি অবহিত করার জন্য স্মারক লিপি প্রদানের চেষ্টা করেন। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাদের কথা শুনতে অপারগতা প্রকাশ করা অত্যন্ত দুঃখজনক। ‘মায়ের ডাক’ এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত যদি শাহীনবাগে একটি বিশেষ বাসায় যেতে পারেন তাহলে ‘মায়ের কান্না’ এর ডাকে সাড়া দিতে বাধা কোথায়? মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই দ্বৈত আচরণ দেশের সাধারণ জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে এ দেশকে বুদ্ধিজীবী শুন্য করতে একাত্তরের পরাজিত শক্তি গুম ও খুনের খেলায় মেতে উঠেছিল। সেই অশুভ শক্তিকে অস্ত্র-অর্থ দিয়ে শুধু সহযোগিতাই নয়, জাতিসংঘকে দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে নস্যাৎ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা পত্রের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির রাষ্ট্রদূত যখন বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেন, তখন সেটাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মনে হয়। কূটনীতিকদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, মানবাধিকার এবং নির্বাচন বিষয়ে অনাকাক্সিক্ষত মন্তব্যে আমরা মানবাধিকার কর্মীরা ও নাগরিক সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থ-সিদ্ধির ভূমিকায় অবতীর্ণ না হওয়ার জন্য কূটনৈতিকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের বিশ^াস সম্মানীত কূটনীতিকগণ আন্তরিকভাবে তাদের দেশের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে বাংলাদেশের সাথে তাদের দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ ও সৌহার্দ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, সাবেক ধর্ম ও পানি সম্পদ মন্ত্রী এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান, ইসলামী আরবি বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আহম্মদ আবুল কালাম।প্রেস বিজ্ঞপ্তি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here