জাফলংয়ে ফের অবৈধ বোমা মেশিন, নিরব প্রসাশন ?

    0
    280

    “বাঁশকলের মাধ্যমে কোটি টাকার রাজস্ব ফাকি”

     

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৮মে,রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:   সিলেটের জাফলংয়ের পিয়াইন নদীর বুকে ফের চেপে বসেছে অবৈধ বোমা মেশিন। বোমা মেশিন  কিংবা  ফেলুডার সাধারণ লোকজনের কাছে যন্ত্র দানব নামে পরিচিত। বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভের পাথর। ধ্বংশ হচ্ছে জাফলংয়ের পরিবেশ মরতে বসছে পিয়াইন নদী। বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের ফলে কতিপয় অর্থলোভী লাভবান হলেও মারাত্বক হুমকির মুখে নদীর তীরবর্তী, কান্দুবস্তী, নয়াবস্তী, জাফলং চা-বাগান, লাখেরপাড়, লন্ডনী বাজার, বল্লাপুঞ্জি, নকশিয়া পুঞ্জি, নয়াগাঙ্গের পাড়, রাধানগর, পোড়াবাড়ী, ছৈলাখেল, আসামপাড়া, বাউরভাগ এলাকার বাসিন্দারা।

    সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় পিয়াই নদীর বুকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ১০/১২ সিলিন্ডার শতাধিক বোমা মেশিন একাধিক স্থানে বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে নদীর গভীর তলদেশ হতে পাথর উত্তোলন করছে। অপরিকল্পীত ভাবে পাথর উত্তোলনে নদীর তীর ভাঙ্গন দেখা  দিয়েছে ব্যাপক ভাবে। বিলিন হতে যাচ্ছে চা-বাগান, বসতবাড়ী, ফসলী জমি। বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন ও অবৈধ বাশকল এবং তদসংলগ্ন নদীর বুকে বেইলি ব্রীজ স্থাপন করে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী  সংঙ্গবদ্ধ চক্র। ফলে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে মাটি চাপায় ৫শ্রমিক নিহতের ঘটনায় পাথর উত্তোলন কিছু দিন বন্ধ থাকে। ফের পাথর উত্তোলন শুরু হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠে, এসব অর্থলোভীদের খুটির জোর হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল ও সহকারী কমিশনার(ভুমি) সুমন চন্দ্র দাস।

    ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় এলাকার লোকজন জানান, শীর্ষ চাঁদাবাজ চক্রের সাথে জড়িত উপজেলা প্রশাসন। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসনের নিরব ভুমিকায় ইজারাদার ছাড়া ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতি দিন শত শত মালবাহী ট্রাক হতে রয়েলট্রির নামে উত্তোলন হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আর রাজস্ব থেকে বি ত হচ্ছে সরকার।

    বিনিময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভুমি দু’জনেই অবৈধ টাকার আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হচ্ছেন। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল যোগদানের পর জাফলং পাথর কোয়ারীতে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনের মাটি চাপায় অসংখ্য শ্রমিক নিহত ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার হয়েছে। সচেতন মহলের প্রশ্ন জাফলংয়ের অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনের সময় অসংখ্য লোক নিহত হল অনেকে পঙ্গুত্ব হলো কিন্তু প্রশাসন কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়্যাতে।

    অবৈধ বাশকল, বেইলী ব্রীজ বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন ও সরকারি রাজস্ব ফাকির দায় এড়াতে চলছে উপর মহলে নানা তদবির। নিজকে স্বচ্ছ রাখতে মাঝে মধ্যে করছেন লোক দেখানো ট্র্রাস্কফোর্স  অভিযান করেন। তিনি গোয়াইনঘা যোগদানের ৭/৮মাসের মধ্যে অবৈধ বোমা মেশিন, ফেলুডার মেশিন বাঁশকল বেইলী ব্রীজ’র রাজস্ব ফাঁকির উত্তোলনকৃত টাকা গ্রহন করে কুটি কুটি টাকার মালিক হয়েছেন।

    সচেতন মহলের ধারনা ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল ও সহকারী কমিশনরা(ভুমি) সুমন চন্দ্র দাস’র যাবতীয় সম্পদ, ব্যাংক একাউন্ট স্থাবর-অস্থবর সম্পদের হিসাব অনুসন্ধান করলে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ অর্থ উপাজনের রহস্য বেরিয়ে আসবে। ইউএনও’র নিরভ ভুমিকায় অর্থলোভীরা এখন হাত দিয়েছে কান্দুবস্তী এলাকায়, জাফলং চা-বাগান সংলগ্ন নদীরপাড় ও পাশ্ববর্তী কৃষি জমি ও খাসিয়াদের পান সুপারীর বাগানে দিকে। পিয়াইন নদীতে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের উপর নিষেদাজ্ঞা জারি করে আদালত। কিন্তু থেমে নেই অতি-উৎসাহী পাথর উত্তোলনকারীরা।

    এবিষয়ে জাফলং চা-বাগানের ম্যানোজার ইকরামুল কবির বলেন- জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এমনকি সর্বশেষ ভুমি মন্ত্রনালয়ের ভুমিমন্ত্রী বরাবর অর্থলোভী পাথর খেকুদের নামে অভিযোগদেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন ভাবেই অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না। ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সরকারের রাজস্ব ফাঁকি পাথর উত্তোলন ও নদী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।  তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) সহযোগিতায় নদীরপাড় কেটে পাথর উত্তোলন   করে   আসছে।

    চলিত বছরের ১০ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে জাফলংয়ের লন্ডনীবাজার এলাকায় অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে বাবুলখাঁ(২৬) নামের ১পাথর শ্রমিক নিহত হয়। পরবর্তীতে পাথর কোয়ারীতে অভিযান পরিচালনা করে ওই দিন বিকাল পর্যন্ত কয়েকটি বোমা মেশিনবন্ধ থাকে। অভিযান পরিচালনায় ইউএনওকে সহায়তা করেছে চাঁদাবাজ চক্র। কারণে ঐ দিন পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট ইউএনও,র সাথে গোপন বৈঠক করে। এসময় নাম মাত্র কয়েকটি বোমা মেশিন বন্ধ করে দেওয়াটা লোক দেখানো  আইওয়াশ মাত্র।

    এব্যাপারে বিশ্বজিৎ কুমার পালের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, বোমা মেশিন বন্ধের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রতিদিন বোমা মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে পাথর উত্তোলন করে পরিবেশ ধ্বংশ করছে। উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ বাশঁকল বসিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে এটা আপনী কিভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্ন করলে তিনি তিনি বলেন, স্থানীয় ড্রাইভার সমিতির লোকজন অবৈধ বাঁশকল থেকে চাঁদা আদায় করতে পারে এটা আমি জানিনা এবং আমার কাছে কেউ কখনো অভিযোগ করেননি। ড্রাইভার সমিতি তাদের নিজস্ব ফান্ডের জন্য চাঁদা উত্তোলন করতে পারে। বেইলি ব্রীজের খেওয়া ঘাটের নামে মানুষের কাছে থেকে টাকা উত্তোলন কে বা কারা করছে আমার যানা নেই। জেলা পরিষদ হতে কোন ইজারা দেওয়া হয়নি।