ঘূর্ণিঝড় মহাসেন : বরগুনা-পটুয়াখালী ও ভোলায় ৭ জনের মৃত্যু

    0
    245

    ভোলা, ১৬ মে : বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলার উপকূলবর্তী এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের প্রভাবে আজ বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিন জনের গাছচাপায় মৃত্য হয়েছে। ভোলায় গাছচাপা পড়ে নিহত কাশেমের (৬৫) বাড়ি উপজেলার ধলিগৌর এলাকায়। মহাসেনের প্রভাবে এটিই প্রথম মৃত্যুর খবর।
    সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার আওলিয়াপুর ইউনিয়নের বলাইকাঠি গ্রামের মো. সিরাজ আকন্দ (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মো. সিরাজ আকন্দ ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাইক্লোন সেল্টার সেন্টারে যাওয়ার পথে ঝড়ের তাণ্ডবে রাস্তার পাশে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আওলিয়াপুর থানার ওসি মনিরুল ইসলাম সিরাজ আকন্দের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি ওই সময় ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারে যাওয়ার পথে ঝড়ের তাণ্ডবে রাস্তার পাশে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম শরীফ এ তথ্য জানান। এছাড়া এর আগে সকাল ১০টার দিকে গলাচিপার ৯ নং ওয়ার্ডের বনানী কলেজ রোড এলাকার মৃত জব্বার পেয়াদার স্ত্রী মোছা. রিজিয়া পারভীন(৫০) গাছ চাপা পড়ে মারা যান। গলাচিপা থানার ওসি জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
    মৃত অন্য ব্যক্তিরা হলেন বরগুনার বেতাগী উপজেলার রানীপুরের সৈয়দ আলী (৭৫), একই উপজেলার বকুলতলি গ্রামে আবির (৬) ও পালতলি উপজেলার ছোট আম ভোলা গ্রামের চাঁন মিয়া (৭০)। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। প্রথম জনের মৃত্যু হয় গাছ চাপায়। বাকিরা কীভাবে মারা গেছে জানা যায়নি।
    এদিকে আজ সকাল ৬টা থেকে আবহাওয়া ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলায় আঘাতের পর মহাসেন এগিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের দিকে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির কর্মসূচি উপ-পরিচালক মো. হাফিজুদ্দিন আহমেদ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিমি বেগে কক্সবাজারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
    এদিকে, মহাসেনের প্রভাবে ভোলার ওপর দিকে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে জেলার তুলাতলী এলাকায় বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও গাছপালা উপছে গেছে। এছাড়া চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নে ১০/১২টি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সালাম হাওলাদার। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন/চার ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। আতঙ্কে সেখানকার মানুষ সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। ভোলার জেলা প্রশাসক খোন্দাকার মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মহাসেন মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
    মহাসেনের প্রভাবে ভোলা সদরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে ভারি বৃষ্টিসহ ঝড় ও দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে জেলার তুলাতলী এলাকায় বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও গাছপালা উপড়ে গেছে। এছাড়া চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নে ১০/১২টি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সালাম হাওলাদার। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন/চার ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। আতঙ্কে সেখানকার মানুষ সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম জানান, এ উপজেলায় বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঝড় বয়ে যায়। এ উপজেলার কুকরি-মুকরি, ঢালচরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এসময় ঘর ও গাছ চাপায় ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।