কলকাতায় মার্কিন দূতাবাস-কর্তাদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা বন্ধ

    0
    221

    আমারসিলেট24ডটকম,২০ডিসেম্বরঃ ভারতের দিল্লির পর এবার কলকাতায়ও মার্কিন দূতাবাস-কর্তাদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানা যায়। দেবযানী খোবরাগাড়েকে নিয়ে দিনভর বিভিন্ন নাটকের মধ্যে এভাবে ঢুকে পড়ল কলকাতা।মার্কিন দূতাবাস-কর্তাদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে গেলেও  ভারত সরকার একটি বিষয়ে সতর্ক। চাপ বাড়াতে যতই সুযোগ-সুবিধা তুলে নেওয়া হোক, মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো রকম আপোস করবে না তারা। বস্তুত, দিল্লি একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নেয়ার পর আমেরিকার মূল চিন্তাও এই বিষয়টি নিয়েই। এদিন মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মারি হর্ফ জানিয়েছেন, তারা আশা করেন ভিয়েনা কনভেনশন মেনেই নিরাপত্তার দিকটি সুরক্ষিত রাখবে ভারত। কেন্দ্রও বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা এই ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি নেবে না বলে জানিয়েছেন।

    যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ে দিল্লি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, রাজ্যের কাছে এ দিন সেই সংক্রান্ত প্রায় সব নির্দেশই এসেছে দিল্লি থেকে। দিল্লিতে দূতাবাসের সামনের ব্যারিকেডও সরানো হয়েছে। এখানে অবশ্য তা হয়নি। নির্দেশ আসার পরে দিল্লির মতোই রাজ্য এবার দূতাবাসে চাকরিরত ভারতীয়দের স্যালারি স্লিপ, পরিচালকদের বেতন সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাইতে পারবে। তলব করতে পারবে মার্কিন কূটনীতিক, কর্মী ও পরিবারের পরিচয়পত্র। বাতিল হবে উপ-দূতাবাসের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের বিশেষ সুবিধাও। তবে কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, এখানে উপ-দূতাবাসের সামনে পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই নেই। সুতরাং সুবিধা বাতিলেরও প্রশ্ন উঠছে না।

    সেই সাথে নির্দেশিকা এসেছে কলকাতা বিমানবন্দরেও। সেখানে বলা হয়েছে, আপাতত বাতিল করতে হবে দূতাবাসের কর্তাদের বিশেষ ‘প্রোটোকল পাস’। সেখানেও পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবেন না মার্কিন উপ-দূতাবাস কর্তারা।টার্মিনালের যত্রতত্র ঘোরাফেরা করার সুবিধা তো আছেই। পাস থাকলে আরও একটি বিশেষ সুবিধা মেলে। বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, কলকাতা থেকে উড়াল ধরতে হলে মার্কিন উপ-দূতাবাসের কর্তারা আগে এই পাস নিয়ে লোক পাঠিয়ে দেন। তিনিই বোর্ডিং কার্ড সংগ্রহ থেকে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে রাখেন। কর্তা এসে পৌঁছন বিমান ছাড়ার মিনিট কুড়ি আগে। এবং এসে সোজা বিমান যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেখানে চলে যেতে পারেন।

    পাস তুলে নেওয়ার পর এবার থেকে আর পাঁচজন সাধারণ যাত্রীর মতোই বিমানবন্দরে ঠিক সময়ে পৌঁছতে হবে তাদেরকে। গাড়িও রাখতে হবে সাধারণ যাত্রীদের জায়গায়। লাইন দিয়ে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ থেকে যাবতীয় কাজ নিজেকেই সারতে হবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই পাস তুলে নেওয়ার ফলে রাষ্ট্রদূত-সহ ভিআইপিদের বসার জন্য যে সেরিমনিয়াল লাউঞ্জ রয়েছে, সেখানে ঢোকা থেকেও বঞ্চিত হতে পারেন তারা।

    তবে কূটনৈতিক শিবিরের লোকজন বলছেন, এই সিদ্ধান্তে নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগ বিশেষ নেই। এটাকে বরং দূতাবাসের কর্তাদের সম্মানহানি বলা যেতে পারে। আর হ্যাঁ, বিমানবন্দরে যাতায়াত অবাধ না হওয়ার ফলে কাজের ক্ষেত্রেও অসুবিধা হয় তাঁদের। একই সঙ্গে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দিল্লি আসলে এ ভাবেই ওয়াশিংটনের উপরে চাপ তৈরি করতে চাইছে। বোঝাতে চাইছে, ভারতের কূটনীতিকদের সঙ্গে অনুচিত ব্যবহার করা হলে এ ভাবেই পাল্টা পাটকেল দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হবে।আমেরিকায় কর্মরত ভারতীয় ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী যে ষড়যন্ত্রের শিকার। সেই নিয়ে যাতে যথাযথ তদন্ত হয়, তাই চাপে রাখতেই এই চাপ। সুত্র আনন্দ বাজার।