আজ শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি

    0
    231

    আমারসিলেট24ডটকম,২১ফেব্রুয়ারীঃ আজ ২১ ফেব্রুয়ারি রোজ শুক্রবার, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একই সাথে আজ মহান ভাষা আন্দোলনের ৬২ বছর পূর্ণ হলো। দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিটে অমর একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদাভাবে পুষ্পস্তবক অর্পন করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। এর পর কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

    রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর একে একে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশের আইজি, উপাচার্যের নেতৃত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি শিক্ষক সমিতি এবং অন্যান্য সংগঠন। রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরই নামে সাধারণ মানুষের ঢল। একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নান শ্রেণী-পেশার মানুষ। আর এ জনস্রোত চলবে আজ শুক্রবার সারা দিন।
    অমর একুশে উপলক্ষে আজ সরকারী ছুটির দিন। আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দেশের সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন।
    রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক ও অতীব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এ আন্দোলন ছিল আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং পাশাপাশি এটি ছিল আমাদের জাতিসত্তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষারও আন্দোলন। এ আন্দোলন অবিনাশী প্রেরণা হয়ে পরবর্তীকালে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে শক্তি যুগিয়েছে। ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা।
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি প্রতিটি বাঙালির শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক। ১৯৫২ সালে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণ দিয়েছিলেন রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত, শফিউদ্দিন, সালামসহ আরও অনেকে। আজকের এই দিনে আমি ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শ্রদ্ধা জানাই বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সকল ভাষা সৈনিকের প্রতি।
    শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ডাকে। এদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধুসহ অনেক ছাত্রনেতা গ্রেফতার হন। ১৫ মার্চ তাঁরা মুক্তি পান। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ মুজিবুর রহমান। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।

    উল্লেখ্য,মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ১৯৫২ সালের এই দিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দুর্বার আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন এবং একাত্তরে ৯ মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম আজকের এই বাংলাদেশ।