মৌলভীবাজারে সরকারি জায়গায় গড়ে উঠেছে পতিতালয়

    0
    1661

    এক যুগ ধরে চলছে দেহ ব্যবসা,চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হয় বাসা-বাড়িতে,ভয়ে মুখ খোলছেন না এলাকাবাসী,জানা নেই কমলগঞ্জ পুলিশ কর্মকর্তাদের!

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৬মার্চ,স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উসমাননগরে শমসেরনগর-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সরকারের ৩ একর জায়গা দখল করে এক সময়ের দুর্ধর্ষ ডাকাত সহোদর আজিদ ও বাজিদ গড়ে তুলেছেন দেহ ব্যবসার কারখানা।
    দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে এখানে চলছে এ অবৈধ কাজ। জেলা বাসীর কাছে এটা পতিতা বাড়ি হিসেবে পরিচিত। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে চলে এখানে অনৈতিক কাজ। চাহিদা অনুযায়ী পতিতাদের পাঠানো হয় বাসা-বাড়িতে। পতিতাদের গডফাদার বাজিদের ভাস্য অনুযায়ী ওই বাড়িতে ঢাকা, নেত্রকোণা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের পতিতাদের পাওয়া যায়।
    ডাকাতদের ভয়ে এলাকাবাসী এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও মুখ খোলে কিছু বলতে ও প্রতিবাদ করতে পারছে না।তাদের অভিযোগ, শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির কিছু কর্মকর্তার আশা যাওয়া রয়েছে এ বাড়িতে। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন,ওই বাড়ির মালিক আজিদকে প্রায় সময় রাতে পুলিশের গাড়িতে দেখা যায়। পতিতা বাড়িতে গেলে পুলিশ তল্লাশী করবে কিনা পরিচয় গোপন রেখে প্রতিবেদক এমনটি জানতে চাইলে আজিদের ছোট ভাই বাজিদ বলে “আমি পুলিশ, পুলিশ আবার কে ?”।তাদের ৪ বোনও ওই ব্যবসার সাথে জড়িত এবং সবাই এখানেই থাকে। আজিদ ও বাজিদের অনুপস্থিতিতে তারা ওই ব্যবসা দেখাশুনা করে।
    রমরমা ওই ব্যবসা করে দুই ভাই ইতি মধ্যে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হয়েছেন। বাড়িতে তুলছেন রঙিন দালান কোটা। একটি সূত্র জানায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই ভাইকে গ্রেফতার করা হলে দীর্ঘ ৬ বছর কারাভোগের পর গত ২ বছর আগে জামিনে বাহির হয়ে ফের এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
    সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যায় পতিতা বাড়ির গেইটে গেলে দেখা যায় ঘরের সামনে রোডের পাশে একটি দোকান রয়েছে। দোকানদার সেজে বসে থাকে দোকানে । দোকানে নাম-মাত্র বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে কিছু মালামাল। দোকানের ভিতরে একাধিক বাতি থাকলেও বাহির অন্ধকার। এসময় দেখা যায়, দোকানে বসে ৪জন মহিলা হিন্দি সিনেমা দেখছেন। বাহিরে বসে ৩জন পুরুষ বসে সিগারেট টানছে। নারীদের গডফাদার বাজিদ ভিতরের একজন মহিলাকে বলে প্রতিবেদককে এককাপ চা দিতে। সাথে সাথে সেজে গুজে একজন রমণী চা নিয়ে আসেন।এসময় বাজিদ বলে লাগবেনি। প্রতিবেদকের সম্মতি পাওয়ার সাথে সাথে ভিতর থেকে ১৩/১৪ বছরের কিশোরীকে নিয়ে আসা হয় দোকানে। কিশোরীকে দেখিয়ে বলে একে দেয়া যাবে এক হাজার টাকা লাগবে। ৩০ মিনিট অবস্থান করলে দেখা যায়,বাজিদের সাথে কথা বলে ৫জন লোক ভিতরে ডুকেছেন। আধা ঘন্টার মধ্যেও ভিতরে না ডুকায় প্রতিবেদককে সন্দেহ করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় তারা।
    পরের দিন খদ্দর শেষে বাজিতের মুঠোফোনে একাধিক নম্বর থেকে কল দিয়ে আছে কিনা জানতে চাইলে সে বলে “ঢাকা, নেত্রকোণা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সব জায়গার নারীরা আছে। যে কোনো সময় দেয়া যাবে এবং বাসাতেও পাঠানো যাবে।
    নাম না প্রকাশের স্থানীয় এক ব্যক্তি ক্ষোভে বলেছেন প্রশাসন রয়েছে নিরবে। এর পিছনে কে আছে জড়িত ? তাহলে পুলিশ কেন এইসব বন্ধ করছে না ?
    এলাকার একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, “ডাকাতদের ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারছি না। তাদের অনৈতিক কাজের কারণে যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। জেলা ব্যাপি আমাদের এলাকা পতিতার কারখানা হিসেবে পরিচিত। তারা আরো বলেন, রাতে শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির অনেক কর্মকর্তাকে এখানে দেখতে পাওয়া যায়”।
    এবিষয়ে পতিতাদের গডফাদার আজিদ এর সাথে কথা হলে সে বলে, পতিতা ব্যবসার সাথে আমি জড়িত নয়। তাহলে কে জড়িত এমন প্রশ্নের জবাবে সে কিছু বলতে পারেনি। বাড়ির জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।
    এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মুক্তাদির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।