সকল মুজিব অনুসারীকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

    1
    264

    আমারসিলেট24ডটকম,২৯মার্চঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারীদের প্রতি স্বাধীনতা, সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘সকল মুজিব অনুসারীকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যাতে কেউ আমাদের স্বাধীনতা, সংবিধান ও গণতন্ত্র বানচাল করতে না পারে’।
    প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো দেশে তৈরি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)’র যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি বাঙালি’ উদ্বোধন উপলক্ষে চাঁদপুরে সফরে গিয়ে এক জনসমাবেশে এ কথা বলেন।
    শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে প্রত্যেক ঘরে ঘরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে যাবে। তিনি আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের প্রতি সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জনগণের জন্য কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে কেবল তখনই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।
    প্রধানমন্ত্রী হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রবক্তা অশুভ শক্তি, যারা যুদ্ধাপরাধীদের কাছে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে জনগণের সমর্থন কামনা করেন।
    এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার ও আল-বদরদের বিচার অবশ্যই হবে, কেউ তা বানচাল করতে পারবে না।
    মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে, কেবল তখনই দেশের অগ্রগতি হয়।
    তিনি বলেন, ১৯৯৬ ও ২০০৯ মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জনগণের দ্বোরগড়ায় স্বাস্থ্য সেবা এবং খাদ্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
    শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচীর বর্ণনা দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে যাতে করে মানুষ জীবিকার জন্য নিজস্ব আয়ের উপর নির্ভর করতে পারে। এ প্রসঙ্গে তিনি ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্প, কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং দরিদ্র, বৃদ্ধ, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা প্রদানের কথা উল্লেখ করেন।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লাখ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই। শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না এবং আমরা সেটা হতে দেব না’।
    ঢাকা থেকে মোহনপুর জাহাজ সার্ভিস সেবা প্রবর্তন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোহনপুর থেকে ঢাকার মধ্যে এক সময় নৌ-যোগাযোগ ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সেবা বছরের পর বছর ধরে বন্ধ ছিল।
    মোহনপুর নদীর পাড়ে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষের করতালির মধ্যে তিনি বলেন, ‘সেই সার্ভিস পুনরায় চালু করার জন্য দেশে তৈরি প্রথম যাত্রীবাহী নৌ-যানে করে আমরা প্রথম মোহনপুর এসেছি’।
    শেখ হাসিনা বলেন, চাঁদপুরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে খুবই গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। তারা দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সব সময় আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
    প্রত্যেক বাড়িতে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছানোর লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দেশের নিপীড়িত জনগণের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজে করে যাচ্ছে।
    শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি এলাকার মানুষকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং এসব অঞ্চলকে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সংগে যুক্ত করেছে। তাঁর সরকার গৃহহীন মানুষদের বাসস্থানের জন্য আশ্রায়ন প্রকল্প চালু করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে চাই। লাখ লাখ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। আমাদের দেশের মানুষ আর গরীব থাকবে না। তারা সবাই স্বাস্থ্যসেবা পাবে এবং শান্তি ও সমৃদ্ধ জীবন যাপন করবে।’
    তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘ইনশাল্লাহ, বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে নিজের অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে।’
    সমাবেশে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি এবং সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, কাজী ফিরোজ রশীদ ও নজরুল ইসলাম বাবু উপস্থিত ছিলেন।বাসস