ছাতকের ১৩ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ

    0
    235

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩ডিসেম্বর: ছাতকে ছাতকের ১৩ইউনিয়নের কাবিখা, কাবিটা, টিআর, এডিবি, এলজিএসপিসহ সরকারী বিভিন্ন বরাদ্ধের টাকা ব্যাপকহারে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এসব বরাদ্ধের দায়সাড়া অডিট ও প্রকল্প কাজের সুষ্টু নজরদারি না থাকায় লুঠপাটের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা আরো উৎসাহিত হচ্ছে। সম্প্রতি কালারুকা ইউনিয়নে লিঙ্গ পরিবর্তন করে নজিরবিহীন একটি জালিয়াতির ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

    কালারুকা-পূর্বপাড়ার আব্দুন নূরের পুত্র পিয়ারা মিয়াকে পিয়ারা বেগম সাজিয়ে ও কালারুকা-পূর্বপাড়ার আবদুল মন্নানের পুত্র সফিক মিয়ার নামে দু’টি নলকুপে ১লাখ টাকা বরাদ্ধ হয়। ২০১৩-১৪অর্থ বছরে এলজিএসপির বরাদ্ধে দু’টি নলকুপের মধ্যে সফিক মিয়া সাড়ে ৫হাজার টাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল ইসলামকে দিয়ে একটি নলকুপ পেলেও পিয়ারা মিয়া এখনো নলকুপ পাননি।

    জানা গেছে, ওয়ার্ডে এলজিএসপির বরাদ্ধে খালপারের আরব আলী, নজমপুরের চান্দালী, তাজ উদ্দিন, কালারুকার আশ্রব আলী, নিজাম উদ্দিন, সফিক মিয়া ও এডিবির বরাদ্ধে শংকরপুরের আবদুল আমিন একটিসহ মোট ৭টি নলকুপ পেয়েছেন। ইউপি সদস্যকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এসব নলকুপে পেয়েছেন বলে জানান এলাকাবাসী।

    এ ছাড়া ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম এলাকার অত্যন্ত জনগুরুত্ব সম্পন্ন রাস্তায় কাজ না করে সরকারী বরাদ্ধে নিজের বাড়ির রাস্তায় প্রথমে মাঠি ভরাট ও পরে আরসিসি ঢালাইয়ে পাকা করেছেন। যদিও তার বাড়িতে একটি পরিবার ছাড়া আর কোন লোকজন বসবাস করেনা। কিন্তু বাড়ির পশ্চিমের সরকারী রাস্তা দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়ায় এটি এখন বিলীন হবার উপক্রম।

    এ রাস্তা দিয়ে এলাকাবাসী কবরস্থান ও সুরমা নদীতে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া কালারুকা জামাল মিয়ার বাড়ি হতে লামাপাড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তায় মাঠি ভরাটে দেড় লাখ টাকা বরাদ্ধের সিংহভাগই আত্মসাত করা হয়।

    অতিদরিদ্রদের জন্যে কর্মসংস্থান (ইজিপিপি) প্রকল্পের টাকা উত্তোলনে ছাতক জনতা ব্যাংকে ২৫শ্রমিকের নামে ব্যাংক একাউন্ট করেন প্রকল্প চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মেম্বার। কিন্তু এদের মধ্যে অধিকাংশই তার আপন ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও স্বচ্ছল ব্যক্তি। বাস্তবে অতিদরিদ্র ব্যক্তির কর্মসংস্থান হয়নি। জালিয়াতির মাধ্যমে ভূঁয়া সীল-স্বাক্ষরে স্বচ্ছলদের নামে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনে জড়িত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

    এছাড়া কালারুকা-তাজপুর রাস্তা হতে মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার আরসিসি ঢালাই, খালপার জামে মসজিদের মাঠ ভরাটে টিআর প্রকল্পের ৪মেঃটন গম, কর্মসংস্থান কর্মসুচির টাকা দিয়ে আবদুস সামাদের বাড়ি হতে কালারুকার খাল পর্যন্ত ২লাখ ও জামালের বাড়ি হতে লামাপাড়া মসজিদ পর্যন্ত আরো ২লাখ টাকার মাঠি ভরাট প্রকল্পে ও ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। এসব প্রকল্পে জালিয়াতির মাধ্যমে সিংহভাগ টাকাই আত্মসাত করেন তিনি।

    ইউুপ সদস্য নুরুল ইসলাম আত্মসাতের অভিযোগ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচনে পরাজিতরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নিজের ৫০/৬০হাজার টাকা দিয়ে ছোয়াব আলীর বাড়ি হতে মারফত আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় মাঠি ভরাট করেন। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে ৪৯জনের দেয়া আবেদনে নিজের বাড়ির রাস্তা পাকা করার দাবি করলেও এলাকাবাসী এর তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, জালিয়াতি ও দূর্নীতি থেকে নিজের গা-বাঁচানোর উদ্দেশ্যে কথিত আবেদনের কথা সাজানো হয়েছে।

    এসময় পিয়ারা মিয়ার নামের নলকুপটি সফিক মিয়ার বাড়িতে বসানো হয়েছে বলে দাবি করেন ইউপি সদস্য। এভাবে উপজেলার ১৩ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যাপকহারে লুটপাট হচ্ছে।

    এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।