৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারে উড়ানো হয় স্বাধীনদেশের পতাকা

    0
    201

    ১৯৭১ এর এই দিনে পাক হানাদারদের কবল থেকে  মৌলভীবাজার মুক্ত হয়

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৭ডিসেম্বর,শিমুল তরফদার,মৌলভীবাজার থেকে ফিরেঃ  বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বীরত্ব ও সাহসিকতায় এবং বহু বীরমুক্তিযোদ্ধা আর সাধারন মানুষের প্রাণের বিনিময়ে ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারকে পাক হানাদার মুক্ত করেন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী। মৌলভীবাজারকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে দশটার দিকে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালিন সংসদ সদস্য আজিজুর রহমান। পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মৌলভীবাজারকে পাক হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়। হাজার হাজার মানুষ প্রবেশ করে মুক্ত শহরে । এরপর থেকে প্রতি বছর এই দিনকে (৮ ডিসেম্বর) হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয় মৌলভীবাজারে।

    ১৯৭১ সালে মৌলভীবাজারের শেরপুর ও শমসেরনগরে সম্মূখ সমর সহ কয়েকটি স্থানে পাক বাহিনীর সাথে গেরিলা যুদ্ধ হয়েছে। মৌলভীবাজার শহরে অবস্থিত প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ছিল পাক হানাদার বাহিনীর অত্র অ লের ব্রিগেড হেড কোয়াটার। মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর টর্চার শেল হিসেবে পরিচিত বাংকারটি পিটিআইতে মাটি চাপা অবস্থায় আজো সাক্ষী হয়ে আছে। জেলার ৬টি উপজেলা মুক্ত হওয়ার পর মৌলভীবাজার সদরকে মুক্ত করার লক্ষে ৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী তিন দিক থেকে আক্রমনের জন্য শহরের দিকে অগ্রসর হয়। ৬ ডিসেম্বর বর্ষিজোড়া, সালামীটিলা, শমসেরনগর সড়কে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক যুদ্ধ হয় পাকসেনাদের। এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনী ৭ ডিসেম্বর ভোরে শেরপুর হয়ে সিলেটের দিকে পিছু হটতে থাকে।

    এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে মৌলভীবাজার। তবে হানাদার বাহিনী বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য, মাইন, গ্রেনেড, গোলাবারুদ ফেলে রেখে গিয়েছিল শহরে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এ দিন শহরে জনসাধারনকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

    ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন মহকুমা হাকিমের কার্যালয় (বর্তমান জর্জ কোর্ট ভবনে) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারকে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে।