৮০ বছর পর দারুল ক্বিরাত বন্ধের ফলে ক্বারী সমাজ বেকায়দায়

    0
    294

    “সরকারের প্রতি অসহায় ক্বারি সমাজের জন্য বিশেষ প্রণোদনা সময়ের দাবী”

    আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজারঃ পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম দিন থেকেই দেশের বিভিন্ন দারুল ক্বিরাত সেন্টারে শুরু হত দারুল ক্বিরাত। সহিহ কুরআন শিক্ষার অনবদ্য প্রতিষ্ঠান দারুল ক্বিরাতে মানুষকে তারতীল ও তাজবীদ সহকারে কুরআন শিক্ষা দেয়া হত। সুদু দেশেই নয় ,বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও আছে এই সহিহ কুরআন শিক্ষার প্রতিষ্টান দারুল ক্বিরাত।
    ১৯৪০ সালে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ফুলতলী ছাহেব বাড়ীতে দারুল ক্বিরাত প্রতিষ্টা করা হয়। পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে সর্বপ্রথম কুরআন শিক্ষার এ পদ্ধতি চালু করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযুর্গ, শরীয়ত ও তরীকতের হাদী শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)।
    বিশ্বে করোনা ভাইরাস (কভিড ১৯) ছড়িয়ে পরায় বন্ধ হয়ে গেছে সহিহ কুরআন শিক্ষার প্রতিষ্টান দারুল ক্বিরাত। শুনা যায় না মসজিদের মাইকে কুরআন এর মধুর সুর,ছোট্র সুনামনিরা আর আসেনা মসজিদে । রমজান মাস আসলেই মসজিদে মসজিদে ছিলো আনন্দের জুয়ার।এখন প্রতিটি মসজিদই তালা,আযান হলেই তালা খোলা হয় আর নামাজ শেষ হলেই তালা, এ হচ্ছে রমজান মাসের মসজিদের কার্যকম। প্রায় ৮০ বছরের দারুল ক্বিরাত এই প্রথম করোনা ভাইরাসের কারনে বন্ধ। দেশে দারুল ক্বিরাত সেন্টার আছে প্রায় ২৩শ এর উপরে,আর ভিবিন্ন দেশে আছে প্রায় ৩শ এই দারুল ক্বিরাত সেন্টারের জন্য প্রধান ক্বারী সহ প্রতি সেন্টারে সর্বনি¤œ ৬জন কোন কোন সেন্টারে ৮,১০,১২ জনও আছে,সুদু মৌলভীবাজার সদরে ক্বারী আছে ৩ হাজারের উপরে।
    রমজান মাস আসলেই দারুল ক্বিরাতের স্টোরের জন্য প্রধান ক্বারী ও সহকারি ক্বারী নিয়োগ দেয়া হত।এই ক্বারীদের মধ্যে অনেক ক্বারীরা আছে অসহায়,পুরো রমজান মাস দারুল ক্বিরাত পড়াতো। ছাহেব বাড়ি ২৯ রামাদ্বান পর্যন্ত চলেও ২৮ রামাদ্বান দারুল ক্বিরাত সেন্টার গোলু সমাপ্ত হত,তখন এলাকার অনেক বিত্তবানরা অসহায় ক্বারীদের সম্মানি দিতো সেই সম্মানি দিয়ে ঈদের বাজার করে বাড়িতে যেতে,এবার তা হচ্ছেনা ।
    মাওলানা শফিকুল ইসলাম বলেন সরকার অনেক কিছুতে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে,কিন্তু আমাদের জন্য কোন ধরনের কোন প্রণোদনা ঘোষণা করেনি। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমরা চাই যারা দিনের পথে কুরআনের খেদমত করে সরকার তাদের প্রতি সদয় দৃষ্টি দিবেন।
    ক্বারী সোসাইটির সাংগঠনি সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল ইসরাম মাসুক বলেন রমজান মাসে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছে। এই কুরআন নাজিলের মাসে আমরা কুরআন পড়াতে পারছিনা এটা আমাদের মনে খুব কষ্ট দেয়। তাছাড়া দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে দারুল ক্বিরাত পড়িয়েছি ২৮ বছরে এসে দারুল ক্বিরাত পড়াতে পারলাম না।
    লতিফিয়া ক্বারী সোসাইটির মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সভাপতি মাওঃ আব্দুস সোবহান জিহাদী বলেন অনেক অসহায় ক্বারীরা আছে যারা প্রতি রমজান মাসের আশায় দীর্ঘ একটি বছর অপেক্ষা করেন, দারুল ক্বিরাত পড়াবেন,ঈদের আগে হাসি মুখে বাড়িতে যাবেন। এবার করোনা ভাইরাসের কারনে দারুল ক্বিরাত সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের ক্বারী সোসাইটির পক্ষ থেকে ক্বারিদের আর্থিক কিছু সহযোগীতা করেছি। তবে সরকার যদি ঈদের আগে এই ক্বারীদের আর্থিক সহযোগীতা করেন তাহলে ঈদটা ভালো ভাবে করতে পারবে।
    শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী (রহ.) উনার বিশুদ্ধ কুরআনের সূরের মূর্ছনায় গোটা সমাজব্যবস্থাকে আলোড়িত করতে পেরেছিলেন।এই অনন্য খেদমতের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলেই গোটা সমাজব্যবস্থা আল-কুরআনের আলোয় আলেকিত হয়ে উঠবে এমটাই মনে করছেন আলেমগন।