৫মহররম ইয়াজিদ বাহিনীর প্রতিরক্ষা-ব্যুহে ভাঙ্গন ধরিয়ে ইমাম শিবিরে যোগ দেন ‘আমের’

0
647
৫মহররম ইয়াজিদ বাহিনীর প্রতিরক্ষা-ব্যুহে ভাঙ্গন ধরিয়ে ইমাম শিবিরে যোগ দেন 'আমের'

আজ থেকে ১৩৮২ বছর আগে ৬১ হিজরির ৫ মহররম মাসে বসরা ও কুফায় নিযুক্ত ইয়াজিদের গভর্নর ইবনে জিয়াদের নির্দেশে হাসিইন বিন নুমাইর চার হাজার (মতান্তরে ৩৮০০) অশ্বারোহী সেনা নিয়ে কারবালায় আসে হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) এবং তাঁর সঙ্গীদের ক্ষুদ্র দলটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে।
একই দিনে জিয়াদ শাবাশ বিন রবি নামের এক ব্যক্তিকে এক হাজার সেনাসহ কারবালায় পাঠায়।
এ ছাড়াও সে ‘জাহর বিন কাইস’ নামের এক ব্যক্তিকে ৫০০ সেনাসহ কারবালা ময়দান-সংলগ্ন ফোরাত নদীর শাখার একটি সেতুর ওপর এ দায়িত্বে নিয়োজিত করে যে, কেউ যদি ইমাম হুসাইন (রাঃ)’র পক্ষে যুদ্ধ করতে কারবালায় প্রবেশ করে তাকে সে হত্যা করবে। কিন্তু ‘সা’দা’ নামের ওই সেতুর ওপর প্রহরা সত্ত্বেও ইমামের অনুরাগী ঘোড়-সওয়ার আমের বিন আবি সালামাহ ৫ মহররম নিজের ঘোড়া নিয়ে একাই জাহরের বাহিনীর ওপর বীর-বিক্রমে হামলা চালান এবং ইয়াজিদ বাহিনীর প্রতিরক্ষা-ব্যুহে ভাঙ্গন ধরিয়ে ইমাম-শিবিরে যোগ দিতে সক্ষম হন। এই মহান বীর আশুরার দিনে শাহাদত বরণ করেন।
আগের দিন ৪ মহররম, উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ কুফার মসজিদে তার বক্তব্যে বলেঃ হে কুফাবাসী! তোমরা আবু সুফিয়ানের বংশধরদেরকে চিনতে পেরেছ, তারা যা চায় তা-ই করতে পারে!! এজিদকে চিনতে পেরেছ সে চাইলে তোমাদেরকে ক্ষমাও করতে পারে! সে আমাকে নির্দেশ দিয়েছে আমি তোমাদেরকে অর্থ দান করি যেন তোমরা হুসাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাও।
এ অবস্থায় ইয়াজিদ বাহিনীর পক্ষে শিমার চার হাজার প্রশিক্ষণ-প্রাপ্ত সৈন্য বাহিনী নিয়ে, ইয়াযিদ বিন রেকাব দুই হাজার সৈন্য নিয়ে, হাসিইন বিন নুমাইর চার হাজার সৈন্য নিয়ে ও মাযায়ের বিন রাহিয়ে চার হাজার সৈন্য নিয়ে এবং নাসর বিন হারসা দুই হাজার সৈন্য নিয়ে কারবালার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এভাবে ৫ মহররম কুফা শহরে বিভিন্ন স্থান থেকে ওমর বিন সাআদের সেনাদলে যোগ দেয়ার জন্য লোকেরা জমা হতে থাকে।
কারবালায় ইমাম হুসাইন (রাঃ)’র সঙ্গে নিজ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনসহ যারা শেষ পর্যন্ত ছিলেন ও ইয়াজিদি বাহিনীর বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তাদের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০ জন। তাঁদের মধ্যে ৭২ জন শাহাদত বরণ করেছিলেন আশুরার দিন তথা দশই মহররম এবং সব শেষে একই দিনে ইমাম হুসাইন (রাঃ)ও শাহাদত বরণ করেন। তাঁদের সবার ওপর অশেষ সালাম ও দরুদ বর্ষিত হোক।
উল্লেখ্য জাহেলি যুগেও আরব মুশরিক ও কাফিররা মহররম মাসে (সাধারণত) যুদ্ধ-বিগ্রহ করত না। কিন্তু উমাইয়া শাসনামলে মুসলমান নামধারী শাসকরা এতটাই হীন ও নীচ হয়ে পড়েছিল যে তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামার নাতি ও তাঁর পরিবারকে পবিত্র মহররম মাসেই নৃশংসভাবে শহীদ করতে কুণ্ঠিত হয়নি। সূত্র-পার্সটুডে