৩০ ডিসেম্বর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ হতে পারে!

    0
    232

    আমারসিলেটটোয়েন্টিফোর.কম ০৪ সেপ্টেম্বর  : আগামী ৩০ ডিসেম্বর সোমবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হতে পারে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ নিয়ে সারাদেশে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে মঙ্গলবার দিনভর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নির্বাচনের তারিখসহ সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন। সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী, মো. আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ এবং কমিশন সচিবালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকসহ কমিশন সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
    বৈঠকে অংশগ্রহনকারী নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র আভাস দিয়েছে যে, আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে নির্বাচন হতে পারে। অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে যে দু’তিনটি কার্যদিবসে নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য বেছে নেয়া হতে পারে সেগুলোর মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর তারিখটিই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে। ফলে নির্বাচন কমিশন এ দিনটিকেই ভোট গ্রহণে জন্য বেছে নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনার পরই তারিখ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
    তবে আগামী ডিসেম্বর মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান হলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে কি না জানতে চাইলে বৈঠকের পর সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে জন্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয়ে অবশ্যই ছাড় দিতে হবে। ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার আইনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের ৪৫ থেকে ৫০ দিন আগে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়ে থাকে। তাই এবারও নির্দিষ্ট সময় হাতে রেখেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
    বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন পুরোপুরি প্রস্তুত। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হয়। তিনি আরো বলেন, সে অনুযায়ী আমরা গতবছরের মার্চ মাস থেকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম।
    কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষিত সময়সীমার প্রেক্ষিতে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কমিশনের সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এ প্রস্তুতি আরো ভালো হয় সে বিষয়েও আলোচনা করেছি।
    নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ইতোমধ্যে আমরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ করেছি। নির্বাচনের জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, অমোচনীয় কালিসহ প্রয়োজনীয জিনিসপত্রাদিও কেনাকাটার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রায় ৬ লাখের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে থাকে। তাদের প্রশিক্ষণের কাজও প্রায় শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন।
    রকিবউদ্দীন বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ম্যানুয়েল ছাপানো হচ্ছে এবং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণদানের জন্য প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কমিশনকে আকস্মিকভাবেও যে কোনো নির্বাচন পরিচালনার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয়।
    জাতীয় নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ওয়েব ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে কি-না জানতে চাইলে সিইসি কাজী রকিব বলেন, আমরা নির্বাচনকে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য ভোট কেন্দ্রগুলোতে ওয়েব ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য দাতা সংস্থাগুলোর সাথে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, কমিশন ইচ্ছা করলেই ওয়েবক্যাম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কেন না, কমিশনের হাতে ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। সে জন্য দাতা সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় সহায়তা করলে অবশ্যই ভোট কেন্দ্রগুলোতে ওয়েবক্যাম ব্যবহার করবো।
    প্রসঙ্গত গত ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছি এবং ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রথম অধিবেশন বসেছিল। সে অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সাথে বৈঠকের পর আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন।