২-১ গোলে বেলজিয়াম সেমিফাইনালে ব্রাজিল আউট

    0
    368

    ডেস্ক নিউজঃ  গ্রুপ পর্ব থেকে পেরু, দ্বিতীয় পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা ও কলোম্বিয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত টিকে ছিল প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে ও সর্বাধিক ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। শুক্রবার (৬ জুলাই) প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে উরুগুয়ে বিদায় নেয়ার পর লাতিন আমেরিকার শেষ পতাকাটা ছিল ব্রাজিলের হাতে।

    বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্ত হাতে থাকা লাতিন আমেরিকার পতাকাটাও নেমে গেল। নামিয়ে দিলো ইউরোপের দল বেলজিয়াম। দুই আসর পর আবার লাতিন ছাড়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল।

    রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ব্রাজিলকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে পা রাখল বেলজিয়াম। রাতে কাজান অ্যারেনায় ঝরে পড়ল আরেক চ্যাম্পিয়ন। এদিন ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই একটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল বেলজিয়াম। কেভিন ডি ব্রুইনের দূর থেকে নেওয়া শট চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।

    ৭ মিনিটে প্রথম গোলটা পেয়েই গিয়েছিল ব্রাজিল। কর্নার থেকে থিয়াগো সিলভা দুই গজ দূর থেকেও পারেননি জালে জড়াতে। বল ফিরে এসেছে বারে লেগে। পরে সেটি ধরে ফেলেছেন বেলজিয়াম গোলরক্ষক কোর্তোয়া। ১০ মিনিটে আবার সুযোগ পাওলিনহোর, এবারও কর্নার থেকে। কিন্তু বলে ঠিকমতো পা লাগাতেই পারেননি।

    হলুদ কার্ডের কারণে কাসেমিরো খেলতে পারবেন না , জানা ছিল আগেই। ব্রাজিলের একাদশে একটা পরিবর্তন প্রত্যাশিতই ছিল। সেটিই হয়েছে। কাসেমিরোর জায়গায় এসেছেন ম্যান সিটি মিডফিল্ডার ফার্নান্দিনহো।

    ১৪ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। ফেলাইনির শট মিরান্ডার পায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে কর্নার পায় বেলজিয়াম। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই জালে ঢুকিয়ে দেন ফার্নান্দিনহো। বিশ্বকাপে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আত্মঘাতী গোল হজম করল ব্রাজিল। ২০১৪ সালে মার্সেলো করেছিলেন প্রথমটি।

    তার পরেই জটলা থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলটা আর আসেনি। ২৫ মিনিটে মার্সেলোর দূর থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন কোর্তোয়া।

    ২৫ মিনিটে আবারও এগিয়ে বেলজিয়াম। এবার প্রতি আক্রমণ থেকে লুকাকু কয়েকজনকে কাটিয়ে বল দিয়েছিলেন ডি ব্রুইনকে। বস্কের বাইরে থেকে নেওয়া তাঁর দুর্দান্ত শট ঠেকাতে পারেননি এলিসন। আবারও এগিয়ে যায় বেলজিয়াম।

    ৩৬ ও ৩৭ মিনিটে পর দুইটি দারুণ সেভ করেছেন কোর্তোয়া। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলে পিছিয়েই আছে ব্রাজিল। বিশ্বকাপে দুই গোল পিছিয়ে থাকার পর ব্রাজিল একবারই জিতেছে, সেই ১৯৩৮ বিশ্বকাপে সুইডেনের বিপক্ষে।

    বেলজিয়ামের একাদশে এসেছে দুইটি পরিবর্তন। আগের ম্যাচে বদলি নেমে গোল করা মারুয়ানে ফেলাইনি ও নাসের শাদলি এসেছেন দলে। জায়গা হারিয়েছেন ইয়ানিক কারাসকো ও ড্রেস মেরটেনস।

    ৫১ মিনিটে মার্সেলোর ক্রস থেকে একটুর জন্য বল পায়ে লাগাতে পারেননি বদলি নামা ফিরমিনো।

    ৫৮ মিনিটে আসে ম্যাচের সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূরত। বক্সের ভেতর কোম্পানি গ্যাব্রিয়েল হেসুসকে ফাউল করেছেন বলে মনে হলেও পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। মিনিটখানেক পর হ্যাজার্ডের একটুর জন্য চলে গেছে পোস্ট ঘেঁষে।

    ৭৬ মিনিটে শেষ পর্যন্ত ব্যবধান কমাল ব্রাজিল। কুতিনিয়োর লব থেকে দারুণ এক দৌড়ের পর হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন বদলি রেনাতো আগুস্তো। কয়েক মিনিট পর আবার সুযোগ পেয়েছিলেন আগুস্তো, কিন্তু এবার তাঁর শট একটুর জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৮৪ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন কুতিনিয়ো, কিন্তু নেইমারের পাস থেকে শটটা রাখতে পারেননি পোস্টে।

    অবশেষে ব্রাজিলকে হারিয়ে ৩২ বছর পর আবারও বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে উঠেছে বেলজিয়াম। ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপে তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার কাছে ২-০ গোলে হেরে। এবার তাদের ফাইনালে ওঠার বাধা রাতের প্রথম ম্যাচে জয়ী দল ফ্রান্স।