হেফাজত নেতার বিরুদ্ধে কথিত স্ত্রীর মামলা
হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় মামলাটি করেন জান্নাত আরা ঝর্না । সোনারগাঁ থানা পুলিশ
সূত্র জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিয়ের প্রলোভন
দেখিয়ে বিয়ে না করা এবং আটক রেখে ধর্ষণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার নম্বর ৩০।নারী ও শিশু নির্যাতন
দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিয়ে ও অন্যান্য প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার মামুনুল তার (জান্নাত আরা ঝর্ণার) সঙ্গে
শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, মামুনুল হক দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করলেও মামলায় জান্নাত নিজেকে
মামুনুল হকের স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করেননি। তিনি (মামলার বাদিনী) বলেন, “বিয়ের প্রলোভন ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক আমার সঙ্গে সম্পর্ক করেছেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে
ও মামুনুল করছি, করব বলে সময়ক্ষেপণ করে শারীরিক ভাবে বিভিন্ন
সময়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে সম্ভোগ করতে থাকেন । ২০১৮ সাল থেকে ঘোরাঘুরির কথা বলে মামুনুল
বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে আমাকে নিয়ে যান।এসময় তাকে তার বাবা-মার
সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। প্রথম স্বামী শহীদুলের সঙ্গে সংসার ভাঙার মাস্টারমাইন্ডও ছিল
মামুনুল।’
অভিযোগে জান্নাত বলেন, “বিচ্ছেদের পর তিনি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েন। এ সময় মামুনুল আমাকে খুলনা থেকে ঢাকায় আসার
জন্য বলেন। আমি ঢাকায় চলে আসি। মামুনুল আমাকে একেক সময়ে তার একেক অনুসারীদের বাসায় রাখেন। সেখানে নানাভাবে আমাকে
প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তার প্রলোভনে পা দিই। এরপর তিনি উত্তর ধানমন্ডির
নর্থ সার্কুলার রোডের একটি বাসায় আমাকে সাবলেট রাখেন। একটি বিউটি পার্লারে কাজের ব্যবস্থা ও করে
দেন। ঢাকায় থাকার খরচ মামুনুলই
দিচ্ছিলেন।“
জান্নাত আরা ঝর্ণা অভিযোগে বলেন, ‘৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে
ঘোরাঘুরির কথা বলে মামুনুল হক নিয়ে যান। সেখানে
অবস্থানকালে কিছু মানুষ আমাদের আটক করে ফেলে। পরে মামুনুল হকের অনুসারীরা রিসোর্টে হামলা করে আমাদের নিয়ে
যায়। কিন্তু মামুনুল আমাকে নিজের বাসায় ফিরতে
না দিয়ে পরিচিত একজনের বাসায় অবৈধভাবে আটকে রাখেন। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেননি। পরে কৌশল করে আমার বড় ছেলের সাথে যোগাযোগ করে পুলিশের
সহযোগিতায় মুক্তি হলে পুলিশ আমাকে আমার বাবার জিম্মায় যাওয়ার সুযোগ করে দেন।
উল্লেখ্য,
গত
৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ স্থানীয়দের হাতে আটক হন মামুনুল।পরে তার সমর্থকদের হামলার এক পর্যায়ে
পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।