হেফাজত তাণ্ডব ঠেকাতে আওয়ামী লীগও ব্যর্থ ছিল

0
1430

নূরুজ্জামান ফারুকী, বিশেেষ প্রতিনিধি: হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব ঠেকাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগও ব্যর্থ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কার্যকরী কমিটির ‘বহিষ্কৃত সদস্য’ মাহমুদুল হক ভূঁইয়া। শুক্রবার দুপুর ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের কর্মী হিসেবে নিজেও ব্যর্থতার দায় নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিগত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করায় মাহমুদুল হক ভূঁইয়াকে জেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে দল থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। যদিও মাহমুদুল হক ভূঁইয়া বহিষ্কারের কোনো চিঠি পাননি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।

গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় মাহমুদুল হক ভূঁইয়া ও তার সমর্থকরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা ঢাকার কৌশল উল্লেখ করে মাহমুদুল হক ভূঁইয়া বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে কিন্তু তাণ্ডব ঠেকাতে জেলা আওয়ামী লীগ ব্যর্থ ছিল। সেই ব্যর্থতার দায় এড়াতেই বিগত পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। শুধু আমি কেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কেউ এরকম কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে- সেটি আমি বিশ্বাস করতে পারি না।

ঘটনার সূত্রপাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নেতৃত্বে মিছিল হয়েছিল। সেই মিছিলের পেছন থেকে যারা উস্কানি দিয়েছিল মাদ্রাসা ছাত্রদের; ভিডিও ফুটেজগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করলে দেখবেন- তারা আওয়ামী লীগ নামধারী ছদ্মবেশী এবং অনুপ্রবেশকারী, তারা কেউই বঙ্গবন্ধুর সৈনিক না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সুবাদে বিভিন্ন সুযোগ নেওয়ার জন্য তারা আওয়ামী লীগের লেবাস ধারণ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। তারাই এ ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা বলে আমি মনে করি।

তিনি আরও বলেন, কান্দিপাড়া এবং শিমরাইলকান্দি বিএনপি-ছাত্রদল অধ্যুষিত এলাকা। বড় মাদ্রাসাটাও ওই এলাকায়। ঘটনার দিন আমার বাসার গেটের ভেতর থেকে যা দেখার সুযোগ হয়েছে, আমার কাছে মনে হয়েছে হুজুরদের সঙ্গে কান্দিপাড়া-শিমরাইলকান্দির বহুসংখ্যক ছাত্রদলের উচ্ছৃঙ্খল যুবক ঘটনায় জড়িত। আমি নাম বলতে পারব না, কিন্তু ভিডিও ফুটেজ দেখলে তাদের চিহ্নিত করা যাবে।

তিনি বলেন, যারা সহিংসতা চালিয়েছে, তারা দেশের শত্রু ইসলামের শত্রু। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারকীয় ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের সহিংসতা চলতেই থাকবে। ঘটনার সঙ্গে আমাকে এবং আমার সমর্থকদের জড়িয়ে এমপি যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন, তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষক লীগ নেতা ফরিদ উদ্দিন দুলাল, আতাউর রহমান, সারোয়ার আলম, ফরিদ আহাম্মদ, নাজমুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।