হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ঔষধ কোম্পানির দৌরাত্ব

    0
    297

    ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ৯.১৫ মিনিট সময়ে ইউনি – কেয়ার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়ার জন্য কয়েকজন রোগী দাড়িয়ে আছে এবং রোগী ডাক্তার দেখিয়ে গেইট থেকে বের হতেই ঔষধ কোম্পানির লোকজন ওই রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি শুরু করে। ওই ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সামনে একশতটির ও বেশি ঔষধ কোম্পানির লোকজন কমপক্ষে  ৪০/৫০টি মোটরসাইকেল দাড় করিয়ে রাখেন। ফলে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগীরা সাধারণ ভাবে প্রবেশ করতে পারেন না। লাইনের পর লাইন ঔষধ কোম্পানির মোটরসাইকেল।

    এছাড়াও চুনারুঘাটে সবকটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে এরকম অবস্থা দেখা গেছে। ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০ টায় চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকিট কাউন্টারের সামনে কয়েকজন নারী- পুরুষ লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু কাউন্টারে টিকিট দেওয়ার মত কোন লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘড়ির কাটায় যখন ১০:৩০ মিনিট হাসপাতালের বেশীর ভাগ কক্ষের দরজা জানালা খোলা থাকলেও বেশীর ভাগ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। ঘড়ির কাটায় সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আস্তে আস্তে ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা আসতে থাকেন। তবে হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষমান রোগীর চেয়ে কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু ঔষধ কোম্পানির আন্তরিকতার কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

    এদিকে উপজেলার প্রায় ঔষধের ফার্মেসি গুলোতে নকল, ভেজাল ও নিম্ন মানের ঔষধে সয়লাবের অভিযোগ পাওয়া গেছে ।  নিত্যদিনের সঙ্গী হয়রানি, বিড়ম্বনা ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এরপর দুপুর পর্যন্ত হাসাপাতালে অবস্থান করে রোগী ও অন্যান্য লোকদের সঙ্গে আলাপ কালে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন কৃষ্ণপুর গ্রামের জামাল মিয়া।

    তিনি বলেন, এই হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে হয়রানি করা হয়। শুধু কম দামের কিছু ওষুধ দিলেও ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয়। তিনি বলেন বেশীর ভাগ ওষুধই বাহির থেকে ক্রয় করতে হয়। ঘনশ্যামপুর গ্রামের সাজেদা আক্তার নামে এক মহিলা বলেন, আমার ছেলে কে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার দেখানোর পর হাসপাতাল থেকে ওষুধ না দিয়ে একটি স্লিপ আমার হাতে ধরিয়ে দেয়। পরে বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে টাকা দিয়ে ওষুধ ক্রয় করতে হয়েছে।

    তাছাড়া ও হাসপাতালের চারদিকে ময়লা, আবর্জনা ও স্যাতসেতে পরিবেশ। মশা-মাছি ভনভন করছে চারদিকে। পরিবেশের কারণে রোগীরা এখানে ভর্তি হতে চায় না। এখানকার ডাক্তাররা সব সময় তাদের কক্ষে বসে খোশ গল্পে ব্যস্ত থাকেন। জরুরি রোগী থাকলেও তারা দ্রুত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। সেজন্য সরকারি হাসপাতালে রোগী না এসে পাশ্ববর্তী ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগীরা ভিড় জমায়।

    এহন অবস্থায় চিকিৎসা সেবার মান অনেকটাই কমে গেছে এ হাসপাতালে। তাই চুনারুঘাট হাসপাতাল থেকে ঔষধ কোম্পানির লোকজনদের কে সরিয়ে উন্নত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার দাবি জানান জনসাধারণ।