হাওরে শিশু শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে:শিক্ষকের ক্ষোভ

    0
    258

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১সেপ্টেম্বর,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ   সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের হাওরপাড়ের গড়ে উঠা শত শত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টিনে শিক্ষার্থীদেও শিক্ষা জীবন হুমকি মুখে পড়েছে।  ঐসব শিক্ষা প্রতিষ্টানের লেখা-পড়া করছে হাওর পাড়ের দরিদ্র পরিবারের হাজার হাজার শিশু শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোর সাথে নেই হাওরপাড়ের দ্বীপ সাদৃশ্য গ্রাম গুলোর সাথে সড়ক পথের কোন ব্যবস্থা।

    তাই বছরের বর্ষার ৬মাস শিক্ষার্থীরা জীবনের যুকিঁ নিয়ে স্কুলে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে মেঘ,বৃষ্টি ও হাওরের বড় বড় ঢেউ উপেক্ষা করে যাতাযাত করছে প্রতিদিন। আর বাকী ৬মাস কাদাঁ যুক্ত মাঠ,ঘাট,ফসলী জমিনের অইল দিয়ে কোন রখম পায়ে হেটেঁ। বর্ষার সময়ের কথা ভেবে তার স্কুলের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধবতন কর্মকর্তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য লিখিত ভাবে বারবার একটি নৌকা কিনে দেবার দাবী জানানোর পরও কোন কাজ হচ্ছে না। তা ছাড়াও তার আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেননি সমাজের বিত্তবানরাও। তাই শিক্ষক হাদিউজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

    জানা যায়,জেলার টাংগুয়ার হাওর পাড়ের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের হাওরপাড়ে ছিলাইন তাহিরপুর গ্রামে স্থাপিত জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলে ৪টি গ্রামের ২৯০জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বর্ষার সময় হাওরপাড়ের এই শিক্ষা প্রতিষ্টানের চারপাশে পানিতে থৈ থৈ করে। আর শিক্ষার্থীদের হাওর পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করার জন্য সরকারী ভাবে নৌকা বা অন্য কোন যোগাযোগ মাধ্যম নেই। ঐসব শিক্ষার্থীদের মা,বাবার ও সামথ্য নেই নৌকা কিনে দেওয়ার। তার পরও অনেক মা,বাবা নিজেদের সন্তানদের শিক্ষা জীবনের কথা চিন্তা করে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে শিক্ষিত করার জন্য ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা কিনে দেয়। আর শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বইঠা হাতে নিয়ে নৌকা বেড়ে স্কুলে আসা যাওয়া করে।

    আর যাদের অভিবাবকরা নৌকা কিনতে পারেন না তারা স্কুলে যেতেও পারে না। তাই হাওর পাড়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকে কম। তাই বার বার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষক হাদিউজ্জামান তার বিদ্যালয়ের জন্য একটি বড় নৌকার দাবী লিখিত ভাবে জানিয়ে আসলেও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা,শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের সহ কারো কাছে এর সুফল পাচ্ছে না। তাই জেলার তাহিরপুর উপজেলার জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাদিউজ্জামান ক্ষোব প্রকাশও করে জানান,আমার স্কুলে ২৯০জন শিক্ষার্থী আছে।

    হাওর পাড়ের ৪টি গ্রামের সকল ছাত্র-ছাত্রীরা বর্ষায় জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে সকল প্রতিকুলতা পায়ের ঠেলে স্কুলে আসছে প্রতিদিন। নৌকার কারনে অনেকেই স্কুলে আসে না। একটি ভাল ও বড় নৌকা হলে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা ও হাওর পাড়ের শিক্ষার্থীদের মা,বাবা তাদের স্কুলে পাঠানো সন্তানদের নিয়ে সারাক্ষন উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় থাকতে হবে না। কিছুটা হলেও মনে সান্তনা ও সাহস থাকবে। তার জন্য আমি একটি নৌকার জন্য বার বার দাবী জানিয়েও উধর্বতন কর্মকর্তাদের কাছে কোন সুফল পাচ্ছি না।

    কিন্তু বর্ষায় সময়ে শত শত শিক্ষার্থীর মা,বাবার মত সারাক্ষন আতংকের মধ্যে থাকি কখন জানি দূর্ঘটনার শিকার হয় আমার শিশু শিক্ষার্থীরা।  জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হালিম ও শিক্ষার্থীদের মা,বাবাগন জানান,ভরা বর্ষায় জীবনের যুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে হাওরের সাথে জীবন সংগ্রাম করেই স্কুলে এসে শিক্ষা গ্রহন করছে হাওর পাড়ের আমাদের সাহসী সন্তানরা। বর্ষায় সময় একটি বড় ও ভাল নৌকার খুবেই প্রয়োজন। তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম জাহান রাব্বি জানান,জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একটি বড় নৌকার হলে ভাল হয় শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুলে যোগাযোগের স্বার্থে।

    একটি নৌকার কেনার জন্য আবেদন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবার দেওয়া হয়েছে জানি। এই বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয় ও অবগত আছে। আমরা চেষ্টায় আছি সর্বাতœ সহযোগীতা করার জন্য। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ফেরদৌস আলম আখঞ্জী জানান,হাওরপাড়ের প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট নৌকা দিয়ে জীবনের যুকিঁ নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করে। তাদের জন্য বড় নৌকা হলে ভাল হয়।

    জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সব বিদ্যালয়ের জন্য আমরা স্বার্ধ মত চেষ্টা করব। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান,আমাদের এখন কোন ফান্ড নেই। তারপরও এ বিষয়ে ঐ স্কুলের শিক্ষক যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।