হাওরাঞ্চলে বাশঁ,কাগজ দিয়ে তৈরী শহীদ মিনারে পুষ্পস্থবক

    0
    348

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩ফেব্রুয়ারি,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ    সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বিদ্যালয় গুলোতে নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। তার পরও ভাষা শহীদদের সম্মান জানাতে ভুলে যায় নি হাওরপাড়ের শিশু শিক্ষার্থীরা। স্কুলে শহীদ মিনার নেই। কিন্তু ২১শে ফ্রেরুয়ারী আতর্œজাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে শহীদের প্রতি সম্মান জানাতে বাশঁ,কাগজ দিয়ে ব্যতিক্রম ভাবে স্কুলের পাশেই অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরী করে পুষ্পস্থবক অর্পন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর পাড়ের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামে অবস্থিত জয়পুর সরকারী বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা। ২১শে ফ্রেরুয়ারী সকালে প্রভাতফেরী পর অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্থবক অর্পন করে শিক্ষার্থীরা।

    সাথে ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং অভিভাবকগন। শুধু এ স্কুলেই নয় জেলার হাওরা লের ১১টি উপজেলার প্রতিটি স্কুলেই স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকার কারনে এভাবেই শহীদ দিবস পালন করেছে অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জয়পুর সরকারী বিদ্যালয়ের ৫শ্রেনী ছাত্র সংসদ সভাপতি মিজানুর রহমান,সূর্য মনি বলেন,স্কুলে শহীদ মিনার নাই শুধু বইয়ের মধ্যেই পড়ি ২১শে ফ্রেরুয়ারী বিষয়ে। বাস্থবে ত দেখি না এর গুরুত্ব বুজি না।

    আমাদের প্রধান শিক্ষক এইবার বাঁশ,কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করে পালন করছি শহীদ দিবস ও আতর্œজাতিক মাতৃভাষা দিবস। স্কুল সংলগ্ন চিলানী তাহিরপুর এমদাদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদের খতিব হাফেজ এমদাদুল হক বলেন,শহীদ মিনার না থাকার হাওরা লের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে কলাগাছ কিংবা চেয়ার টেবিল দিয়ে বা অন্য কোন ভাবে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরী করে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকগন আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা,বিজয় দিবস,স্বাধীনতা দিবস পালন করে।

    ঐ দিন পার হলেই আর সেই শহীদ মিনার আর পাওয়া যায় না। জয়পুর সরকারী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাদিউজ্জামান জানান,স্কুলে স্থায়ী শহীদ না থাকায় শিশু শিক্ষার্থী শুধু পাঠ্য বইয়ের মাঝেই সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্থবে তাদের মাঝে আতর্œজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধা ও এই দিনটির গুরুত্ব বাড়ানো ও বুঝানোর জন্যই স্কুলের শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটি এবং অভিভাকদের সবাই কে বুজিয়ে এ উদ্যোগ নেই। স্কুল কমিটির সভাপতি আব্দুল হালিম ও বিদ্যুৎসাহী আল আমিন,২১শে ফ্রেরুয়ারী দিনটি বাঙ্গালী জাতির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ন ভুজাতে হলে প্রতিটি স্কুলেই স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করা খুবেই প্রয়োজন।

    না হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতর্œজাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসের গুরুত্ব ও মর্যাদা এক সময় হারিয়ে যাবে। শিক্ষার্থীরা ভুলে যাবে এই দিনটির ঐতিহ্য। জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসা সূত্রে জানাযায়,জেলায় ১৪৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এছাড়াও কিন্টারগার্ডেন আছে। এছাড়াও জেলায় ২২৫টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ১১১টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সংখ্যক উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়া সবকটিতেই শহীদ মিনার নেই। নাজমুল হুদা সংগ্রাম,সাদেক আলী,নিহার রঞ্জন,শেখর রায়,সাকাওয়াত হোসেন সহ জেলার সচেতন মহল ও অভিবাবকগন বলেন-শহীদদের কে সম্মান দিতে,স্বরনীয় করে রাখতে ও ভবিষ্যত্ব প্রজন্মের কাছে তাদের স্মরনীয় দিনগুলো তুলে ধরতে শহীদ মিনার নির্মান করা খুবেই প্রয়োজন।

    অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরী করে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়েছে তা সত্যিই প্রসংশার দাবী রাখে। জেলার বালিজুরী এলাহী বক্স উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান,বড়দল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন বলেন-ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎর্সগ করেছে এমন দৃষ্টান্ত বিশ্বের একটিও দেশেও নেই বাংলাদেশ ছাড়া। শহীদ মিনার না থাকায় দিন দিন হাওরা লের ছাত্র-ছাত্রী ও যুব সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ২১শে ফ্রেরুয়ারীর চেতনা।

    এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম জাহান রাব্বি জানান-আমরা শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য আবেদন করেছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের ব্যাপারে সরকারী ভাবে কোন বরাদ্ধ পাওয়া যায় নি। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-ভাষা ও মুক্তিযোদ্ধের শহীদদের প্রতি সর্ম্মান প্রদর্শন ও স্বরনীয় করে রাখতে এবং ভবিষ্যত্ব প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপর করা খুবেই প্রয়োজন।