হযরত শাহ সৈয়দ কালা শাহ,ফেরাই শাহ ও কলিম শাহ’র জীবনী

    0
    751

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২১অক্টোবরঃ চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের হযরত শাহ সৈয়দ কালা শাহ, ফেরাই শাহ, কলিম শাহ, হক শাহ ওলীদের জীবনী ও কেরামতি কে কোথায় আছে তাহার বর্ণনা। তখনকার সময়ে ব্রিটিশ, ভারত, পাকিস্তান, পূর্ব পাকিস্তান ছিল যৌথ সেই সময়ের কথা। স্ট্যাম্পে লিপিবদ্ধ রাখিয়া গেলাম। সৈয়দ শাহজালাল ইয়ামন হইতে ইসলাম প্রচারের জন্য ৫২২ হিজরীতে ভারত-ত্রিপুরা রাজ্যে শ্রীহট্টে আস্তানা তুলেছেন। সঙ্গে নিয়া আসিয়াছেন ৩৬০ আউলিয়া। এই আস্তানা হইতে যেখানে বিধর্মী বেশি সেখানে পাঠানো হয়েছে ইসলাম প্রচারের জন্য। ওলী এবং সেনাপতি ৩৬০ আউলিয়ার পরে আরও একজনকে পাঠানো হয়েছে ভারতের কৈল্যাণপুরে। তাহার নাম শাহ মাইন উদ্দিন শাহ আউলিয়া সেইখানে তিনি ইসলাম প্রচার করেছেন। সঙ্গে আরও কয়েকজন আউলিয়া ছিল এবং তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

    তাহার ঘরে দুই ছেলে জন্মগ্রহণ করেন। একজনের নাম রাখা হয় সৈয়দ কলিম শাহ ফকির, আরেক জনের নাম রাখা হয় সৈয়দ মাইটা শাহ ফকির। সেখান থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য অপর আরেকটি আস্তানায় চলে যান। সেটা হল শ্রীহট্টের দক্ষিণে আগরতলা মহারাজার বাজারের পূর্ব-উত্তর দিকে অপর আস্তানায় উঠেন ইসলামের জন্য। সঙ্গে ছিল সৈয়দ মাইন উদ্দিন শাহ আউলিয়ার দুই ছেলে ও মাইন উদ্দিন শাহ আউলিয়ার বিবি ও বিবির ভাই হক শাহ ফকির। হক শাহকে ছোট কিশোর রেখে মাতা ইন্তেকাল করেন। অপর আস্তানায় উঠার পরে ইসলামের কাজ শুরু করেন। সেই সময় জন্ম নেন সৈয়দ মাইন উদ্দিন শাহ আউলিয়ার আরেকটি ছেলে ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে। নাম রাখা হয় সৈয়দ কালা শাহ ফকির।

    মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়ার পর থেকেই তিনি কামেল পুরুষ হিসাবে পরিচিত। সৈয়দ কালা শাহ ফকির ছোটবেলা থেকেই ইসলামের কাজ শুরু করেন এবং অনেক কেরামতি প্রকাশ করিয়াছেন। সৈয়দ কালা শাহ ফকির তখন সময় ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সঙ্গী শ্রীহট্ট হইতে যোগ দেন সৈয়দ মাইন উদ্দিন আউলিয়ার সঙ্গে সৈয়দ সালেহ জঙ্গী ইসলামের কাজে। সৈয়দ সালেহ জঙ্গী আউলিয়ার কাছে বয়াত গ্রহণ করেন সৈয়দ কলিম শাহ, সৈয়দ মাইটা শাহ, সৈয়দ হক শাহ ফকির এবং সৈয়দ কালা শাহ ফকির। সৈয়দ কলিম শাহ, সৈয়দ মাইট্টা শাহ, সৈয়দ কালা শাহ ফকির তারা সকলের মামা হলেন সৈয়দ হক শাহ ফকির। মামা-ভাগনা মিলে বায়াত গ্রহণ করেন সালেহ জঙ্গীর হাতে। সেই আস্তানাতে কালা শাহ ফকির জন্ম নিয়েছেন সেই আস্তানার নাম সকল ওলীগণে রাখিয়াছেন কালা শাহ ফকির বাড়ি। মেখান থেকে মাইন উদ্দিন শাহ আউলিয়া চলে যান ইসলামের জন্য আসাম প্রদেশে। আর তাহার কোন খোঁজ পাওয়া গেল না। লক্ষ লক্ষ মানুষ কালা শাহর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

    এ সময় ভারত, আগরতলা মহারাজার বাড়িতে আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি ফালাইয়া কেরামতি প্রকাশ করেছিলেন। সৈয়দ কালা শাহ ফকিরকে আগরতলা মহারাজ খুশি হয়ে আগরতলা মহারাজার বাজারের পূর্ব দিকে মেরাচুঙ্গের বিলে ষোলদুন জমিন দান করে দিয়েছিলেন। সৈয়দ কালা শাহ ফকিরকে এক সময় ভারতের বিধর্মী যারা সৈয়দ কালা শাহ ফকিরের উপরে মাদ্রাজ হাইকোর্টে অভিযোগ আনিয়াছিলেন সেই কোর্টেও তিনি জয়লাভ করেন। সৈয়দ কালা শাহ ফকির আসন করিতেন আগরতলা মহারাজার বাজারের পূর্ব-উত্তর দিকে কুকাব জঙ্গলে। সৈয়দ সালেহ জঙ্গী আউলিয়ার আউলাদ নাই, সৈয়দ হক শাহ ফকিরের আউলাদ নাই, সৈয়দ কালা শাহ ফকিরের আউলাদ আছে। সৈয়দ কালা শাহ ফকির এর বিবির নাম আমেনা। সৈয়দ কালা শাহ ফকির এর ছেলের নাম সৈয়দ ফেরাই শাহ ফকির। সৈয়দ কালা শাহ ফকিরের মেয়ের নাম খুতিজান বিবি। সৈয়দ কলিম শাহ ও আমেনা বিবি ইন্তেকাল করেন। দাফন সম্পন্ন করেন নিজ বাড়িতে।

    পরে সৈয়দ কালা শাহ ফকির মজনু হয়ে যান। জায়গায় জায়গায় আস্তানা গড়েন। মানুষ তিন নামে চিনত তাহাকে। কেউ চিনে সৈয়দ কালা শাহ ফকির নামে, কেউ চিনে সৈয়দ কালু শাহ নামে, কেউ চিনে সৈয়দ কালা মানিক শাহ নামে। তিনি খুব কামেল পুরুষ ছিলেন। সৈয়দ কালা শাহ ফকির এর ছেলের নাম দুটি- সৈয়দ ফেরাই শাহ ফকির নামে সবাই চিনিতেন। তিনিও কামেল পুরুষ ছিলেন। ব্রিটিশের শাসন ছাড়ার পরে রাষ্ট্র আলাদা হয়ে যায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার পরে বলিতে পারি না কে কোথায় আছে। ইতি লিখিতং ব্যারিস্টার রতন বিহারী, কলিকাতা, তারিখ – ০৬/০৮/১৮৬২ ইংরেজি। উল্লেখ্য যে, উক্ত হযরত শাহ সৈয়দ কালা শাহ, ফেরাই শাহ, কলিম শাহ দরবার শরীফের মোতাওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শাহ সৈয়দ সেলিম উদ্দিন সাহেব, বড়াব্দা কালা শাহ ফকির বাড়িঃপ্রেস বিজ্ঞপ্তি