হবিগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে

    0
    213

    আমার সিলেট  24 ডটকম,০৪নভেম্বর,চুনারুঘাট সংবাদদাতাযে কোন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে প্রার্থী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে মাঠ পর্যায়ের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় আওয়ামীলীগ গত প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় ফলাফল অনুকূলে থেকে যায়। যে কারণে সেই ১৯৭০ সাল থেকে একটানা ৬ বার এমপি নির্বাচিত হয়ে বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে একমাত্র সায়হাম পরিবারের সদস্য ছাড়া বিএনপি বা জাপার আর কোন শক্তিশালী প্রার্থী রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বা জনপ্রিয়তার বিবেচনায় এখনও মাঠ পর্যায়ে উঠে না আসায় ঘুরেফিরে পুরনো ব্যক্তিরাই পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন।

    বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বর্ষীয়ান নেতা ও ভাষাসৈনিক এনামুল হক মোস্তফা শহীদ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮শ’ ৯৬ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। তবে এবার শুধু ব্যক্তি ইমেজ নয়, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইস্যু ও ধর্ম নিয়ে মৌলবাদীদের সৃষ্ট প্রভাবের বিষয়গুলো ছাড়াও ভৌগোলিক ও ভোটের অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে আওয়ামীলীগসহ সব দলকেই মূলত প্রার্থী বাছাইয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ আসনে মোস্তফা শহীদের বিপরীতে আওয়ামীলীগের অন্তত ৭-৮ প্রার্থী মনোনয়ন পেতে উপর মহলে শুরু করেছেন লবিং। তবে গত ৫ বছরে এ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় চুনারুঘাটে মন্ত্রী শহীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত নেই কোন প্রার্থী। ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি মোতাবেক তিনি তাঁর কর্ম তৎপরতায় চুনারুঘাট ও মাধবপুরের শহর এবং প্রামাঞ্চলের ঘন ঘন সফরের মাধ্যমে সভা-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এ ক্ষেত্রে বর্তমান উন্নয়নমূলক কাজ ও ব্যক্তিগত ইমেজকে মূল্যায়ন করে মোস্তফা শহীদকে ছাড়া মাধবপুর থেকে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তা হবে যেমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত, তেমনি আসনটি নিশ্চিত হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

    বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সলও এ আসনে এখন পর্যন্ত শক্তিশালী প্রার্থী। বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে মোস্তফা শহীদের কাছে পরাজিত হওয়ার পরও এবার বিজয় নিয়ে তিনি বেশ আশাবাদী। তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে দলীয় হাইকমান্ডের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে জোর লবিং করলেও শেষ পর্যন্ত ফয়সল প্রার্থী হবেন এমনটি ভাবছেন নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষ। এদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি চুনারুঘাটের কৃতি সন্তান শাম্মী আক্তারও এ আসনে বিএনপি’র একজন শক্তিশালী প্রাথী। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডঃ আহমদ আব্দুল কাদেরও ১৮ দলীয় জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

    এ আসনে আওয়ামীলীগের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন আওয়ামী আইনজীবি পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মাহবুব আলী, আওয়ামীলীগের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শিল্পপতি সৈয়দ তানভীর আহমেদ, মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পিপি এডভোকেট আকবর হোসাইন জিতু, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহ্ মুসলিম উদ্দিন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিষ্টার সায়েদুল হক সুমন, বিচারপতি আব্দুল হাই-এর ছেলে আরিফুল হাই রাজিব। তবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে সাবেক আমলা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে তাঁর শুভাকাংখীরা প্রচারে নিয়ে এসেছেন।

    রাজনীতিতে তাঁর পদচারণা না থাকলেও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি ও তাঁর পরিবারের ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সর্ম্পক। বঙ্গবন্ধুর ছিলেন প্রাইভেট সেক্রেটারি। সর্বশেষ ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। জাপা (এ) প্রার্থী হতে চাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল আহাদ চৌধুরী শাহিন। তিনি ইতোমধ্যে ভোটারদের বাড়ি, দোকানপাটসহ মাঠে-ময়দানে শুরু করেছেন ব্যাপক গণসংযোগ। তাঁকে হারিয়ে পাল্টা মনোনয়নের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন একসময়ের হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাউছারুল গণি। তিনিও এলাকায় শুরু করেছেন ব্যাপক জনসংযোগ। এ ক্ষেত্রে মহাজোট গত না হলে কাকে এরশাদ দলীয় মনোনয়ন দেবেন তার জন্য আরও কিছুদিন ভোটারদের অপেক্ষা করতে হবে।