আউলিয়াদের মাধ্যমে এদেশে ইসলাম এসেছেঃসৈয়দ সালেহ আহমাদ

    0
    275

    ইছালে ছাওয়াব মাহফিলের ১ম দিনে ফান্দাউক দরবার শরীফের পীর

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১মার্চ,কে.এম শামছুল হক আল মামুন ও মোয্যাম্মিল হক মাছুমীঃ বাংলাদেশের অন্যতম আধ্যাতিক মারকাজ ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীর আলহাজ্ব মাওলানা মুফতি শাহ সূফী সৈয়দ সালেহ আহমাদ মামুন বলেছেন, হক্কানী আলেম ও পীর আউলিয়াদের মাধ্যেমে এদেশে ইসলাম এসেছে। বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমাদের মাঝে নেই। আছেন হক্কানী আলেম ও পীর মাশায়েখ যাদের মাধ্যমে আমরা এদেশে ইসলাম পেয়েছি। যাদের সোহব্বতে এসে পথ  হারা ও দিশেহারা অসংখ্যা অগণিত মানুষ পেয়েছে সত্য পথের দিশা, সক্ষম হয়েছে আল্লাহ মূখী জীবন গঠন করতে। ফেত্না ফ্যাসাদের যুগে ঈমান আকিদা ঠিক রেখে আমলি জিন্দেগি গঠন করা অত্যান্ত কঠিন হয়ে গেছে। আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর লোক আছে যারা নিজেরাও আমল করে না এবং অন্যদেরকেও আমল করতে দেয় না। বিদেশী মদদপুষ্ট একদল লোক মিডিয়া সহ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মানুষের মাথায় টুপি, পাগড়ি, মুখে দাঁড়ী, গায়ে পাঞ্জাবী এককথায় সুন্নতে নবীজির আর্দশে পরিচালিত এই সুন্দর জীবন যাপনের পিছনে রয়েছে যাদের অবদান তারাই হলেন হক্কানী আলেম ওলামা ও পীর মাশায়েখ। তাদের অবদানকে খাটো করে দেখা অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আল্লাহওয়ালা হতে হলে, পরকালে আল্লাহ’তালার দিদার লাভ করে পরম সুখের স্থান চিরস্থায়ী জান্নাতের বাসিন্দা হতে হলে প্রত্যেক মুসলমানদের উচিত আল্লাহওয়ালাদের সোহব্বতে জীবন পরিচালিত করা।

    ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এদেশে হক্কানী আলেম ওলামা তৈরির জন্য পীর মায়ায়েখদের অবদান অবিশ্ব্যস্বরনীয়। বর্তমানে মানুষের মধ্য থেকে সহীহ আকীদা ও আমল বিদায়ের পথে তাই এই যুগ সন্দীক্ষনে একদল দেশ প্রেমিক হক্কানী আলেম তৈরিতে অলি আউলিয়াদের অবদান অনস্বীকার্য। এব্যাপারে দরবারের পীর ভাই-বোন মুরীদান আলেম ওলামাদের আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসার জন্য জোড় তাগিদ প্রদান করেন। যুগ যুগ ধরে অলি আউলিয়ারা পথ হারা ও দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে কঠোর পরিশ্রম ও সাধনা করেছেন। আল্লাহ তার রাসুলের সন্তোষ্টি লাভের জন্য ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতেন। পীরের কাছে বয়াত হওয়া মানে আল্লাহর সন্তোষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে চলা। সত্যিকারের মুসলমান ও আল্লাহওয়াল হতে হলে হক্ক দরবার ও হক্কানী পীর মাশায়েখের ছামিয়ানার নিচে সমবেত হতে হবে। শরীয়ত ও তরিকতের ময়দানে কঠোর সাধনা করতে হবে।

    পীর সাহেব আরও বলেন, আল্লাহর রেজা মন্দি লাভ করতে হলে। তরিকত পন্থি ভাই বোনদের চারটি কাজ নিয়ম মাফিক করতে হবে। যথা- ফাতেহা শরীফ পাঠ, মুরাকাবা মোশাহেদা, দরুদ শরীফ পাঠসহ খতম শরীফ ঠিকমত আদায় করতে হবে। একাধারে ৪০ দিন পর্যন্ত তরিকতের কাজ করলে মানুষের চরিত্রে নৈতিক পরিবর্তন অবশ্যই ঘটবে। শরীয়ত বাদ দিয়ে মারিফত অর্জন করা সম্ভব নয়। পীর ও মাজার শরীফে সেজদা করা হারাম ও নাজায়েজ। গান, বাজনা অনৈসলামীক কার্যকলাপ থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে। বেশী বেশী করে নবীর উপর দরুদ ও সালাম পাঠ করলে দিল রওশন ও অন্তরে নূর ফয়দা হয়।

    অন্তরে আল্লাহর ভয়ভীতি থাকতে হবে। একমাত্র আল্লাহর ভয়ভীতিই মুক্তাকি ও পরহেজগারী লাভ করা সম্ভব। তিনি বলেন, ফান্দাউক দরবার অলি আউলিয়াদের দরবার এই দরবারের প্রতি আল্লাহর অশেষ রহমত রয়েছে। তিনি গতকাল শুক্রবার ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত  শাহ সূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আব্দুস ছাত্তার নকশেবন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল মোজাদ্দেদে জামান রাসুল নামা হযরত শাহ সূফী আলহাজ্ব সৈয়দ নাছিরুল হক মাছুম আল কাদ্রী চিশতী নকশেবন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকরী (রহঃ) দ্বয়ের বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিলে ১ম দিন উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান ও সভাপতির তালিম ও তারবিয়াত বয়ানদান কালে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। মাহফিলের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, পীরজাদা আলহাজ্ব মাওলানা মুফতি শাহ সূফী সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমদ। ওয়াজ করন, মাওলানা মুফতি সৈয়দ এমদাদ উল্লাহ আব্বসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী, মাওলানা গাজী আব্বাস উদ্দিন, মাও: মুতালেব হোসেন সালেহী, মাও: আলমগীর হুসেন আনসারী, মাও: বেলাল হুসেন, মাও নেছার আহম্মদ চাদপুরী, মাওলান আলহাজ্ব ফজলুর রহমান আনোয়ারী, মাওলানা আব্দুল মজিদ ফিরুজপুরী, আলহাজ্ব মাওলানা হাফেজ আব্দুর রহমান, মাওলানা কামাল উদ্দিন আনসারী, মাওলানা শাহ আলম মাসুমী, মাওলানা সৈয়দ জাকারিয়া আহম্মদ, মাওলানা মঞ্জুর আহম্মদ নোমানী এবং মাহফিল উপস্থাপনায় শাহ সূফি মাওলানা সৈয়দ মোসাহিদ হোসেন ।

    ফান্দাউক দরবার শরীফ কর্তৃক আয়োজিত ২ দিন ব্যাপী ওয়াজ মাহফিল ঘিরে দেশের পূর্বাঞ্চল হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর সহ ফান্দাউকের সর্ব্রত্র উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে।