সড়ক পরিবহন আইন পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

    0
    353

    নূর মোহাম্মদ সাগর,বিশেষ প্রতিনিধি:আজ রোববার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নিসচা শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার উদ্যোগে কলেজ রোডস্থ শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

    জনগণের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে নিরাপদ সড়ক চাই, পথ যেন হয় শক্তির, মৃত্যুর নয়। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নিসচা শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সম্পাদক গোলামুর রহমান মামুন ,এসময়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নিসচা শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মো. ছালেক আহমেদ , সাহ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ হোসেন এতে উপস্থিত ছিলেন উত্তর সংগঠনের সদস্যবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়। ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়-এ স্লোগানে সামাজিক আন্দোলন নিরাপদ সড়ক
    চাই (নিসচা)’র জন্ম আজ থেকে ২৭ বছর আগে, ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর। এদিন সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনকে হারিয়ে আমি এ আন্দোলন গড়ে তুলি। স্ত্রীকে আর ফিরে পাবাে না এটা জানি, কিন্তু আর কারও স্ত্রী, বান, ভাই, বাবা-মা এভাবে পৃথিবী থেকে বিদায় নিক তা চাইনি। এ কারণে নিজের চলচ্চিত্র জগতের ক্যারিয়ার ছেড়ে দেশের মানুষকে সড়ক দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।দীর্ঘ এ আন্দোলনে নিসচার পালকে অনেক অর্জন এসেছে। নিঃসন্দেহে এসব সাফল্য আমাদের
    অনুপ্রাণিত করে। তবে কোনাে প্রাপ্তিতেই আমরা থেমে থাকিনি। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে
    আমরা শুরু থেকে একটি সমযােপযােগী আইনের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। পাশাপাশি আইন পাস করলে হবে না সড়কে আইন মানতে মানুষকে সচেতন করার ওপর জোর দিই। এজন্য ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে ঘােষণার দাবি জানাই। আমাদের লক্ষ্য ছিল,নিরাপদ সড়কের জন্য একটি দিবসকে যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা যায় তা হলে জনগণের মাঝে এ বিষয়ে একটি সচেতনতা তৈরি হবে। সরকার আমাদের দাবিকে সম্মান জানিযে ২০১৭ সাল
    থেকে দিবসটির জাতীয় স্বীকৃতি দিয়েছে এবং দিনটি যথাযােগ্য মর্যাদায় সরকারিভাবে পালিত
    হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, এতে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আরও জোরালাে হয়েছে। আমাদের
    দীর্ঘদিনের আরেকটি দাবি, সমযােযােগী সড়ক আইন, সেটিও পূরণ হয়ছে। এখন দরকার এ
    আইনের সঠিক প্রয়োগ।কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘােষণার পরও ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর প্রয়োগের দিন থেকেই আইনটি হােঁচট খেল। আইনটির যথাযথ প্রয়োগে বারবার বাঁধা হয়ে দাঁড়িযেছে পরিবহন সেক্টরের একটি অশুভ শক্তি। যদিও জনগণের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইনের সংস্কার আমাদের দাবি ছিল। সরকারও বিভিন্ন সময় ১৯৮৩ সালে প্রণীত আইনটিকে সমযােযােগী করার উদ্যোগও নেয়। অনেকটা সময় পেরিয়ে সড়কের বিশৃঙ্খল অবস্থার বাস্তবচিত্র এবং ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরােযা বাসের চাপায় শহীদ
    রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের কায়েকজন শিক্ষার্থীসহ বাস চাপায বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ এবং দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানাে রাজীবের মর্মান্তিক মৃত্যুসহ বেশ কয়েকটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন এ আইনটি পাসের প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে। অবশেষে কোনও চাপের মুখে নতি স্বীকার না করে সরকার এ আইনটি জাতীয় সংসদে পাস করে ২০১৮ সালে। এর প্রায় ১৫ মাস পর ২০১৯
    সালের ১ নভেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর শুরু করে সরকার। প্রথম ১৪ দিন সহনীয় মাত্রায় এর
    প্রয়োগ ছিল। পরবর্তীতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিতে আইনের কয়কটি বিষয় পরবর্তী ছয়মাস পর্যন্ত কনসিডারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরবর্তীতে করােনার কারণে এই আইন যথাযথ প্রয়োগের সময়সীমা বৃদ্ধি করে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
    একটা কথা বলতে দ্বিধা নেই সরকার নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রয়োগে যখনই উদ্যোগ নেয় তখনই পরিবহন সেন্টরের সেইচক্রটি বাঁধা সৃষ্টি করে। তারা নতুন করে নানা ধরনের দাবি দাওয়া তুলে ধরে। শুধু তাই নয়, গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে জনগণকে ভােগান্তিতে ফেলে দেয়।এমনকি আমাদেরকে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানাে হয়। আমাকে অবাস্থিত ঘােষণা করা হয়।
    যা সভ্যিই দুঃখজনক। আমি বলবাে নতুন আইনের বিষয়ে তারা কোনও প্রস্তুতি ইচ্ছে করেই নেয়নি এবং নিচ্ছে না। তারা শুধু দোষারােপ করে গেছে তাদের দূর্বলতা ঢাকার জন্য। তারা আরও লিখিত বক্তব্যের মধ্যে আরও বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।