স্বামীকে পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহ করায় স্ত্রীকে খুন,পুলিশের হাতে আটক

0
914
স্বামীকে পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহ করায় স্ত্রীকে খুন
স্বামীকে পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহ করায় স্ত্রীকে খুন

নূরুজ্জামান ফারুকী বিশেষ প্রতিনিধিঃ  স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করার কারণেই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঈদুল ফিতরের দিন ভোরে গৃহবধূ বিবি ফাতেমাকে (৫০) পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে বলে স্থানীয় এবং পুলিশ ধারণা করছে।

স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার পর ঘাতক স্বামী নুরুল আমীন সবুজ (৫৫) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পরিষ্কার হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার ও করেছেন আটক স্বামী।

রোববার (১৬) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, শনিবার (১৫ মে) রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত নুরুল আমীন সবুজ নোয়াখালী জেলার সদর থানার শ্রীপুর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে। তার স্ত্রী নিহত বিবি ফাতেমা একই গ্রামের গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর মেয়ে।

তারা সপরিবারে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন পূর্ব নিমাই কাসারী এলাকার ৩নং রোডে শাহীন মিয়ার মালিকানাধীন ফিরোজ ভিলার নিচতলায় একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন।

ওসি মশিউর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এ প্রতিনিধিকে আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত নুরুল আমীন সবুজের প্রাথমিক স্বীকারোক্তি মতে পরকীয়া নিয়ে দাম্পত্য কলহ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বামী নুরুল আমীন সবুজের সঙ্গে অন্য কোনো নারীর সম্পর্ক রয়েছে, বিবি ফাতেমা এমন সন্দেহ করত। এ নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তিন দিন আগে থেকে নুরুল আমীন সবুজ তার স্ত্রী বিবি ফাতেমাকে খুন করার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি সংগ্রহ করে, যেটি পুলিশ উদ্ধার করেছে।

ওসি জানান, ঘাতক স্বামী নুরুল আমীন সবুজকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, ঈদের দিন ভোর রাতে সুযোগ বুঝে সংগ্রহ করা ওই ছুরি দিয়ে স্ত্রী বিবি ফাতেমার গলায় আঘাত করে তাকে খুন করে। পরে স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত হলে সে পালিয়ে যায়। পরে তাদের ছেলে মো. মিলন (৩০) ভোর ৫টার দিকে মায়ের খোঁজ নিতে গেলে ঘরে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।

তার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরাসহ এলাকাবাসী ছুটে এলে হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় নিহত বিবি ফাতেমার ছেলে মোঃ মিলন মায়ের এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে বাবা নুরুল আমীন সবুজকে অভিযুক্ত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে ওই দিনই হত্যা মামলা দায়ের করেন।