স্থানীয়দের ধারণা আগুনের এই গর্তটি দোজকের প্রবেশদ্বার

    0
    258

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৫অক্টোবরঃনরকের প্রবেশদ্বার বলে যদি কিছু থাকে, তা হলে তুর্কমেনিস্তানের ডারওয়েজ গ্রামের এই জায়গাকে বলা যেতে পারে। দিন-রাত একটি গর্তের মুখে জ্বলেই চলেছে আগুন। ডারওয়েজ গ্রামের আশপাশে আরও কোথাও এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় না। বছরে পর বছর শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা এই গর্ত জ্বলছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা এই গর্তকে নরকের প্রবেশদ্বার বলে ডাকে। কেন এই গর্তে সব সময় আগুন জ্বলে? এর পিছনে কী রহস্য রয়েছে? না কি সত্যিই এটি নরকের প্রবেশদ্বার? বিজ্ঞান কী বলছে? হয়ত এ সব প্রশ্নগুলো আপনার মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে। তা হলে জেনে নিন সত্যিই এর পিছনে রহস্য কী?

    তুর্কমেনিস্তানের ডারওয়েজের এই গর্তটি ২২৬ ফুট চওড়া এবং ৯৮ ফুট গভীর।

    যদিও এটি কোনও প্রাকৃতিক গর্ত নয়। মানুষের দ্বারাই তৈরি হয়েছে এই ‘নরকের প্রবেশদ্বার’।

    তুর্কমেনিস্তানের ডারওয়েজে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল ভাণ্ডার। ১৯৭১ সালে রুশ ইঞ্জিনিয়াররা আবিষ্কার করেছিল এই জায়গাটি।

    প্রথমে রুশ ইঞ্জিনিয়রার ভেবেছিলেন, এটি তেলের খনি হতে পারে। সেই মতো শুরু হয় খনন কার্য।

    কিন্তু তাঁরা ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি তেলের বদলে সেই গর্ত থেকে বেরিয়ে আসবে বিষাক্ত গ্যাস। এমনকী খননকার্য চলাকালীন ধস নেমে মাটির তলায় চাপা পড়ে যায় যন্ত্রপাতি।

    বিষাক্ত গ্যাস চারদিক ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে খনন বন্ধ রাখা হয়। সেখান থেকে ক্যাম্পও উঠিয়ে নেওয়া হয়।

    রুশ ইঞ্জিনিয়াররা মনে করেছিলেন এই গর্তে আগুন জ্বালিয়ে দিলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিষাক্ত গ্যাস বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

    কিন্তু তাঁদের ধারণা ভুল প্রামাণিত করে প্রায় ৪৫ বছর ধরে এক ভাবে জ্বলছে এই গর্ত।

    সেই থেকে ডারওয়েজের এই জায়গা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

    অনুসন্ধানকারী জর্জ কৌরোনিস প্রথম নরকদ্বারে প্রবেশ করেছিলেন। গবেষণার জন্য সেখান থেকে এক্সট্রিমোফিল অনুজীব সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। তাঁর এই দুঃসাহসিক অভিযান ক্রাটার অব ফায়ার নামে একটি ফিল্ম তৈরি করে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে দেখানো হয়।

    এই জায়গা এখন পর্যটকদের মূল আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫০ হাজার পর্যটক এসেছেন নরকদ্বারকে চাক্ষুস করতে।

    তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির ডারওয়েজ সহ বিশল জায়গা হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার। সম্প্রতি তুর্কমেনিস্তান সরকার এই গর্তকে বুজিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

    সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা