সোলাইমানির উপর হামলার কঠোর জবাব দিল ইরান

    0
    236

    আইআরজিসি আজ (বুধবার) ভোররাতে এক বিবৃতিতে বলেছে, লেঃ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির উপর আগ্রাসী মার্কিন সেনাদের ‘সন্ত্রাসী ও অপরাধমূলক’ হামলার কঠোর জবাব দিতে আইন আল-আসাদ ঘাঁটিকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে।

    আইআরজিসি’র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার কাপুরুষোচিত পদক্ষেপের ‘কঠোর প্রতিশোধ’ নেয়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আজ (বুধবার) ভোররাতে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন বিমানঘাঁটি ‘আইন আল-আসাদ’র ওপর ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য অসংখ্য ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে ঘাঁটিটিতে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

    অভিযানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘শহীদ সোলাইমানি’ এবং এই অভিযানের মাধ্যমে যে ‘মহান বিজয়’ অর্জিত হয়েছে সেজন্য বিবৃতিতে ইরানের মুসলিম জাতিকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

    মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, তাদের ঘাঁটিতে এক ডজনেরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া, ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় ইরবিল শহরের মার্কিন ঘাঁটিতেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে।

    ইরাকের আল-মায়াদিন টেলিভিশন চ্যানেল তাদের সংবাদদাতাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইরবিল বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। হামলার পর ওই বিমানবন্দরের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

    আইআরজিসি’র বিবৃতিতে ‘বড় শয়তান’, ‘রক্তপিপাসু’ ও ‘দাম্ভিক’ আমেরিকাকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলা হয়েছে, যদি আবার কোনো ‘শয়তানি’ করা হয় কিংবা কোনো আগ্রাসন বা উসকানি চালানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে ওয়াশিংটনকে এর চেয়ে ‘বেদনাদায়ক’ ও ‘বিপর্যয়কর’ জবাব দেয়া হবে।

    একইসঙ্গে বিবৃতিতে আমেরিকার যেসব মিত্র দেশ তাদের ঘাঁটিগুলোকে এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের হাতে তুলে দিয়েছে তাদের প্রতিও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যে দেশের ভূমি থেকেই ইরানের ওপর হামলা চালানো হবে সেই দেশেরে ওপরও আক্রমণ চালানো হবে।

    সোমবার সকালে রাজধানী তেহরানে জেনারেল সোলাইমানিসহ আরো পাঁচ শহীদের নামাজে জানাযায় অংশ নেন প্রায় ৭০ লাখ মানুষ
    ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার অপরাধে ইহুদিবাদী ইসরাইলকেও ইরান আমেরিকার মতো সমান অপরাধী বলে গণ্য করে। বিবৃতিতে এর চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আগে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আমেরিকার জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

    গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ইরাক সরকারের রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দেশটি সফরকারী ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে সন্ত্রাসী মার্কিন সেনারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো ওই হামলায় ইরাকের জনপ্রিয় স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হাশদ আশ-শাবি’র সেকেন্ড-ইন-কমান্ড আবু মাহদি আল-মুহান্দিস এবং দু’দেশের আরো ৮ কমান্ডার শাহাদাতবরণ করেন।

    ইরাক ও ইরানের বহু শহরে অসংখ্যবার জানাযার নামাজ শেষে মঙ্গলবার জেনারেল সোলাইমানির লাশ তার জন্মভূমি ইরানের কেরমান শহরে দাফন করার কথা থাকলেও প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে তা সম্ভব হয়নি। আজ (বুধবার) তাঁর লাশ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।পার্সটুডে