সোনা আত্মসাতের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

    0
    197

    আমারসিলেট24ডটকম,০৮এপ্রিলঃ সোনার বার আত্মসাৎতের ঘটনায় রামপুরা থানার ৩ পুলিশসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।গতকাল সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে মহানগর গেয়েন্দা পুলিশের একটি টিম রামপুরা থানায় এসে মামলার এজাহারটি দাখিল করলে থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে।
    মামলার রেকর্ড হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার সেকেন্ড অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব) টিমের পরিদর্শক ফজলুল হক বাদি হয়ে ৩ পুলিশসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।মামলাটির বাদী হয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুল হক। গোয়েন্দা পুলিশ মামলা করলেও তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
    দুই সোর্সসহ ৩ পুলিশকে আসামি করে দায়ের করা মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে থানার সাব ইন্সপেক্টর মঞ্জুরুল আলমকে। এছাড়াও অন্যান্য আসামিরা হলো থানার কনস্টেবল ওয়াদেুল ও  কনস্টেবল আকাশ চৌধুরী,  সোর্স  রনি ও সজিব শিকদার। এদের মধ্যে শুধুমাত্র সোর্স সজিব শিকদার পলাতক রয়েছেন। বাকিদের আটক করে জেল হাজতে রাখা হয়েছে।
    মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- গত ১৩ মার্চ দিবাগত রাতে রামপুরা থানা পুলিশের এসআই মঞ্জুরুল আলম একটি প্রাইভেট কারকে ধাওয়া করেন। পরে গাড়িতে থাকা লোকজন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান। এরপর তিনি গাড়িটিকে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর ১৭ মার্চ গাড়িতে সোনার বার রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে গাড়ি তল্লাশি করে ৭০ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটক করা হয় গাড়ির চালক সমির বিশ্বাস ও অপর যাত্রী মাহিনকে। পরে তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানায় গাড়িতে ১৬৫টি সোনার বার ছিল। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় গোয়েন্দা পুলিশ অনুসন্ধান করে। এরই এক পর্যায়ে ওই সময় দায়িত্বপালনকারী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআাই) মঞ্জুরুল আলম, কনস্টেবল আকাশ চৌধুরী, কনস্টেবল ওয়াহেদুল ইসলাম ও রনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সোনার বার আত্মসাৎ করার বিষয়টি স্বীকার করে এবং তাদের হেফাজতে থাকা ১৬৫ পিসের মধ্যে ১৪৯ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়।
    গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ইকবাল হোছাইন বলেন, আমরা থানায় মামলা দায়ের করেছি। আসামিরা যেহেতু সরকারি চাকুরি করেন সেহেতু মামলা করতে আমাদের দুদুকের অনুমতি নিতে হয়েছে। দুদক সোমবার অনুমতি দিলে আমরা মামলাটি দায়ের করি। আর এই মামলাটিও তদন্ত করবেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
    মামলার ধারাগুলো হলো ৪০৯/১০৯/১১৪ দ-বিধি তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২)।
    তিনি আরো বলেন, সোনার বার আত্মসাতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা ও ইন্সপেক্টর তদন্ত নাসিম আহমেদের বিরুদ্ধে কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
    এ ঘটনায় ওসি কৃপা সিন্ধু বালা, ইন্সপেক্টর তদন্ত নাসিম আহমেদ এবং সাব ইন্সপেক্টর মঞ্জুরুলকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ন্যস্ত হয়। রিমান্ডে আনা হয় সমির ও মাহিনকে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

    এ দিকে ঘটনার ১৮ দিন পর ৩১ মার্চ সোমবার সকালে আত্মসাতের ঘটনায় এসআই মঞ্জুরুল ইসলাম, কনেস্টবল ওয়াহিদুল ও আকাশকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে আনার পরপরই চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার নাটকীয় মোড় নেয়। পুলিশের ওই ৩ সদস্য  ও সোর্স রনি সোনার বার আত্মসাতের ব্যাপারে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
    তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সোর্স রনির গাজীপুরার সাতাইশ এলাকায় তার শ্বশুরের বাড়ি থেকে ১৪পিস সোনার বার উদ্ধার হয়। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এসআইয়ের নিকটাত্মীয়ের বাসা থেকে ৫৮ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। এরপর দুই কনস্টেবল আকাশ ওয়াহেদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুর কালিয়াকৈর ও বগুড়ার সোনাতলা থেকে ১৪ ও ৬৩টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়।
    অন্যদিকে সোনার বার অর্থাৎ আলামতগুলো মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নিকট হস্তান্তরে গড়িমসির কারণে শোকজ হওয়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসএম কামরুজ্জামানকে মতিঝিল থানায় বদলি করা হয়েছে।গত রবিবার বিকালে তাকে মতিঝিল থানায় বদলির আদেশ আসে। পরের দিন সোমবার তিনি মতিঝিল থানায় যোগদান করেন। এছাড়াও বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য এসি খিলগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নূরে আলমকে দায়িত্ব দেয়া হয়।