সূর্য শিশির উদ্ভিদের দেখা মিলেছে পর্যটন এলাকা জৈন্তাপুরে

    0
    482

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধি: পর্যটন খ্যাত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলেছে মাংসাশী উদ্ভিদ সূর্য শিশিরের। সরজমিনে ঘুরে নিজেপাট ইউনিয়নের ভিতরগুল গোয়াবাড়ী গ্রামে ও লক্ষীপ্রসাদ হাওরের বাবনী বিল সহ উপজেলার আরও বিভিন্ন অ লে এই উদ্ভিদটির দেখা মিলে। শিশুরা খেলার ছলে উদ্ভিদটি তুলে নিয়ে খেলা করে।
    সরজমিনে উপজেলা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এবং প্রযুক্তি কল্যাণে এই উদ্ভিদের পরিচিত সম্পর্কে জানা যায়। গ্রাম লের কৃষকরা উদ্ভিদটির নাম না বলতে পারলে তারা বলেন ঘাস ফুল, প্রতি বৎসর উপজেলা বিভিন্ন মাঠে তারা এই ঘাস ফুলটি দেখতে পান। উদ্ভিদটি মাংসাশী তারা কখনও ভাবতে পারেনি।
    পৃথিবীতে অনেক ধরনের উদ্ভিব মাংসাশ হয় থাকে। বেঁচে থাকা আর নির্দিষ্ট কোনো পরিবেশে বৃদ্ধির কারণে উদ্ভিদ ও মাংসাশী হয়ে থাকে। মাংসাশী উদ্ভিদ জন্মে ভেজা আর স্যাঁত সেঁতে নিচু জলা ভূমিতে। এমনি এক ধরনের মাংসাশী উদ্ভিদের কথা বলছি, যার নাম সূর্য শিশির। এর ইংরেজি নাম ঝঁহফবংি, এটি উৎড়ংবৎধপবধব পরিবারের অন্তর্গত। আঠালো ফাঁদওয়ালা মাংসাশী উদ্ভিদ হিসেবে সূর্য শিশিরের বেশ নাম ডাক রয়েছে। ছোট আকারের এ উদ্ভিদটি মাত্র ৩.৫ ইি বা ৮সেন্টিমিটার চওড়া।

    বড় ধরনের আগাছা বা এর আশপাশে জন্মানো গাছপালার নিচে লুকানো অবস্থায় এটি থাকে। পাতা গুলো ছোট আর গোলাকার। গ্রীষ্মকালে গোলাকার পাতা গুলোর উঁচুকান্ড গুলোতে দুধ সাদা ফুল ফোটে। সূর্য শিশিরের পাতা গুলো উজ্জ্বল লাল রঙের দেখায়। মনে হয় যেন পাতার ওপর শিশির বিন্দু চিকচিক করছে। আসলে এই লালচে শিশির বিন্দু গুলোই হলো এ উদ্ভিদের পোকামাকড় ধরার মারণ ফাঁদ। সূর্য শিশিরের পাতা গুলো বিভিন্ন উচ্চতার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য বোঁটা দিয়ে ঢাকা থাকে। প্রত্যেকটি বোঁটার ওপর থাকে অতি ক্ষুদ্র একটি গ্রন্থি বা অঙ্গ, যা এক ধরনের স্বচ্ছ আঠালো তরল পদার্থ উৎপন্ন করে। তরল পদার্থটি বোঁটাগুলোর ওপর শিশির বিন্দুর মতো জমা হয়। তরল নিঃসরণকারী গ্রন্থটি দেখতে লাল বলে এর ওপরের তরল পদার্থটিও লালচে বলে মনে হয়। শুধু তা-ই নয়, সূর্য শিশির বাতাসেও একধরনের সুগন্ধ ছড়ায়।

    মাছি ও অন্যান্য পোকামাকড় উজ্জ্বল লাল রঙ, শিশির বিন্দু আর সুগন্ধে আকৃষ্ট হয়ে এ উদ্ভিদের কাছে চলে আসে। আর পাতার ওপর নামা মাত্রই পোকার পা গুলো পাতার উঁচু বোঁটায় থাকা তরল পদার্থে আটকে যায়। উৎড়ংবৎধ খরহবধৎরং খধসরহধ পা ছাড়িয়ে নিতে ওরা যতই টানাটানি করে ততই পাতার গ্রন্থিগুলো থেকে আরো বেশি করে আঠালো রস বের হতে থাকে। পোকামাকড় গুলো এভাবে আরো শক্ত ভাবে পাতায় আটকে যায়। পোকার চার পাশে থাকা বোঁটা গুলো বেঁকে গিয়ে আরো বেশি পরিমাণে রসবের করতে থাকে।

    পুরো পাতাটি কুঁচকে গিয়ে পোকাটির চার পাশে একটি পেয়ালার মতো আকার সৃষ্টি করে। পোকাটির দেহের নরম অংশ গুলো গলে পাতায় মিশে না যাওয়া পর্যন্ত এ উদ্ভিদের পরিপাকে সাহায্যকারী এনজাইম গুলো কাজ করে। চার-পাঁচ দিন পরে সূর্য শিশিরের পাতা ও বোঁটাগুলো আবার আগের মতো সোজা হয়ে যায়। দেখে বোঝার উপায় থাকে না এটি একটি মাংসাশী উদ্ভিদ।