সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    0
    210

    “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায়-পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন-জাফর ইকবাল ইসলামের শত্রু,তাই হামলা করেছি র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হামলাকারী”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৪মার্চ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ    সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষাবিদ, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

    বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস-এর চিফ কার্ডিয়াক সার্জন অ্যান্ড কনসালটেন্ট সার্জন জেনারেল মেজর জেনারেল মুন্সি মো. মজিবুর রহমান সিএমএইচের অ্যাডমিশন ব্লকের তৃতীয় তলায় আজ রোববার সকাল ১১টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

    মজিবুর রহমান বলেন, জাফর ইকবাল সজ্ঞান, সচেতন ও আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন। এছাড়া সংক্রমণ এড়াতে সিএমএইচে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় চিকিৎসকেরা তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি সুস্থ আছেন, তার মানসিক অবস্থা ভালো এবং স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন।

    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ড. জাফর ইকবালের চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

    গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিপল-ই বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালকে  এক ব্যক্তি ছুরিকাঘাত করে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ট্রিপল-ই বিভাগের একটি অনুষ্ঠান চলছিল। অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ওই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন।

    মঞ্চে বসা অবস্থায় ভিড়ের মধ্যে একজন তাকে ছুরিকাঘাত করে। ঘটনার পর আহত অবস্থায় জাফর ইকবালকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

    সেখানে অস্ত্রোপচার করা হয় তার। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জাফর ইকবালের অস্ত্রোপচার শেষ করা হলে তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়।

    অপরদিকে ধৃত হামলাকারী  প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করে বলেছে যে  “জাফর ইকবাল ইসলামের শত্রু, তাই হামলা করেছি।” র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হামলাকারী ফয়জুর রহমান এই কথা বলেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিলেও, সে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য কি না এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি।

    নগরীর রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে র‍্যাব-৯ এর সিইও লেফট্যানেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ শনিবার দিবাগত রাতে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়ে বলেন, ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী যুবককে চিকিৎসার জন্য সিলেট জালালাবাদ সেনানিবাসস্থ সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার জ্ঞান ফিরেছে। তবে সে তার পরিচয় ঠিকভাবে বলছে না। তার নাম সে একবার বলে শফিকুর রহমান, আরেকবার ফয়জুর রহমান বলে জানিয়েছে।

    তিনি আরো জানান, রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জ্ঞান ফেরার পর ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে হামলাকারী বলেছে, ‘জাফর ইকবাল ইসলামের শত্রু, তাই তার ওপর হামলা করেছি।’

    হামলাকারীর ফয়জুর রহমান (২৪) এর প্রাথমিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় পাশ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার বাড়িতে র‌্যাব ও পুলিশ তল্লাশি চালায়। এসময় বাড়িটি তালাবদ্ধ থাকায় কাউকে না পেলেও পার্শ্ববর্তী মামার বাড়ি থেকে তার মামা ফজলুর রহমানকে আটক করে পুলিশ।

    এ বিষয়ে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান বলেন, ফয়জুর রহমানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। পাশের বাড়ি থেকে মামাকে আটক করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, ফয়জুর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াপন গ্রামের হাফিজ আতিকুর রহমানের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার থাকতেন তিনি।

    স্থানীয়রা জানান, ফয়জুর মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছেন। তিনি মঈন কম্পিউটার নামে একটি দোকানে কাজ করতো। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল সিলেট গেছে।

    এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাফর ইকবালকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত ১০টা ২৩ মিনিটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

    শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিপল-ই বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালের ওপর হামলা করা হয়।