সুবিধার রাজনীতি করলে এ দেশের জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে না

    0
    210

    আমারসিলেট24ডটকম,২২ফেব্রুয়ারীঃ আন্তর্জাতিক সংগঠন আল কায়েদার হুমকির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে জোর দিতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মিজানুর রহমান। আজ শনিবার  রাজধানীর র‌্যাডিসন হোটেলে এক আলোচনা সভায় তার এই আহ্বানের পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে দেখার পরামর্শও আসে। বাংলাদেশ সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত “জঙ্গিবাদের হুমকিঃবাংলাদেশ ভাবনা শীর্ষক” এই সভায় বিভিন্ন অঙ্গনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগন অংশ নেন।
    মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, কেবল জঙ্গিবাদের উত্থানের কারণে বাংলাদেশের মানবাধিকার হুমকির মধ্যে রয়েছে। জঙ্গিবাদকে নির্মূল করাই এখন দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তবে কেবল বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব না বলেও জানান তিনি।  তিনি আরও বলেন, সুবিধার রাজনীতি করলে এ দেশের জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে না।

    দেশের সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আমীর-উল ইসলাম বলেন, কেবল বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে জঙ্গিবাদকে দেখলে ভুল হবে। তাদের উত্থানকে দেখতে হবে সমগ্র বিশ্বের আলোকে। বাংলাদেশে এ নিয়ে কোন ধরনের গবেষণা নেই।

    ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, জঙ্গিবাদের গ্লোবাল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে না জানলে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের ব্যপ্তির ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানা যাবে না। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী থাকলে জঙ্গিবাদের চাষ হবে, দাবি করে এই দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান শাহরিয়ার কবির।

    তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ইস্যুতে কেবল ব্লেইম গেইম দেয়া ঠিক হবে না। আল কায়েদা দমনের কথা বলে বিরোধী দল দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে এমন দাবি করে বরং আল  কায়েদাকে উৎসাহিত করা হবে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারোয়ার আলী বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয় সমগ্র উপমহাদেশে দুটি কারণে মূলত জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। প্রথমত নিরাপত্তাজনিত কারণ এবং তারপর মৌলিক ভাবাদর্শগত পার্থক্যের কারণ।

    বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি ভাবাদর্শের সংগ্রাম। এ অর্জনকে ধ্বংস করে দিতে এখন ইসলামের উগ্রবাদী ব্যাখ্যা তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ এখন নিরাপত্তা আর ভাবাদর্শ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে দাবি করে এ থেকে উত্তরণে সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবেলার আহ্বান জানান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারোয়ার আলী।

    সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছিল, তা ধ্বংস করে দিতে যুদ্ধে পরাজিতরা এখনো বসে নেই। দি ওয়ার ইজ নট ওভার। সাবেক সেনাপ্রধান কেএম সফিউল্লাহ বলেন, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটানো হয়।

    নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা যাবে না। কেবল স্থানিক কালিক আপতিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করলে এটি নির্মূল দুঃসাধ্য। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।