সুনামগঞ্জ সীমান্তে চোরাই চুনাপাথর আটক,অবশেষে মামলা

    0
    120

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩জুন,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃসুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্র নগর ও চারাগাঁও সীমান্ত এলাকা থেকে ২টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ চুনাপাথর আটক করা নিয়ে ঘটেছে লংঙ্গাকান্ড। নানা নাটকীয়তার পর চুনাপাথর বোঝাই ২টি ইঞ্জিনের নৌকা আটক করলেও পরবর্তীতে ২টি নৌকাই ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং ১৮টন চুনাপাথরের মধ্যে ৪ মেঃটন চুনাপাথর জব্দ দেখিয়ে গতকাল বুধবার রাত ৮টায় চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার দুলাল বাদী হয়ে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লামাকাটা গ্রামের কৃষক নজরুল মিয়াকে আসামী করে থানায় মামলা নং-১০ দায়ের করলেও এই ঘটনার মূলহুতা বিজিবি,পুলিশ ও স্থানীয় নেতাকর্মীসহ সংবাদকর্মীদের নাম ভাঙ্গিয়ে ৬শত টাকা চাঁদা উত্তোলনকারী একাধিক চাঁদাবাজি ও চোরাচালানসহ বিভিন্ন মামলার আসামী আজাদ মিয়া,আইনাল মিয়া,তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি বিজিবি।

    এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
    দায়েরকৃত মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,উপজেলার বীরেন্দ্র নগর ও চারাগাঁও দুই বিজিবি ক্যাম্প এলাকার শেষ সীমানায় অবস্থিত লামাকাটা-রন্দুছড়া নদী। গত মঙ্গলবার রাত ২টায় বিজিবি’র চোখে ফাঁকি দিয়ে চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি পূর্বপাড়া এলাকার দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর পাচাঁর করে লামাকাটা-রন্দুছাড়া নদীতে ৩টি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করছিল একাধিক চাঁদাবাজি,চোরাচালান ও প্রধানমন্ত্রী পোষ্টার পুরানোসহ মূতি ভাংচুর মামলার আসামী আজাদ মিয়া তার গুনধর শিষ্য আব্দুর রাজ্জাক,তাদের সহযোগী আইনাল মিয়া ও তোতা মিয়া গং।

    এই খবর পেয়ে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার দুলাল ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে ১৮টন চুনাপাথর বোঝাই ২টি ইঞ্জিনের নৌকা আটক করেন। এসময় অন্য ১টি চুনাপাথর বোঝাই ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে আজাদ মিয়া তার ৩ সহযোগীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই ঘটনার ১ঘন্টা পরে ৬টন চুনাপাথর বোঝাই আরো ১টি কাঠবড়ি ইি নের নৌকা ছেড়ে দিয়ে বাকি ১২টন চুনাপাথর বোঝাই ১টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা চাঁরাগাঁও ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিজিবি। কিন্তু পরদিন গতকাল বুধবার সকাল ৭টায় ১২টনের মধ্যে ৪টন চুনাপাথর জব্দ দেখিয়ে বাকি চুনাপাথরসহ অবশিস্ট নৌকাটিও রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
    এব্যাপারে কৃষক নজরুল মিয়া বলেন,আমি একজন সাধারন কৃষক,হালচাস করে কোন রকম জীবন পরিচালনা করি কিন্তু একাধিক চাঁদাবাজি,চোরাচালানীসহ প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার পুরানো ও মূর্তি ভাংচুর মামলার আসামী আজাদ মিয়া আমাকে তার নামে চাঁদা তুলতে বলেছিল,আমি রাজি হয়নি বলে সে তার লোকজনকে নিয়ে চুনাপাথর পাচাঁর করে বিজিবিকে দিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
    উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন,চুনাপাথর আটক করেছে একজনের আর মামলা দিয়েছে অন্যজনের নামে কিন্তু প্রকৃতি চোরাচালানী ও চাঁদাবাজ আব্দুর রাজ্জাক ও আইনাল মিয়াগংদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে নেয়নি বিজিবি।
    বালিয়াঘাট,বড়ছড়া,বাগলী,চারাগাঁও,চাঁনপুর ও লাউড়গড় সীমান্তের কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ী শাজাহান মিয়া,জমির আলী,রহমত আলী,আক্কাছ আলী,সালাম মিয়া,রাসেল আহমদ,জবান আলীসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন,ডিসি,এসপি ও ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়াসহ থানায় ও আদালতে একাধিক মামলা দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না আজাদ মিয়াগংদের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। তাদের অত্যাচারে এলাকার নিরীহ শ্রমিক,দিনমজুর ও বালি,পাথর,কয়লা,পাথর ব্যবসায়ীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।
    এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার দুলাল বলেন,এই বিষয়ে আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে ইচ্ছুক নই।
    বীরেন্দ্র নগর কোম্পানী কমান্ডার নায়েক সুবেদার বারেক বলেন,আমাদের উপরস্থ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।
    তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর চুনাপাথর আটকের ঘটনায় রাতে বিজিবি কর্তৃক থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টিসহ চোরাচালানী আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার পুরানো ও মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় থানায় পৃথক ২টি মামলাসহ আদালতে ও থানায় আরো একাধিক চাঁদাবাজি মামলা থাকার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।