সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে পরিবহণ ধর্মঘটে দূর্ভোগ

    0
    247

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৮মার্চ,জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃসুনামগঞ্জ-সিলেট আ লিক মহাসড়ক, দিরাই মদনপুর সড়ক ও সাচনাবাজার-সুনামগঞ্জ সড়কের খানা খন্দ আর রাস্তার চারপাশে মাটি ভরাটসহ পুর্ণ নির্মানের দাবীতে ধর্মঘট অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সুনামগঞ্জ জেলা বাস,অটোরিক্সা,সিএনজি মালিক সমিতি। কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় ধর্মঘট,মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দর প্রচেষ্টায় দিরাই বাস্টেন্ড থেকে শুরু করে প্রত্যেক মুড়ে গাড়ী চলা বন্ধ করতে অবস্থান নিয়েছিলেন সমিতির কর্মীরা।

    এ কারণে দিন ব্যাপী জনদূর্ভোগ দেখা দেয় দিরাই-সুনামগঞ্জ, সিলেট ও সাচনাবাজার-সুনামগঞ্জ সড়কে আগত যাত্রীদের। সকাল থেকে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌছতে না পাড়া ও সিলেট সুনামগঞ্জ থেকে বাড়ীতে না ফিরতে পারায় চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্ররা। এরমধ্যে দুপুর ১২টায় বাস মালিক সমিতির নেতারা সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের কার্যালয় ঘেরাও করেন। তবে কর্তৃপক্ষের আশ^াসের ভিত্তিতে ঘেরাও কর্মসূচী পরবর্তীতে প্রত্যাহার করা হয়।
    জানা যায়,সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের বেহাল অবস্থা দূর করার জন্য ২০১৬সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৮০কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্যাকেজের এই দরপত্রে ম্যানুয়েল ত্রুটি থাকায় দরপত্র স্থগিত করে পুনরায় সংশোধিত দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। ২০১৭সালে জানুয়ারি মাসে আবার মার্কিন সিস্টেমে দরপত্র আহ্বান করা হয়। অংশগ্রহণ করেন ৫জন ঠিকাদার। সর্বনি¤œ দরদাতা হয় জয়েন্টভে ারে তমা কন্সট্রাকসন ও সজিব রঞ্জন দাস। সওজ’র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই দরপত্রও বাতিল করা হয়। সওজ’র সিলেটের সুপারেন্টেড অফিস গত এপ্রিল মাসে তৃতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করে। এই দরপত্র গ্রহণের আগে পূবের সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদার সজিব রঞ্জন দাস বাদী হয়ে আদালতে রীট করেন। আদালত দরপত্র কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
    শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের উন্নয়নে আন্তরিক, ১৪ টি নতুন সেতু হয়েছে এই সড়কে। সড়ক প্রসস্তকরণের জন্য বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন কাজ হচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ সড়কেরও বেহাল অবস্থা। এই অবস্থায় যান চলাচল অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি আমরা।
    জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের মহাসচিব মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া জানান,এই রাস্তাগুলো প্রশস্ত না হওয়ায় জীবনের ঝুকি নিয়ে বাস মিনিবাসগুলো চলতে হয়েছে। তাই মূলত শুধু যানবাহনের দিক বিবেচনা করেই নয় বরং সাধারন যাত্রীদের জানামলের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই রাস্তাগুলো সংস্কারের দাবীতে এই আন্দোলনে নামা।
    এই রাস্তার ৮ কিমি দিরাই-শাল্লার এমপি সুরঞ্জিত সেন গুপ্তর সহধর্মীনী ড. জয়া সেনগুপ্তা’র নির্বাচনী এলাকা। অপর ১৬ কিমি সড়কে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান’র নির্বাচনী এলাকা। সরকারের এই দুই প্রভাবশালী এমপি ও প্রতিমন্ত্রী থাকা সত্বেও দিরাই-মদনপুর সড়কের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে বলে জানান এই সড়কের চলাচলের যাত্রীর। এ কারণেই হাওর পাড়ের লাখা-লাখ মানুষ চলাচলে ও ক্ষেত্রে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
    রাস্তার খানা খন্দের কারণে প্রতিনিয়ত দূর্ভোগের সাথে তুমুল যুদ্ধ করে ঢাকা-সিলেটসহ সুনামগঞ্জ যেতে হয় মানুষজনের। কুমল মতি শিক্ষার্থী ও গর্ভবতী মহিলাদের এক আতংকের নাম দিরাই-মদনপুর সড়ক। অনেকেই দিধাবোধ করেন এই সড়ক দিয়ে যাত্রা করতে। রাস্তার মাঝে-মাঝে গর্ত ও চার পাশে মাঠি বিহীন থাকায় প্রতিদিন ঘটছে অসংখ্য ছোট বড় দূর্ঘটনা। দিরাই-মদনপুর সড়কের বেহাল দশার কারনে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে আছেন যাত্রী সাধারণ।
    দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব আবুল কালাম বলেন, দিরাই-মদনপুর সড়কের কিছু অংশ ভালো কিছু অংশ ভাঙ্গা। অনেক স্থানেই রাস্তার পাশে মাচের চাষ করার জন্য রাস্তার মাঠি সড়ে রাস্তা দুর্বল হচ্ছে। বর্যায় এই রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে রাস্তা আরো ভাঙ্গবে। সংষ্কারের জন্য জেলার সমন্বয় সভায় বারবার বলা হচ্ছে আশা করি সংষ্কারের ব্যবস্থা হবে।
    এ ব্যাপারে সড়ক জনপথ বিভাগের সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম জানান,সাচনাবাজার-সুনামগঞ্জ সড়কে এক অংশে সংষ্কার কাজ চলমান অবস্থায় রয়েছে, বাকী অংশ টে-ার হয়েছে দুইটা মিলে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি আশা করি ১৫ দিনের মধ্যেই বাকী কাজ শুরু হবে। দিরাই-মদনপুর সড়কের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।