সুনামগঞ্জে স্কুল মেরামতের নামে টাকা লোটপাটের অভিযোগ

    0
    641

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩০নভেম্বর,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ১৬টি স্কুলের ক্ষুদ্র মেরামতের নামে ১৬লাখ টাকা সরকারী বরাদ্দ পায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। কিন্তু ঐ ১৬টি স্কুলের সবকটিতেই নাম মাত্র কাজ করে আর কোন কোন স্কুলে খুব বেশী হলে চুনকাম তাও নামমাত্র করেছে উপজেলা এলজিইডি ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাথে আতাত করে। কাজ না করেই সরকারী বরাদ্দের সব টাকা তুলে নিয়ে নিজের পকেটে ডুকিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক,স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিরা। এই অভিযোগ তুলেছেন ঐসব স্কুল গুলোর পাশে অবস্থানকারী স্থানীয় জনসাধারনের।

    শুধু এ বছরেই নয় প্রতি বছর কোন না কোন বরাদ্দ আসলেই দায় সারা ভাবে কাজ করেই সরকারের লাখ লাখ টাকা পুকুর চুরি করছে স্কুল কতৃপক্ষ। একাধিক সুত্রে আরো জানাযায়,২০১৭-১৮অর্থ বছরে বিভিন্ন স্কুলের মেরামত জন্য ১৬লাক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। স্কুলের মেরামত বা অন্য কোন কাজের প্রয়োজন হলে উপজেলা শিক্ষা অফিস কোন স্কুলে কোন কাজে কত টাকা লাগবে তার পরিমান তৈরী করে চাহিদা পাঠায়। পরে অনুমোদন আসলে এলজিইডি কতৃপক্ষ কে প্রাকলন করে দেওয়ার জন্য বলে। পরে এলজিইডি প্রাক্কলন করে কাজের যাচাই ও বাচাই করে কাজের শেষে কাজের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রত্যায়ন দেয়। এসব ক্ষেত্রে অনেক সময় চাপে পড়ে অনিয়ম কে নিয়ম করে যায়েজ করে সবাই মিলে। আর ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অর্থ বরাদ্দ হলেও যথা সময়ে কাজ না করেই কাজ করেছেন এমন সব কাগজ পত্র তৈরী করে সবাই বসে থাকেন জুলাই মাসের আশায়।

    জুলাই মাস আসলেই শতভাগ কাজ হয়েছে বলে সমুদয় বিল ভাইচার তৈরী করে জমা দেয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক,স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিরা। আর অফিস সহকারী ও শিক্ষা কর্মকর্তা মিলে তাদের ভাগের অংশ পেলেই কোন প্রকার যাচাই বাচাই না করেই প্রতিটি বিল ভাইচারে স্বাক্ষর করে দেন। তেমনি চলতি বছরের জুলাই মাসে তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান বদলী হয়ে চলে যান চাপাই নবাবগঞ্জ জেলা ভোলার হাট উপজেলায়। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিরা মিলে শতভাগ কাজ করেছেন বলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে কৌশলে বিল-ভাউচারে স্বাক্ষর করে সম্পূর্ন টাকা তুলে নিয়ে যান সবাই।

    বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখা যায়,দক্ষিনকুল,মেঞ্জারগাঁও,মাহমুদপুর,মানিকটিলা সহ একাধিক বিদ্যালয় ক্ষুদ্র মেরামতের কাজ হয় নি।

    চুনের সাথে পিরিটিন মিশিয়ে নামমাত্র ওয়াস করা হয়েছে। উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের তেলিগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বলেন,উত্তোলিত টাকা দিয়ে তিনি বিদ্যালয়ের সিড়িঁর কাজ করেছেন কিন্তু বিদ্যালয় এলাকার বাসীন্দা রঞ্জু পাল সহ একাধিক বাসিন্দা জানান,সিড়িঁটি আগেই ছিল পুরোনো সিড়িঁটি মেরামত করা হয়েছে তাও নাম মাত্র। বালিজুড়ী ইউনিয়নের দক্ষিনকুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুরশেদা বেগম জানান,বিদ্যুৎতের লাইনের কাজ ও চুনকাম করেছেন কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার আলম সহ একাধিক স্থানীয় লোকজন জানান,জানামতে চুনকাম করা হয়েছে কিন্তু ওয়ারিংয়ের কাজ হয় নি পূর্বেই করা ছিল। বাদাঘাট ইউনিয়নের ইউনুছপর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচম্যান্ট এলকার বাসীন্দা সাবেক ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলামসহ অনেকেই বলেন,বিদ্যালয় মেরামতের কোন কাজ হয় নি। চুনকাম হয়েছে তাও নাম মাত্র।

    একেই অবস্থা বিরাজ করছে উপজেলার উক্তিয়ারগাঁও,রসুলপুর,বাঁশতলা,চানঁপুর,লোহাজুড়ি,মধুয়ারচর,লক্ষীপুর,লাউড়েরগর,মাহমুদ পুর,পিরিজপুর,মেঞ্জারগাঁও ও মানিগাও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

    তাহিরপুর উপজেলার এলজিইডির সাব এসিসটেন্ড রেজাউল করিম বলেন,আমি যত গুলো বিদ্যালয়ের কাজের তদরকি করেছি সব গুলোই শত ভাগ কাজ হয়েছে। ১৬টি স্কুলের কাজের যাচাই করে বিল দিয়েছেন কি না এই বিষয়ে জানতে চাইলে তাহিরপুর উপজেলার সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন,কাজ হয়েছে না হয়েছে এটা আপনাদের বিষয় না এটা আমার বিষয়। কাজ না হলে কি কেউ টাকা দিবে। আপনি নিউজ করেন। পরে তিনি বলেন,বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বিল ভাউচার যখন জমা দেওয়া হয় তখন আমার বদলীর কাগজ চলে আসে। আমি ব্যাস্থ থাকায় ঐ সব কাজ গুলোর তদারকি করার সময় পাইনি। বর্তমান শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ফেরদৌস বলেন,এ গুলো দেখার দায়িত্ব আমার না। যিনি ঐসব বিল দিয়ে গেছে তার বিষয়। তাহিরপুর উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব বলেন,এই বিষয়ে খোজঁ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন,এমন দূর্নীতি হয়ে থাকলে খোজঁ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।