সুনামগঞ্জে সাড়ে ৭কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খননে ক্ষোভ

    0
    243

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সরকারের টাকা লুটপাটের মহোউৎবসের একটা অংশ হিসাবেই বৌলাই নদীতে খননের নামে অ্যাস্কেভেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। কারন নদীর তলদেশের প্রশস্ততা প্রায় ৩০০ফুট। খনন করা হচ্ছে ১০মিটার অর্থাৎ ৩০ফুট। আর যেখানে ড্রেজিং করা প্রয়োজন সেখানে অ্যাস্কেভেটর দিয়ে খনন করা মাটি নদীতেই মাটি ফেলা হচ্ছে। সামন্য বৃষ্টি হলেই বালু-মাটি আবার খননকৃত স্থানেই চলে যাবে এতে করে কোন উপকারেই আসবে না নৌ-যান চলাচলে। আর খননে নদী বা এলাকাবাসীর কোনো উপকার হবে না,বরং সাড়ে সাত কোটি টাকার অপচয় হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী যা রীতিমত হাস্যকর বিষয়ে পরিনত হয়েছে উপজেলা জুড়ে।
    গত ৯মার্চ থেকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বৌলাই নদীতে তিনটি অ্যাস্কেভেটর দিয়ে খনন কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার। আর নদীর বুকের নীচে থেকে ওঠানো বালি-মাটি থাকছে নদীর বুকেই। একাজে স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দিলেও কোন কাজে আসছে না। ফলে জনমনে চরম ক্ষোব জন্ম নিয়েছে।

    পানি উন্নয়ন র্বোড সুত্রে জানাযায়,তাহিরপুর থানার সম্মুখ থেকে সোলাইমানপুর বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার নদী খননের জন্য ৭কোটি ৩২লাখ ৬৩হাজার টাকা ব্যায়ে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায় আলম খান নামে এক ঠিকাদার।

    জানা যায়,উপজেলার থানা সামনে(পশ্চিম দিকে)এই খনন কাজ শুরু থেকেই খননে নদীর মাঝ থেকে মাটি কেটে নদীর পাশেই ফেলা হচ্ছে। থানার সম্মুখ থেকে সোলাইমানপুর বাজার পর্যন্ত ৬কিলোমিটার বর্ষায় নৌযান চলাচল করতে পারলেও নদীর নাব্যতা সংকটের কারনে কোন ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারে না শুষ্ক মৌসুমে। ফলে ভৈরব,কিশোরগঞ্জ,মোহনগঞ্জ,সুনামগঞ্জ থেকে বিভিন্ন মালামাল ও টাংগুয়ার হাওরে নৌ-পথে পর্যটকদের পরিবহন সম্ভব না হওয়ায় সড়ক পথে খরছের পরিমান বেশী হওয়ায় ব্যবসা বানিজ্যে ক্ষতির শিকার হওয়ায় পাশা পাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

    পর্যটক ও ব্যবসায়ীসহ সর্বস্থরের জনসাধানের সুবিধার্ত্বে নদীর নাব্যতা সংকট দুর করার জন্য ড্রেজার দিয়ে বর্ষায় নদী খননের কথা থাকলেও ঐ ঠিকাদার এখন অ্যাস্কেভেটর দিয়েই নদী খনন কাজ শুরু করেছেন।

    সাজিদ মিয়া,রফিক মিয়াসহ স্থানীয় এলাকাবাসী জানান,বৌলাই নদীতে এখন ড্রেজারের পরির্বতে অ্যাস্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করছে। নদীর বুক থেকে মাটি খনন করে সেই মাটি আবার নদীর পাশে ফেলে রাখছে। এতে করে সামান্য বৃষ্টি হলে সেই মাটি আবার খনন করা জায়গায় চলে যাবে। এখন এই খনন কাজে যে টাকা খরচ হবে তা সরকারের ক্ষতি। পানি বাড়লে ড্রেজার দিয়ে খনন কাজ করা যুক্তি সংগত হত।

    এবিষয়ে অ্যাস্কেভেটরের মালিক আলীম উদ্দিন জানান,ভাই আমাকে ঐ কন্ট্রাক্টার শুধু বলেছে নদীর বুক থেকে কিছু গভীর করে মাটি তুলে নদীর পাশে রাখার জন্য। আমি আমার লোকদিয়ে সেই কাজটি করছি। এর বেশী কিছু আমি জানি না। দৈনিক তিনটি মেশিন দিয়ে কাজ করছি। আমাকে না করলে আমি কাজ বন্ধ করে দিব।

    ঠিকাদার আলম খান বলেন,আমার সঙ্গে কথা না বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন কারন আমি যে ভাবে কাজ পেয়েছি সে ভাবেই কাজ করছি।

    সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাজ্জাদ আহমদ বলেন,নদী খনন ১০মিটার খনন কম হওয়ায় বিবেচনা করে আবারও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকের নিকট নতুন প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে ২০মিটার অর্থাৎ ৬০ফুট খনন করার জন্য। এখনো এই প্রস্তাবনা অনুমোদিত হয় নি।

    সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান বলেন,পরিকল্পিতভাবেই নদী খনন করা হবে। এই কাজ কেবল শুরু হয়েছে। নদী ২০মিটারই খনন হবে। মাটিও নদী থেকে সরিয়ে ফেলা হবে। কাজ কেবল শুরু হয়েছে। সময় গেলেই সকলে বুঝতে পারবেন কী হচ্ছে না হচ্ছে।

    এবিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন,নদীর গভীরতা বেশী না হলে নদী খনন কোন কাজেই হবে না। আর নদীতে অ্যাস্কেভেটর দিয়ে কাটা মাটি নদীতে না রেখে সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।