সুনামগঞ্জে নদীর বুকে ফসল,দখল মুক্ত করে খনন জরুরী

    0
    274

    জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া,তাহিরপুর,সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার এক সময়ের যৌবনবতী ভাঙ্গার খাল নদীতে চড় জেগেছে। নৌ যান চলাচল বন্ধ হয়ে এখন মরা নদীতে পরিনত হয়েছে। এক সময় এ নদীতে ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল করলেও গত দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে একবারেই বন্ধ রয়েছে। নদীর বুক দিয়ে পায়ে হেঠেই চলাচল করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। আর নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে চর জেগেছে। সেই অংশে এখন ধানের চাষ করেছে স্থানীয় লোকজন। ফলে নাব্যতা হারিয়ে এই নদী এখন শুধুই ইতিহাস।

    জানা যায়,উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটি ভাঙ্গারখাল। এই নদীটি উত্তর বড়দল ইউনিয়নকে আলাদা করেছে। এই নদী দিয়ে দক্ষিন দিকে তাহিরপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হত। তবে বর্তমানে শুধু বর্ষায় সময় নৌকা চলাচল করলেও শুষ্ক মৌসুমে একবারেই বন্ধ। আর উত্তর দিকে এই নদীটি প্রবাহিত হয়ে যাদুকাটা নদীতে মিলিত হত। যাদুকাটা নদী দিয়ে পাশ্ববতি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলারসহ জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ সহজ ছিল। কিন্তু কালের আর্বতে এই নদী মুখ (বর্তমানে শিমুল বাগান সংলগ্ন) এখন পলি পরে নদীর বুক বরাট হয়ে যাওয়ায় নদী খনন না করায় শুষ্ক আর বর্ষা মৌসুমে হউক নৌযান চলাচল একবারেই বন্ধ। ফলে নদী পথে কম খরচে উপজেলার ব্যবসা বানিজ্যের প্রান কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারে ভৈরব,কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানের মালামাল এখানকার ব্যবসায়ীরা আনতে চাইলে নদী পথে আনা সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়ে সড়ক পথে মালামাল আনার কারনে খরচের পরিমান বেড়ে যায়। এলাকাবাসীর দাবী দ্রুত এই নদীর বুকের ফসলের মাঠ দখল মুক্ত করে খনন করা জরুরী।

    এক সময় এই নদী পথে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা থেকে যাদুকাটা নদী হয়ে বাদাঘাট বাজারে আসা সুহেল আমহদ সাজু জানায়,ছোট বেলায় আমি আমার বাবার সাথে ছোট নৌকা দিয়ে বাদাঘাট বাজারে আসতে হলে সড়ক পথের কোন ব্যবস্থা না থাকায় নৌকাই ছিল একমাত্র ভরসা। ফলে নৌকা দিয়ে যাদুকাটা নদী দিয়ে বর্তমান শিমুল বাগানের সামনে দিয়ে বাদাঘাট বাজারে আসতাম। এখন এই নদী পথ একবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।
    স্থানীয় বাসীন্দা শফিক মিয়া জানান,নদী খনন না করায় নদীটি মরা নদীতে পরিনত হয়েছে। অনেকেই নদীর ভুকে চড় জাগায় ধানের জমি ও বিভিন্ন ফসল চাষ করছে। নদীটি খনন করলে সবাই উপকৃত হবে।
    সমাজ সেবক,বাদাঘাট বাজার বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মাসুক মিয়া জানান,এই নদী পূর্বে নদী পথের নৌযান চলাচল জমজমাট ছিল। খরছের পরিমান ছিল কম। কিন্তু সড়ক পথে খরচের পরিমান অনেক বেশী। কিন্তু দিন দিন নদী ভরাট হওয়ায় কারনে নদীর বুকে চড় জেগেছে। ফলে বাদাঘাট বাজারসহ অন্যান্য বাজারের ব্যবসায়ীরা নৌ-পথে কোন ধরনের মালামাল পরিবহন করতে পারছে না। নদী খনন করা খুবেই প্রয়োজন।
    তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান,নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় খনন করা খুবই প্রয়োজন। খনন করা না হলে নৌ পথের সুফল ভোগ করতে পারবে না ব্যবসায়ীসহ সর্বস্থরের জনসাধারন। আমি ও উপজেলা পরিষদের পক্ষে থেকে এই বিষয়ে সর্বাতœক চেষ্টা করব।