সুনামগঞ্জে ইয়াবাসহ সোর্স গ্রেফতার:গডফাদার ধরাছোয়ার বাইরে

    0
    219

    নিজস্ব প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে ইয়াবাসহ একাধিক মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী সোর্স কালাম মিয়া (৪৫) কে গ্রেফতার করেছে বিজিবি। শুক্রবার সকাল ১০টায় মাদক মামলা নং-১ দায়ের করে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কালাম মিয়ার গডফাদারসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকার পরও গ্রেফতার না করার কারণে সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা, মদ ও কয়লা চোরাচালানসহ চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

    এব্যাপারে বিজিবি ও এলাকাবাসী জানায়,জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট গ্রামের রাশিদ মিয়ার ছেলে কয়লা ও মাদক মামলা নং-১৫৮/০৭এর আসামী ও চোরাচালানীদের গডফাদার আব্দুর রাজ্জাক তার শিস্য মাদক ব্যবসায়ী কালাম মিয়াকে ইয়াবার চালান দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর সীমান্তে পাঠায়। পরে কালাম মিয়া তার সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান জিয়া,জানু মিয়া,বাবুল মিয়া,আব্দুল আলী ভান্ডারী,হযরত আলী,ল্যাংড়া বাবুলসহ ফিরোজ মিয়া ও কামাল মিয়াকে ডেকে এনে সীমান্তের লালঘাট গ্রামের রাস্তার পাশে ইয়াবা ভাগভাটোয়ারা করার সময় খবর পেয়ে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার হুমায়ুন অভিযান চালিয়ে ২০পিছ ইয়াবাসহ সোর্স কালাম মিয়াকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেন।

    এসময় বাকি ইয়াবা নিয়ে অন্যরা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে আরো জানা যায়,সোর্সদের মধ্যে দুধেরআউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা নং-১৬৩/০৭,লালঘাট গ্রামের জানু মিয়ার বিরুদ্ধে কয়লা পাচাঁর মামলা নং-২০১/১৫,লাকমা গ্রামের বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে কয়লা পাচাঁর মামলা নং-১০৩/১৭,লালঘাট গ্রামের আব্দুল আলী ভান্ডারীর বিরুদ্ধে বিজিবির ওপর হামলার মামলা নং-১০৭/১৪ ও লাকমা গ্রামের ইয়াবা ব্যবসায়ী ল্যাংড়া বাবুল,রজনীলাইন গ্রামের ফিরোজ মিয়া ও বড়ছড়া গ্রামের কামাল মিয়ার বিরুদ্ধে ইয়াবা,মদ, কয়লা,অস্ত্র পাচাঁর ও চাঁদাবাজির মামলাসহ গ্রেফতার হওয়া সোর্স কালাম মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা নং-২১৫/১৪,হুন্ডি মামলা নং-২১৭/১৪,মাদক পাচাঁর মামলা নং-১৩৫/১৬ইং ও নারী পাচাঁরসহ আরো একাধিক মামলা রয়েছে। আর গডফাদার আব্দুর রাজ্জাক ও তার ৩ ভাইয়ের চোরাই কয়লা ও মাদক বোঝাই ইঞ্জিনের নৌকা বিজিবি আটক করে মামলা নং-১৫৮/০৭সহ মোট ৩টি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে ১টি মামলা হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।

    এছাড়াও এলাকায় জুয়ার বোর্ড বসিয়ে বিজিবির নামে চাঁদা তুলার সময় রাজ্জাককে হাতেনাতে গ্রেফতার করে বিজিবি। তারপরও আব্দুর রাজ্জাক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে উপরের উল্লেখিত মামলার আসামীদেরকে বাঁশতলা,লালঘাট, লাকমা ও বড়ছড়া, বুরুঙ্গাছড়া,রজনীলাইন সীমান্ত এলাকায় সোর্স নিয়োগ করে প্রতিরাতে হাজারহাজার মেঃটন কয়লা ও পাথরের সাথে মদ,গাঁজা,হেরুইন,ইয়াবা ও অস্ত্র পাচাঁর করার পর বিজিবি,পুলিশ,র‌্যাব ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে অবৈধ মালামাল থেকে লক্ষলক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করছে। আর সেই অবৈধ টাকা দিয়ে আব্দুর রাজ্জাক ও তার সোর্সরা নিজ বাড়িতে ও বিভিন্ন হাট-বাজারে একাধিক পাকা দালান-কোটা ও দোকানপাট নির্মান করাসহ ক্রয় করেছে দামী গাড়ি,শতশত একর জমি ও ব্যাংক একাউন্ট।

    এব্যাপারে বড়ছড়া ও চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশনে ব্যবসায়ী আমির হোসেন,জমির আলী,লাল মিয়া,খাইরুল ইসলাম, সাজিদুর রহমান,আব্দুর রহমান,রাশেদুল ইসলামসহ আরো অনেকেই বলেন,চিহ্নিত চোরাচালানী ও চাঁদাবাজ আব্দুর রাজ্জাক ও তার সোর্সদের শীগ্রই গ্রেফতার করে তাদের অবৈধ সম্পত্তি ও মালামাল সরকারি হেফাজতে নিয়ে সীমান্ত এলাকাকে মাদক ও চোরাচালান মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি। সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম বলেন,সীমান্ত চোরাচালানীদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।