সুনামগঞ্জের পান্ডারখালে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর নির্মাণকাজ সমাপ্ত

    0
    301
    সুনামগঞ্জের পান্ডারখালে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর নির্মাণকাজ সমাপ্ত
    সুনামগঞ্জের পান্ডারখালে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর নির্মাণকাজ সমাপ্ত

    সুনামগঞ্জ, ০৭ মে : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নবাসীর বহু প্রতিক্ষীত ও প্রত্যাশিত স্বপ্নের সেতুটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এ সেতুটি নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাত কোটি টাকা। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ‘ইহগুন’ নামে এলাকাবাসী ও যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের যৌথ উদ্যোগে পান্ডারখালে ভাসমান সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইদ্রিস সিদ্দীকি। তখনকার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতুর নকশা ও অভিনব পদ্ধতি দেখে মুগ্ধ হয়ে এলাকাবাসীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং পান্ডারখালে একটি নতুন সেতু নির্মাণে আন্তরিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ড্রাম নির্মিত ভাসমান সেই সেতুটির সংবাদ তখন ইলেক্টনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার বদৌলতে দেশ বিদেশের মানুষ জানতে পারে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের শেষের দিকে তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেই স্থানেই একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় চার কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে গ্রহণ করে। কিন্তু সেতু নির্মাণে পর্যাপ্ত টাকা না হয়াতে যথাসময়ে কাজ শুরু হয়নি।
    পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের প্রচেষ্টায় আরও তিন কোটি টাকা বর্ধিত করেন এবং ২০০৯-১০ অর্থ বছরে প্রকল্পটির মোট ব্যয় সাপেক্ষে ঠিকাদার আহ্বান করা হয়। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে এই সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর তিনি স্থাপন করেন। ১৪৭ দশমিক ১৫  মিটার দৈর্ঘ্য এই সেতুটির কাজ সমাপ্ত হয়াতে এলাকাবাসী আনন্দে উদ্বেলিত।
    এলাকাবাসী মনে করেন, এরই মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরণ হলো। তারা আশা করেন সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাস্তাটিও পুরোপুরি পাকা হলে জেলা শহরের সাথে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অর্ধেক সময় কমে আসবে। উল্লেখ্য যে, ভাসমান সেতুর নির্মাণের আগে ইউনিয়নের হরিপদনগর, ঘোপীনগর, নতুন নগর, ইসলামগরসহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের স্থানীয় শ্রীপুর বাজারে আসতে নদী পারাপারের একমাত্র সম্বল ছিল হাত চালিত খেয়া নৌকা। তখন নৌকাডুবিতে বিভিন্ন সময়ে লোকজনের মৃত্যু হত। শুধু খেয়া নৌকার সময়ই নয়, ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে ভাসমান সেতু উল্টে আরও একজন মারা গিয়েছিলেন।
    এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নামমাত্র ইজারা দিয়ে তাদের এই খেয়াঘাটটি পরিচালনা করা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে যখন বিভিন্ন দ্বন্দ্বে খেয়াঘাটটির ইজারা মূল্য দাঁড়ায় ৫০ হাজার তখনই এলাকাবাসী এই ভাসমান সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করেন এবং তারা সফলও হন। ভাসমান সেতু নির্মাণ ও পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় অনেকের মধ্যে একজন ছিলেন হাফিজ আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা অবহেলিত এলাকায় বাস করি এবং দীর্ঘদিন যাবত খেয়া নৌকায় নদী পার হতে হতো। এই সব বিষয় চিন্তা করেই ভাসমান সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেই। এ বিষয়ে আরেকজনের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি হলেন সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম শফিকুল হক। সেতুটি উদ্বোধনের ব্যাপারে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুর রহমান বলেন, আমরা এলাকাবাসী এখন জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তাটি সমাপ্ত দেখতে চাই। যুবলীগ নেতা আলী আকবর বলেন, সেতুটির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে এমপি সাহেব আবার বরাদ্দ দিয়ে কাজ সমাপ্ত করেছেন তাই তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এখন আমাদের আরেকটি দাবি সেতুর সঙ্গে জেলা শহরের যে রাস্তা সেটি শীঘ্রই পাকাকরণের কাজ শুরু হোক। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে সেতুটি উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে।
    স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক জানান, এই সেতুটির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি জোর দাবি জানিয়ে আরও তিন কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করি। সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত  রাস্তাটির কাজ সমাপ্ত হলে ব্রিজটি উদ্বোধন করা হবে।

    কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের নির্বাচনে আগ্রহীরা প্রার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

    সুনামগঞ্জ, ০৭ মে : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর কয়লা আমদানি কারক গ্রুপের নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র কিনতে না পারায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।
    গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের নির্ধারিত তারিখ থাকলেও সমিতির নির্বাচন কমিশনারের অফিস বন্ধ ছিল। আজ মঙ্গলবার মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ দিন থাকলেও শতাধিক ব্যবসায়ী মনোনয়ন ফরম কিনতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে নেতারা বিকালে সংবাদ সম্মেলন করেন। সম্মেলনে নেতারা বলেছেন, সমিতিকে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা মুষ্টিগত করে রাখার জন্য এবং অনিয়ম ও লুটপাট করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বি কাউকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে দেয়নি। এক তরফা নির্বাচন দেখিয়ে ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চায় তারা। তাহিরপুর কয়লা আমদানি কারক গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৪২৬ জন। আগামী ২৮ মে ২১ টি পরিচালক পদে গ্রুপের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন হয়ার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, এই কয়লা আমদানি গ্রুপের মাধ্যমে সরকারকে প্রতিবছর ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব দেয়া হয়ে থাকে।
    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের নেতা জুনাব আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আসম খালেদ, মুস্তাক খন্দকার, আলী হায়দার, বোরহান উদ্দিন, গণি মিয়া, আবুল কালাম, আব্দুস ছালাম, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুবুল হক প্রমুখ।

    জগন্নাথপুর, শাল্লা ও তাহিরপুরে বজ্রপাতে নিহত ৩ : আহত ৬

    সুনামগঞ্জ, ০৭ মে : গতকাল সোমবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, শাল্লা ও তাহিরপুরে বজ্রপাতে তিন জন নিহত ও ছয় জন আহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ১০টায় তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে একটি হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে প্রদীপ (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়। সকাল পৌনে ১১টায় জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গোরারগাঁও হাওরে ধান কাটার সময় ফরিদ মিয়া (৪২) নামে এক ব্যক্তি নিহত ও আরো দুই জন আহত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় জেলার শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল হাওরে ধান কাটার সময় লিটন মিয়া (২২) নামে আরেক জন নিহত ও চারজন আহত হয়। জগন্নাথপুর ও শাল্লায় আহত হয় ছয় জন।