সিলেটে রায়হান হত্যা,দ্বিতীয় দফা তদন্তেও গুরুতর আঘাতেই মৃত্যু

    0
    239

    সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তেও গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে রিপোর্ট হস্তান্তর করেছে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ।

    রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের কারণেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক মুহিদুল ইসলাম বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

    গত ১৫ অক্টোবর আখালিয়া এলাকার পঞ্চায়েতি গোরস্তান থেকে রায়হানের লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রথম দফা ময়নাতদন্তে রায়হানের শরীরে ১১টি আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম।

    বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রসঙ্গে ডা. শামসুল জানান, রায়হানের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে যা আগের রিপোর্টেও বলা হয়েছে। তিনি জানান, রায়হানের প্রথম দফা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা রিপোর্টের সামঞ্জস্য রয়েছে।

    ১১ অক্টোবর রাতে আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে আটক করে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হলে তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এসআই আকবর ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। বুধবার তথ্য গোপন ও এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা করায় ফাঁড়ির সেকেন্ডম্যান এসআই হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পিবিআই।

    আকবরকে গ্রেপ্তারে রায়হানের পরিবারের বেঁধে দেওয়া তিন দিনের সময়সূচি শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার রাতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির প্রথম দিন বৃহস্পতিবার রায়হানের পরিবার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়। এ ছাড়া আগামীকাল শুক্রবার বাদজুমা মসজিদে রায়হানের জন্য দোয়া মাহফিল ও শনিবার বিকেল ৪টায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মদিনা মার্কেট পয়েন্টে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

    বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আকবর কীভাবে কার সাহায্যে পুলিশ লাইন্স থেকে পালিয়ে গেছেন, তা অনুসন্ধানের লক্ষ্যে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের গঠিত টিম তদন্ত প্রতিবেদন দেবে আগামী সোমবার। কমিটির প্রধান পুলিশের এআইজি (ক্রাইম অ্যানালাইসিস) মোহাম্মদ আইয়ুব সিলেটে অবস্থান করে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করেন।