সিলেটে বলৎকারের চেষ্টায়ঃমামলার আসামী ২৫০০

    0
    229

    আমারসিলেট 24ডটকম,১১অক্টোবর,কানাইঘাট প্রতিনিধিকানাইঘাট বাজারে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে দোকানপাট ভাঙ্গচুর ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আড়াই হাজার জনের বিরুদ্ধে এ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার রাতে কানাইঘাট বাজারে দুর্লভপুর ও নন্দিরাই গ্রামের লোকজনদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে দোকানপাট ভাঙ্গচুর ও পুলিশের কাজে বাঁধা প্রদান এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কানাইঘাট থানা পুলিশ বাদী হয়ে এ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেছে। থানার এসআই মোহাম্মদ মুশাররফ হোসেন বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্লভপুর ও নন্দিরাই গ্রামসহ আশপাশের ১৩জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ২০০০/২৫০০ লোকজনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং-০৫, তাং-১০/১০/১৩  ।

    এ দিকে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে নন্দিরাই গ্রামের মৃত ফকির আলীর ছেলে ছবির আহমদ (২০) এবং নয়াখলা গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক জালাল আহমদ জনিকে  আটক করে এ্যাসল্ট মামলার আসামী দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে। এ দুজনকে গ্রেফতার করায় নন্দিরাই এলাকার লোকজনদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবী পুলিশ এক পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য নিরপরাধ জলাল আহমদ জনি ও ছবির আহমদকে গ্রেফতার করলেও অপর পক্ষ দুর্লভপুর গ্রামের লোকজনদের শেল্টার দিচ্ছে। ঘটনার মূলহোতা এ্যাসল্ট মামলার প্রধান আসামী দুর্লভপুর গ্রামের রহমত আলী প্রকাশ্যে বাজারে মহড়া দিলেও তাকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না বলে নন্দিরাই গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন।

    তবে পুলিশের দাবী তারা ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে মামলা করেছে। অযথা কাউকে হয়রানী করা হচ্ছে না। প্রসঙ্গত যে, গত বুধবার রাত ৮টার দিকে দুর্লভপুর গ্রামের রহমত আলী কানাইঘাট বাজারের নন্দিরাই গ্রামের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের দোকানের কর্মচারী শিহাব উদ্দিন (২২) কে সুরমা নদীর কামারপট্টিতে পেয়ে বলৎকারের চেষ্টা করে। এ নিয়ে দুর্লভপুর ও নন্দিরাই গ্রামের লোকজনদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে  পড়ে। এক পর্যায়ে দুর্লভপুর গ্রামের লোকজন গ্রামে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজনদের জড়ো করে বাজারে এসে নন্দিরাই গ্রামের বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে। এ খবর নন্দিরাই গ্রামের লোকজনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারাও মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাজারে এসে দুর্লভপুর গ্রামের লোকজনের বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা করে ক্ষতি সাধন করে।

    কানাইঘাট বাজারে ঐদিন রাত ১২টা পর্যন্ত উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় দোকানপাটে হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা পুলিশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সোহরাব হোসেনের উপস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক দফায় ২৬৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ১২ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বড়ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে বাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে বাজারের ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল জানিয়েছেন, বুধবারের ঘটনায় বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দ দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রথমে পালন করলে এ ধরণের নারকীয় তান্ডব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংগঠিত হতো না।

    পুলিশ উভয় গ্রামের হাজার হাজার লোকজনদের ছত্রভঙ্গ না করলে বাজারের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতো এবং অংসখ্য দোকানপাট ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটত। ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও গ্রাম ভিত্তিক মারামারির ঘটনা নিয়ে কানাইঘাট বাজারের ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানে ইতিপূর্বে কয়েকবার হামলা ও ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সাথে চিহ্নিতদের রাজনৈতিকভাবে শেল্টার দেওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের দোকানপাটে বার বার হামলা করা হচ্ছে।