সিলেটের সর্ববৃহৎ ম্যুরাল অমিয় ভাষণ-স্বাধীনতা জৈন্তিয়ায়

    0
    287

    আমারসিলেট  টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৩জুন,রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর প্রতিনিধি: নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় এজেলার সবচেয়ে বৃহৎ ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে। “অমিয় ভাষণ-স্বাধীনতা” নামের এই ম্যুরালটি গত ৩১ মে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ।

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের উল্লাসের চিত্র নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের বাহিরের একটি দেয়ালে ম্যুরালটি নির্মাণ করা হয়েছে। ১৮ফুট উচ্চতা ও ১৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট দেয়াল চিত্রের নীচে ভূমি সমান্তরালে তৈরী করা হয়েছে একটি স্তম্ভ লাগানো হয়েছে ফুলের গাছ। এর নির্মাণ শৈলী ও অন্তর্নিহিত ভাব মিলে চেতনা উদ্রেকের পাশাপাশি সৌন্দর্য্য অবলোকনের একটি স্থান হয়েছে। ম্যুরালের সামনে অদূরে গাছের নীচে তৈরী করা হয়েছে একটি বেঞ্চ। যেখানে বসে যে কেউ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবে।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরীন করিমের পরিকল্পনায় ও উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে নির্মিত ম্যুরালটি সিলেট জেলার সর্ববৃহৎ ম্যুরাল বলে জানা যায়। উদ্বোধনের পর হতে প্রতিদিন দর্শনার্থী এই ম্যুরালটি দেখতে আসছেন। তরুণ, বৃদ্ধ সকলেই ম্যুরালের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছেন।

    ম্যুরালটি নির্মাণের উদ্দেশ্য জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরীন করিমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান জাতির পিতা শেখ মুজিব হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। তাঁর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দিক নির্দেশনা ও প্রেরণা। আর স্বাধীনতা হচ্ছে বাঙ্গালী জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই বিষয় গুলোকে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই ম্যুরালটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছি। তিনি আর বলেন জৈন্তাপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরার জন্য ভাষ্কর্য্য কিংবা ম্যুরাল নেই সেই দায় বদ্ধতা হতে এই ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে।

    ম্যুরালটি উদ্বোধনের পর জৈন্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার সিরাজুল হক তা দেখতে এসেছিলেন। তিনি জানান জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণের আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। তাঁর এই চিত্রটি তুলে ধরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মের এই অফিসার ইতোমধ্যে জৈন্তাপুরের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ব্যতিক্রমধর্মী সম্মাননা দিয়েছেন। এবার এই ম্যুরালটি নির্মাণ করে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধ কে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরলেন। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সাথে তিনি প্রতিবেদকে আরও জানান আমরা আর বেশি দিন বেঁচে থাকব না, চলে যাব না ফেরার দেশ। আমার অনেক সহ যোদ্ধারাও পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে৷ বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলায় স্বাধীনতা বিরুদীদের প্রজন্মরা মাথা ছাড়া দিচ্ছে। সুযোগে তারা আওয়ামীলীগে ঢুকে পড়েছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রনে সব কিছু নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের দাবী নতুন প্রজন্মের কাছে উপজেলার স্বাধীনতা বিরুদী আল-বদর, রাজাকার, আল-সামস ও শান্তি কমিটির সদস্যদের পরিবারের পরিচয় তুলে ধরা অত্যান্ত জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে নতুন প্রজন্মরাও জানতে পারবে এ উপজেলায় আমাদের স্বাধীনতা বিরুধী কারা৷ তিনি সরকারে উচ্চ মহলের কাছে বিষয়টি নজরে আমার আহবান জানান।

    ম্যুরালের সামনে ছবি তুলতে আসা নতুন প্রজন্মের এক প্রতিনিধি জৈন্তিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেনির ছাত্র প্রণব দাস, জৈন্তাপুর তৈয়ব আলী ডিগ্রী কলেজের ছাত্র আফজল হোসেন শাহীন বলেন- আমরা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ইতিহাস পড়েছি, এই চিত্রটির সামনে দাড়িয়ে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এটা দেখলে মনের মধ্যে একটি চেতনা জাগ্রত হয়। ধন্যবাদ জানাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরীন করিমকে।