সারা বাংলার ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের জোয়ার : আজ ঈদ

    0
    245

     

    ও ………..মন….. রমজানেরই …….রোজার… শেষে …….এলো ……..খুশির ………ঈদ

    ঢাকা, ০৯ আগস্ট : দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর আজ শুক্রবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। ফলে সারা বাংলার ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের জোয়ার। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে আজকের ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে অবস্থিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি এডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া। এ ঘোষণার পর পরই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, রাজপথ ও অলিগলিতে জ্বলে উঠে রং বেরংয়ের আলোর ফোয়ারা। সবার মন গেয়ে উঠে- ও মন রমজানেরই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ…!
    জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যদিয়ে সারাদেশে মুসলমানরা তাদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ইতোমধ্যেই ঈদের জামাতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায় সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আর আবহাওয়া খারাপ থাকলে একই সময়ে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রধান জামাত ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব প্রফেসর মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।
    জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পর পর মোট ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের প্রধান জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব ও পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারি বজায় রাখবে। সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা তৎপর থাকবেন। এছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মহানগরীর ৯০টি ওয়ার্ডে মোট ৩৬১টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে এবং জাতীয় সংসদ ভবনে দক্ষিণ প্লাজায় আরো দুটি পৃথক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পক্ষান্তরে প্রতি বছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সেখানেও ঈদের জামাতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
    পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে তিনদিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঈদের দিন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
    বনানীর ঢাকা গেট থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত প্রধান সড়ক এবং সড়ক দ্বীপসমূহে জাতীয় পতাকা এবং বাংলা ও আরবিতে ঈদ মোবারক লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন-সজ্জিত করা হবে। এছাড়া ঈদের দিন দিবাগত রাতে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনসমূহে আলোকসজ্জা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো ঈদের দিন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে।
    ঈদ উপলক্ষে আজ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রীয় নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সব শিশুপার্কে প্রবেশ, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকছে।
    বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় কর্মসূচি ও নিজ নিজ কর্মসূচির আলোকে ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। তাছাড়া বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে যথাযথ মর্যাদায় সরকারি কর্মসূচির আলোকে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদ উপলক্ষে মুসল্লীদের নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।