সাভারের ধসে পড়া ভবনের মালিক সোহেল রানা বেনাপোলে গ্রেপ্তার

    0
    408

    ঢাকা, ২৮ এপ্রিল : ভারতে পালানোর সময় সাভারে ধসে পড়া ভবন রান প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রবিবার র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র‌্যাব-৬) যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ রবিবার দুপুরের পর পরই বেনাপোল সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোয়া তিনটার দিকে সাভারে ভবনধসের উদ্ধার তৎপরতার কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাইকে ঘটনার তদারকির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এ ঘোষণা দেন।

    সাভারের ধসে পড়া ভবনের মালিক সোহেল রানা বেনাপোলে গ্রেপ্তার
    সাভারের ধসে পড়া ভবনের মালিক সোহেল রানা বেনাপোলে গ্রেপ্তার

    প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তারের দাবি ছিল জনগণের, প্রধানমন্ত্রীও তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সোহেল রানা দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। দেশ ছেড়ে পালানোর সময় তাকে পাঁচ মিনিট আগে বেনাপোল সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
    গত বুধবার সাভার বাজার সংলগ্ন রানা প্লাজা ধসের পর রাজউক এবং পুলিশ বাদী হয়ে আলাদা দুটি মামলা দায়ের করে। দু মামলায় ভবন মালিক যুবলীগ নেতা সোহেল রানা মূল আসামি। বহুতল ওই ভবনে যে পাঁচটি কারখানা ছিল, তার বাকি তিনটির মালিককেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। ওই ভবন ধসে নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০০ তে পৌঁছেছে। ওই ভবনটি নির্মাণে আইন অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েন। পুলিশ তাকে আটক করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চালিয়েছে।
    এর আগে একই ঘটনায় গতকাল রবিবার সোহেল রানার স্ত্রী মিতু, তাদরে তিন আত্মীয় এবং সাভার পৌরসভার দুই প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায় রানার সন্ধান জানার জন্য তার স্ত্রী মিতুসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটক হওয়া অন্য তিনজন হলেন রানার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী মুন্নি এবং মুন্নির আত্মীয় আনোয়ার। জাহাঙ্গীর দম্পতির সঙ্গে তাদের তিন মাসের শিশুপুত্রও রয়েছে। সাভার থানার পুলিশ চারজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
    পক্ষান্তরে একই ঘটনায় আটক পৌরসভার দু প্রকৌশলী এবং ভবনের দুই গার্মেন্টসের মালিকদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সাভার পৌরসভার দুই প্রকৌশলীকে দুই মামলায় চার দিন করে আট দিন রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। দুই গার্মেন্টস মালিককেও একই মামলায় ছয় দিন করে ১২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তারা হলেন- নিউ ওয়েভ বটমের মালিক মাহমুদুর রহমান তাপস, নিউ ওয়েভ স্টাইলের মালিক বজলুস সামাদ আদনান, সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ইমতেমাম হোসেন ও সহকারী প্রকৌশলী আলম মিয়া। পক্ষান্তরে আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলেও তা নাকচ করে দিয়েছেন বিচারক।
    এর আগে গত শুক্রবার রাতে দুই কারখানা মালিককে এবং আজা শনিবারে সকালে দুই প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকালে তাদের আদালতে পাঠায় পুলিশ। সাভার থানায় করা মামলায় এ চারজনকে দুটি মামলার প্রতিটিতে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার এসআই কাইসার মাতুব্বর। আবেদনের শুনানি হয় সিনিয়র হাকিম মো. তাজুল ইসলামের আদালতে।