সাগরিকার জন্য একফোঁটা অশ্রু

    0
    260

    শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ থেকেঃ ফুলের মতো ফুটফুটে শিশুটির নাম সাগরিকা । জন্মের আগেই বাবাকে হারায় । মা শাবনুর বেগমের সাথে নানা বাড়িতে আদর সোহাগ আর সকলের ভালোবাসায় বাবার অভাব ভূলে গিয়ে বড় হতে থাকে । মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের নন্দ রাণী চা বাগানের ট্রাক চালক মখলিছ মিয়ার মাটির ঘর হাসি আনন্দের স্বর্গীয় আলোয় ভরে দিত তার নাতনি সাগরিকা । হঠাৎ মাত্র তিন বছর বয়সে সাগরিকার শরীরে ধরা পড়লো ব্লাড ক্যান্সার ।

    যে মেয়েটি সারা ঘর মাথায় তুলে রাখতো হৈ হুল্লোড় আর আনন্দ উল্লাসে। সে এক বছর ধরে হাসপাতালের শক্ত বেডে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে । প্রথম তিন মাস সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারের নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা আর শরীরে কাঁটা ছেঁড়ার যন্ত্রণা সইতে হয়েছে নিষ্পাপ অবুঝ এই শিশুকে । শাবনুরের তো আর কিছুই নেই, নানা মখলিছ মিয়ার সব উপার্জন আর নানী সেলিনা আক্তারের সমস্ত স য় উজাড় করে দিলেন চিকিৎসার্থে । কোন লাভ হয়নি । অবশেষে আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীর সহযোগিতায় টাকা পয়সা যোগাড় করে সাগরিকা কে ভর্তি করানো হলো রাজধানীর পি. জি.হাসপাতালে।

    ডাক্তার আফিকুল ইসলামের তত্তাবধানে চিকিৎসাধীন আছে সে । প্রতিদিন ছয় হাজার টাকা খরচ করতে হয় । এ খরচ যোগাতে সব সহায় সম্বল বিক্রি করে আজ নিঃস্ব অভাগী শাবনুর বেগমের পরিবার । শাবনুরের মা নাতনি সাগরিকার সুস্থতা কামনায় আল্লাহ দরবারে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে আজ শোকে পাথর । আর হাসপাতালে সাগরিকা কে ডাক্তার নার্স ইনজেকশন দিতে এলে কংকালসার সেই অসহায় শিশুটি ক্ষীণ কন্ঠে আর্ত চিৎকার করে বলে, ইয়া আল্লাহ! আর কতো কষ্ট পেলে আমি ভালো হয়ে যাবো । মখলিছ মিয়ার আরেক মেয়ে টাইফওয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় মোহাজিরাবাদ হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করে আর পারেনি । হয়তো কয়েক লাখ টাকা হলেই সাগরিকা ভালো হয়ে যাবে ।

    শাবনুর বেগমের কোল ভরে উঠবে । আমরা কতো ভাবে কতো টাকাই তো খরচ করি, ফুলের মতো ফুটফুটে এই শিশুটির জীবন বাঁচাতে না হয় কিছু একটা করতেই পারি । অন্ততঃ সাগরিকার জন্য এক ফোঁটা অশ্রু তো বির্সজন দিতে পারি। আমি একজন নগন্য সংবাদ কর্মী হিসেবে এ বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । নিশ্চয়ই আপনার কোন উদ্যোগে একটি ফুল অকালে ঝরে পড়বে না।