সমিতির নামে সঞ্চয় নিয়ে সুদের ব্যবসা,গ্রাহকরা দিশেহারা

    0
    298

    নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বৃহত্তর সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় নামে বেনামে  কথিত সংস্থা গঠন করে দিব্যি সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর পেশাদার সুদী সিণ্ডিকেট।তারা লোকজনদের থেকে সঞ্চয়ের নামে পয়সা নিয়ে প্রতি লাখে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা মাসিক সুদের ব্যবসা করে যাচ্ছে।মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থেকে কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ বিষয়ে সমাজসেবার কর্ম কর্তারা মুখ খুলতে রাজী নয়। অভিযোগ রয়েছে নামকা ওয়াস্তে থাকা সুদি ব্যবসায়ীরা মাসিক মাসোহারা দিয়ে ব্যবসা চালানোর।

    সম্প্রতি  চুনারুঘাটে সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে তথা কথিত এনজিও সংস্থা ও সমিতির নামে চলছে সঞ্চয়ী সুদের ব্যবসা। এর ফাঁদে পড়ে অনেক গ্রাহকই আজ প্রতারণার শিকার হয়ে মামলা গলায় নিয়ে ভোগছেন। অনেক ভূক্তভোগী ঋণ গ্রহিতা সদস্যগণ জানান, চুনারুঘাট বাল্লা রোডের আব্দুল খালেক এর মালিকানাধীন নূরানী উন্নয়ন সংস্থা ক্ষুদ্র ঋণ/সঞ্চয় সংস্থার নামে চুনারুঘাট বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর নিকট সঞ্চয়ী সুদের ঋণ প্রদান করেন।

    এরই প্রেক্ষিতে বাল্লা রোডস্থ পার্থ সারতি চন্দ্র নামে এর কাপড়ের দোকান মালিক নূরানী উন্নয়ন সংস্থা হতে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ইং তারিখে ৩৪ হাজার ৫শ টাকা ২৫০ টাকা হারে ১৬০ কিস্তিতে পার্থ সারথি ঋণ গ্রহণ করেন। তিনি ক্রমান্বয়ে কিস্তি পরিশোধ করেন।

    পার্থ সারতিসহ অন্যান্য ঋণ গ্রহিতারা জানান, আব্দুল খালেকের নূরানী উন্নয়ন সংস্থা হতে সরল বিশ্বাসে চেক এবং স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের মাধ্যমে তারা ঋণ গ্রহণ করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করলেও ঋণ গ্রহিতাদের ব্যাংকের চেক এবং ষ্ট্যাম্পের ফেরত দেয়নি সংস্থা মালিক আব্দুল খালেক।

    পরবর্তীতে ঋণ গ্রহিতাদের চেক ডিজওনার দেখিয়ে ব্যবসায়ী পার্থ সারথী চন্দ্র (৩৮) এর বিরুদ্ধেগত ২০/০৯/২০১৮ইং তারিখে ৩ লক্ষ টাকা পাওনা দাবী করে খালেকের স্ত্রী আসমা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (কগ-২) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

    একই বিষয়ে ২৯/০৭/২০১৮ইং তারিখে পার্থ সারথীর বিরুদ্ধে একটি লিগ্যাল নোটিশও প্রদান করেন। এ বিষয়ে নূরানী উন্নয়ন সংস্থার প্রধান আব্দুল খালেক এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার নূরানী উন্নয়ন সংস্থা হতে পার্থ সারথী ঋণ নেওযার পর তার ঋণ পরিশোধ করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে আমার স্ত্রী আসমা বেগম হতে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে পার্থ সারথী। তা পরিশোধ না করায় আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।” বর্তমানে আব্দুল খালেকের বাল্লা রোডস্থ নূরানী উন্নয়ন সংস্থা ও নূরানী পোল্টিফিড চিকেন ডিলার বা নূরানী ফুট প্রোডাক্ট ডিলারের কোন পাত্তা পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে ফোন করলে তিনি বলেন, মৌলভীবাজারে অবস্থান করছেন। ঐ সমস্ত উন্নয়ন সংস্থার নামে সঞ্চয়ী সুদী ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে চুনারুঘাট বাজার।

    ফলে হাতিয়ে নিচ্ছে সুদী ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকার । প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেক ঋণ গ্রহিতা ব্যবসায়ীরা। এ সমস্ত অসাধু সঞ্চয়ী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।

    নজরুল ইসলাম নামে একজন বলেন, কোন ব্যাক্তি যদি কোনভাবে একবার অসাদু  লোকদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে ওই ব্যবসায়ীদের পাল্লায় পড়েন তাহলেই ঐ ব্যাক্তি কোন ভাবেই অসাদু সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে খেকে আর রক্ষা পান না। কারন, অসাদু সুদ ব্যবসায়ী ও তাদের লোকজন অর্থ সংকটে থাকা বিপদগ্রস্থ লোকজনের সরলতার সুযোগ নিয়ে টাকা দেয়ার সময়ই টাকা গ্রহিতার কাছে থেকে  টাকা ও তারিখের স্থান ফাঁকা রেখে ব্যাংকের চেকে শুধুমাত্র স্বাক্ষর নেয়াসহ টাকা গ্রহীতার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটো কপিসহ সুযোগ পেলে ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে ও স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন।

    প্রকাশ্য এরকম অপরাধের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকার সচেতন জনগন,অনেকেই এ ব্যাপারে প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন।