সংবাদের জের ধরে এক ডিসি কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতন

    0
    256

    “কুড়িগ্রামের মহিলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার”

    এক সাংবাদিককে গভীর রাতে তুলে নিয়ে অধীনস্থ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দণ্ড দেয়ার ঘটনায় আলোচিত কুড়িগ্রামের মহিলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করছে সরকার। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিভাগীয় ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
    রোববার দুপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ওই ঘটনা তদন্ত করে ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে প্রত্যাহার করা হবে। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। কর্ম অনুযায়ী তার শাস্তি হবে।’
    জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন করলে ডিসিকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
    ফরহাদ বলেন, ‘তদন্তে অনেকগুলো অনিয়ম দেখেছি। বিভাগীয় প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। অহেতুক যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, এর সত্যতা পেয়েছি বিধায় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
    গত শুক্রবার মধ্যরাতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আনসার সদস্যদের একটি টিম কুড়িগ্রাম শহরের চড়ুয়াপাড়ায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান রিগ্যানের বাড়িতে হানা দেয়। এরপর মারধর করতে করতে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তার পোশাক খুলে দুই চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এসব ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন ডিসি কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন। এরপর  মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ও পরে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে পাঠায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
    আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতুর দাবি, মধ্যরাতে বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে আরিফকে পেটানো, জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কোনো মাদক পাওয়া যায়নি।
    কুড়িগ্রাম শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর ডিসি নিজের নামানুসারে ওই পুকুরের নাম ‘সুলতানা সরোবর’ রাখতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দশ মাস আগে। কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম প্রতিবেদনটি করেন। সেই ঘটনায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। অভিযোগ রয়েছে, ওই সংবাদের জেরেই আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে তুলে নিয়ে কাপর খুলে ভিডিও করে,চোখ বেঁধে নির্যাতন করে এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় চারটি কাগজে দস্থখত নিয়ে  সাজানো মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়।
    এদিকে তোলপাড় করা এই ঘটনায় হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। এছাড়া আদালতে জামিন পাওয়ার পর মুক্তও হয়েছেন নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।