শ্রীমঙ্গলে ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটির আজও বাঁশের বেড়াই ভরসা!

0
261

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলাধীন শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটি ১৯০৮ সালে আসাম গভর্নমেন্ট এর আমল থেকে প্রতিষ্ঠিত হলেও আজ পর্যন্ত এই অফিসটির বাউন্ডারি দেয়াল না থাকায় বাঁশ বেতের বেড়া দিয়েই চলছে শতাধিক বছর ধরে এর কার্যক্রম।এতে ক্রমান্বয়ে বেহাত হচ্ছে মূল জমির পরিমাণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বিল্ডিংয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ দালিলীক-নথি পত্র।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার শহরটি বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে চায়ের রাজধানী হিসেবে খ্যাত একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এই শহরটি একদিকে যেমন ব্যবসায়িক এলাকা অন্যদিকে পর্যটন এলাকা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত দেশ-বিদেশে।
অথচ শ্রীমঙ্গল সাব-রেজিষ্ট্রারের এই অফিসটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কলেজ রোডে অবস্থিত। এর পাশেই রয়েছে সুরম্য অট্টালিকা সম্পন্ন তিন তলা বিশিষ্ট জামে মসজিদ এবং এর সামনেই রয়েছে শ্রীমঙ্গল থানা।ওপর পাশে রয়েছে একটি বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় যা দেয়াল ঘেরা ও গেইট সম্পন্ন।
অথচ শত বছরের এই প্রতিষ্ঠানটিতে সেবাদাতা ও গ্রহীতাদের ভাগ্যে জুটেনি দেয়াল ঘেরা একটি অফিস, উন্মুক্ত স্থানে বসার কোন ব্যবস্থা!
সূত্রমতে অন্যান্য সরকারি অফিসের তুলনায় শ্রীমঙ্গল সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।সরকারের রোজগারকারী সাধারন পাবলিকের সপ্তাহ ব্যাপী ব্যস্ত সম্পন্ন এ প্রতিষ্ঠানটি বাহির থেকে দেখলে এটা যে একটি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিস তা অনুমান করা কষ্টকর।এর গেইটে অফিসের নামটি ও অস্পষ্ট।
শ্রীমঙ্গল শহরের সাব রেজিস্ট্রার অফিস হিসেবে স্থানীয়রা ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এর সেবা নিয়ে থাকে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় সাব রেজিস্ট্রারের মুল অফিস বিল্ডিংটি মোট ৬১.৬ শতক ভুমির একপাশে আধুনিক আদলে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে প্রায় ৫৬ শতক ভুমির চারিদিকে নেই কোন দেয়াল বা স্থায়ী কোন নিরাপদ ব্যাবস্তা।
ফলে বর্তমানে মূল জমি প্রায় ৫৬ শতক রয়েছে বাকীটুকু রাস্তা ও ড্রেইনে চলে গেছে।এতে করে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের সমস্যা। চুরি-চামারিসহ বিশেষ কোন ঘটনা।
ইতিমধ্যে কয়েকবার চোরের হানা পড়েছে বলেও জানা গেছে।
পাবলিক প্লেসে চতুর্দিক খোলা এমন কোন অফিস সাধারণত দেখা যায় না।চতুর্দিক উন্মুক্ত কেবল শ্রীমঙ্গল সাব রেজিস্ট্রার অফিস। উপরোক্ত সম্ভাবনা ও অভিযোগ সাব-রেজিষ্ট্রারের আসা-যাওয়া কর্মচারী ও দর্শনার্থীদের।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেবা গ্রহণকারী বলেন অফিসের মূল বিল্ডিংটি সুন্দর হলেও চারিদিক খোলা থাকায় এটিকে ছাড়াবাড়ির (স্থানীয় ভাষায় মালিক ছাড়া) মতই দেখা যায়।
মধ্যবয়সী এক নারীর সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি বলেন,আমি আরও আসছি, এখানে ওয়াল ও দরকার,বসার জায়গারও দরকার।মানুষ বেশি আসলে ব্র্যাঞ্চ থেকে উঠলে আর বসা যায় না ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পুরুষরা যেখানে সেখানে বসতে পারে কিন্ত মহিলাদের বসতে সমস্যা হয়।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা নিরোদ বরণ বিশ্বাস আমার সিলেটকে জানান,আমার পূর্ববর্তী সাব-রেজিস্ট্রার গণ ১৯৮৬ সাল থেকে এই অফিসের বাউন্ডারি করার জন্য চেষ্টা করেছে বছরের পর বছর আমি নিজেও প্রথমবার ২০১৪ সালে এবং বর্তমানে এসে আমার জেলা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রাক্কলন গণপূর্ত ভবন থেকে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে।হবে হচ্ছে এ প্রত্যাশায় আমরা অপেক্ষায় আছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি সরকারি অফিস হিসেবে আমরা প্রতি বছর সরকারী কোষাগারে প্রচুর টাকা জমা দিচ্ছি কিন্তু রেকর্ড পত্র অনুযায়ী ১৯৮৬ সাল থেকে এ বছর পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ে বারবার প্রাক্কলন প্রেরণ করা হলেও কেন হচ্ছে না তা আমার জানা নেই।তবে এ বছর যেভাবেই হোক মাননীয় এমপি সাহেবের মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করব দেয়ালটি খুব জরুরী।