শ্রীমঙ্গলে হাতি রাজলক্ষীর মৃত্যুতে ৩সদস্যের তদন্ত কমিটি

    0
    238

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২১জুলাই,শিমুল তরফদারঃ যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে অবশেষে জীবনের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়া রাজলক্ষি’র (হাতি) জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।

    শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাজলক্ষী (হাতি)। হাতিটি মারা যাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট ১টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত মতে ঢাকা থেকে অভিজ্ঞ টিম এনে এর ময়নাতদন্তÍ করা হবে।ু

    জানা যায়, মৃত হাতিটির মালিক কমলগঞ্জ উপজেলার সিরাজুল ইসলাম গত শুক্রবার (১৪জুলাই) রাত ১০টায় ব্রাম্মনবাড়িয়া থেকে কমলগঞ্জ আনার সময় অজ্ঞাত কারণে শ্রীমঙ্গলের মৌলভীবাজার রোডস্থ ৫ নং ব্রীজের পাশে হাতিটিকে একটি ট্রাক থেকে নামানোর সময় হাতিটির শরীরে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গত ১ সপ্তাহ এক জায়গায় অবস্থান করছিলো। সেখান থেকে হাতটিকে স্তানান্তর করা সম্ভব হয় নি।

    হাতির মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন কাজের জন্য হাতিটিকে ভাড়া দেয়া হয়। কয়েক মাস আগে ব্রাম্মনবাড়িয়ার এক লোক সার্কাসের জন্য রাজলক্ষিকে ভাড়া নেয়। দুই মাস কাজ বন্ধ থাকায় খাওয়ানোর জন্য তাকে কমলগঞ্জ নিয়ে আসছিলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে হাতিটিকে কমলগঞ্জ না নামিয়ে শ্রীমঙ্গল নামাতে গিয়ে হাতিটি আঘাত প্রাপ্ত হয়। এর পর থেকে হাতিটিকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন শ্রীমঙ্গল প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভ্যাটেনারী সার্জন ডা: আরিফুর রহমান জানান, তিনি ৭দিন ধরে হাতিটিকে ঢাকা চিড়িয়াখানা ও ডুলুহাজরা সাফারী পার্কের চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। বুধবার সন্ধার পর থেকে সে খাবার বন্ধ করে দিলে হাতিটিকে খাবারের যোগান হিসেবে স্যালাইন দেয়া হয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে একটু একটু খাবার নিলেও পরিমানে খুব কম। তিনি জানান, তার ধারনা হাতিটির মেরুদন্ডে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। তার পেছনের ডান পা টি উঠাতে পারছিলো না।

    হাতির মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, তার দাদার আমল থেকেই তারা হাতি পালন করে আসছিলেন। একসময় তাদের ৮টি হাতি ছিলো এখন মাত্র ২টি। অপর একটি হাতি তাদের এক চাচার অংশে পড়েছে। আর এই রাজলক্ষির মা পড়ে ছিলো তাদের অংশে। তিনি জানান, এই রাজলক্ষিই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ছিলো।

    তিনি জানান, গত ৬দিন হাতিটি এক জায়গায় পড়ে ছিলো। যেখানে পড়েছিলো সে জায়গা গর্ত হয়ে কাঁদা পরিনত হয়েছিলো। বুধবার বিকেলে আরও একটি হাতি দিয়ে টেনে তার স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।

    এদিকে সরজমিনে বৃহস্পতিবার দেখাযায়, হাতিটি একটি পরিত্যাক্ত জমিতে পড়ে আছে। খাবার দিলে খাবার নিচ্ছেনা। লোকজন রাতেও হাতিটিকে ভীড় করে রেখেছে । এ সময় হাতিটির চোখ দিয়ে অঝরধারায় জল পড়তে দেখা গিয়েছিল।

    এদিকে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, প্রায়ই হাতি দিয়ে গাছ ও বিভিন্ন ভারি জিনীসপত্র হাতি বহন করা হয়। এতে করে বেশির ভাগ সময়ই হাতির প্রচুর পরিশ্রম হয়। এবং অনেক সময় হাতিগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসব ব্যাপারে বন বিভাগকে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।

    উল্লেখ্য গত বছরের ১৬ আগষ্ট জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বানের জলে ভেসে আসা হাতি বঙ্গ বাহাদুর নামে একটি হাতি চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায়।