শ্রীমঙ্গলে স্ত্রীর হাতে স্বামী খুনের ঘটনায় স্ত্রীর স্বীকারোক্তি

    0
    282

    আমারসিলেটটুয়েন্টিফোরডটকম,২৫জুলাই,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের সুরভী পাড়ায় স্ত্রীর হাতে স্বামী খুনের ঘটনায় স্ত্রী শিরীন আক্তার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।ঘটনার দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রীকে আটক করেছিল পুলিশ।

    এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে জবানবন্দি দেওয়ার পর আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে শিরিনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।নিহত ফারুকের মামা মোঃ মাসুক মিয়া বাদী হয়ে শিরিন আক্তার ও তার দুই ভাইকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন জানায় পুলিশ।

    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার দিন সকালে ফারুক ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় তার শিশু সন্তান ফাইজা ঘুমের মধ্যে তাকে বিরক্ত করে। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে স্ত্রী শিরিনকে গালমন্দ করে শিশু বাচ্চাকে নানীর কাছে রেখে আসতে বলে। শিরিন সন্তানকে নানীর কাছে রেখে আসার পর তাকে গালিগালাজ করে ফারুক। উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ফারুক তার স্ত্রীর চুলমুঠিতে ধরে ফেলে। ঐ সময় শিরিন তার পাশে থাকা “স্টিলের ট্রে” দিয়ে স্বামীর মাথায় এলোপাতারি আঘাত করে এবং তার বুকের উপর সেলাই মেশিনসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ফেলে ফারুককে হত্যা করে বলে শিরীন তার জবান বন্দিতে স্বীকার করে।”
    স্থানীয় একটি সুত্রে জানা গেছে,ফারুককে কুপিয়ে হত্যা করে ঘাতক শিরীন প্রথমে গোসলের কাজ শেষ করে হঠাৎ চিল্লা চিল্লি করতে থাকে এবং তার স্বামীকে কে জানি মেরে ফেলেছে বলতে থাকে! এক পর্যায়ে সে নিজেই সেলাই মেশিন,ওয়ারড্রপ,থালাবাসুন,কাপড়চোপর দিয়ে ঢেকে রাখা লাশ আবিস্কার করে কাঁদতে থাকে।

    নিহত ফারুক মিয়া (২৬) পিতা মৃত ইমানুদ্দিন গ্রাম নোয়াগাও শ্রীমঙ্গল উপজেলা।সে একজন গাড়ির মেকানিক ছিল।তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ৪ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে নাম ফাইজা তাবাসসুম রাকা।

    স্থানীয় সুত্রে আরও জানা গেছে,শিরীনের বাবা একজন রিক্সা চালক,তাদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে।শহরের একটি কলোনিতে থাকা অবস্থায় কয়েকবছর পুর্বে শিরীনকে ফারুক ভালোবেসে বিয়ে করেন।শিরিন যখন স্থানীয় একটি স্কুলে লেখাপড়া করতেন তখন ফারুক তার লেখাপড়ার খরচ যোগাতেন।বিয়ের পর শহরের সুরভী পাড়ার একটি বাসায় ভাড়াটে থাকতেন তারা।তাদের সংসারে প্রতিনিয়ত ঝগড়া লেগেই থাকতো ফলে স্থানীয়রা তা মিমাংসা করে দিতেন।

    এ ছাড়াও ঘাতক শিরীনের প্রতি ইয়াবা সেবনসহ পরকিয়ারমত নৈতিকস্খলনের অভিযোগ ও উঠে এসেছে স্থানিয়দের থেকে।

    উল্লেখ্য,গতকাল সোমবার দুপুরে খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পুলিশ ফারুকের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে।

    এ ব্যাপারে নিহতের বড় বোন রুবি বেগম গতকাল অভিযোগ করে বলেছিলেন,তার ভাবী শিরীন আক্তার আরও কয়েকজনকে নিয়ে তার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

    অপর দিকে স্থানীয় অসমর্থিত সুত্রে জানা গেছে ফারুকের একটি প্রাইভেট গাড়ী ছিল যা বিক্রি করা হয়েছে গত রোববারে এর বিক্রির টাকা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য তৈরির এক পর্যায়ে স্ত্রীর দায়ের এলোপাতারি আঘাতে তার মৃত্যু হয়।

    আজ মঙ্গলবার বাদ আছর তার নিজ গ্রাম নোয়াগাও এ জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।