শ্রীমঙ্গলে চার সন্তানের জননীকে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

    0
    243

    “অভিযোগকারীনী আত্নহত্যার চেষ্টা করলে বেঁধে রাখা হয়” অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি

    সাদিক আহমেদ,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২ নং ভূনবীর ইউনিয়ন পরিষদের রাজপাড়া গ্রামে চার সন্তানের জননীকে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
    আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৬ টায় নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগে বলা হয়।
    নির্যাতিত জননী হলেন, উক্ত ইউনিয়নের ছুরুক মিয়ার মেয়ে ও মৃত এরাজত মিয়ার স্ত্রী রুনা বেগম (৩৫)।
    সরেজমিনে অভিযোগকারী নারী থেকে জানা যায় “কয়েকবছর পূর্বে তার স্বামী আত্নহত্যা করেন।পরবর্তীতে তার দেবর ও বাসুর এবং তাদের ছেলেরা মিলে প্রতিনিয়ত তাকে ও তার সন্তানদেরকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে থাকে”।
    তিনি আরও বলেন, “তার স্বামী মারা যাওয়ার পর আর্থিক অভাব অনটনের কারণে স্থানীয় একটি গ্লাস ফ্যাক্টরিতে কাজ করে পরিবার চালিয়ে যান।দুই মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তানের ভরণ পোষণের কারণে ঐ ফ্যাক্টরিতে তাকে কাজ করতে হয়।কাজের সুবাদে আসা যাওয়া কালীন সময়ে ৫/১০ মিনিট দেড়ী হলে আমার বাসুর ও দেবররা বিভিন্ন জনকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বার্তা বলে থাকে।

    তিনি আরও বলেন “স্বামীর মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি সঠিকভাবে ভাগ বাটোয়ারা না করে উল্টো নানা ভাবে আমাকে ও আমার ছেলে মেয়েদের দোষারুপ করে চলছে প্রতিনিয়ত।তাদের একটাই উদ্দেশ্যে সম্পত্তির ভাগ থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করা”।
    তিনি আরও বলেন “গত কয়েকদিন ধরে আমার স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়িতে ঘর দরজা করতে চাইলে দেবর ও বাসুরেরা বাড়ির মূল জায়গা থেকে নিঁচু জমিতে ঘর বানাতে বলে।আমি মহিলা মানুষ বলে নিচু জমিতে ঘর করতে এবং মাটি ভরাট করতে আমার জন্য অসম্ভব-এ কথা তাদেরকে জানালে তারা নানা কায়দা করে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে”।
    ঘটনার দিন আজ সকালে উপরোক্ত বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমাণ্যদের কাছে গেলে তারা আওয়ামীলীগ নেতা আছকির মিয়ার কাছে যেতে বলে। আমি যখন উনার কাছে বিচারের জন্য যাচ্ছিলাম তখন আমার বাসুরেরা রাস্তা থেকে ধরে এনে হাত পা বেঁধে আমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে।পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে প্রেরণ করে।
    হাসপাতালে প্রেরণকারী পুলিশের এক সদস্য আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন “গত দুই-একদিন আগে তারা থানায় এসেছিলো অভিযোগ করতে।পরে অভিযোগ না করেই চলে যায়।এর মধ্যে আজ এ ঘটনা ঘটে গেছে।স্থানীয়দের ফোন পেয়ে ওসি সাহেব আমাদেরকে রাজপাড়ায় প্রেরণ করেন।আমরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করি। এ বিষয়ে এখনও কোনো মামলা হয়নি তবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে”।
    এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের একজন সোহেল মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন,”তাকে নির্যাতনের ঘটনা মিথ্যা।পারিবারিক গণ্ডগোলের কারণে সে আত্নহত্যা করার চেষ্টা করে।এজন্য তাকে বেঁধে রেখে চেয়ারম্যান মেম্বারকে খবর দেয়া হয় এবং তাদের হাতে সোপর্দ করি।তার জীবনের নিরাপত্তা ও মামলা মোকদ্দমা থেকে বাঁচতে তাকে এভাবে আটক করে রাখা হয়”।

    জায়গা সম্পত্তির অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি (সোহেল মিয়া)বলেন, “এ ঘটনা আংশিক সত্য।তবে ভাগ বাটোয়ারার জন্য নয়।এ মহিলার বাসায় বিভিন্ন স্থানের পুরুষ লোকজন আসা যাওয়া করে।ফলে আটি বান্দা (যৌথ বাড়ি) বাড়িতে সমস্যা হয়।তার বেপরোয়া চালচলনের কারণে এবং বাড়ির অন্যান্য মেয়েছেলেদের ইজ্জতের কথা চিন্তা করেই তাকে আলাদা স্থানে বাড়ি করার জন্য বলা হয়” উচ্ছেদের কথা ঠিক নয়”।