শ্রীমঙ্গলে গরু চোরের সন্ধানের জেরে কাঁচা ধান কেটে সাবাড়

    0
    306

    জহিরুল ইসলাম,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভারতীয় সীমান্তলগ্ন জাম্বুরা ছড়া পাহাড়ি এলাকাতে পূর্ব শত্রুতা এবং গরু চোরের সন্ধানের জেরে কাঁচা ধান কেটে সাবাড় করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ এমন অভিযোগ করেছে জমির মালিক আব্দুল সাত্তার। এ বিষয়ে সোমবার সকাল ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনা স্থল থেকে ভারতীয় সীমান্ত প্রায় ২০০ ফুট দূরে অবস্থিত।

    জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীমঙ্গল সিন্দুর খাঁ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল সত্তার (৫৫) এর ৪৫ শতক জায়গার কাঁচা ধানের ফসলসহ পুরো জমির ধান নষ্ট করা হয়েছে।তিনি এ বিষয়ে ১১ জনকে আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

    খবর পেয়ে এই প্রতিনিধি সরেজমিনে গেলে দেখা যায় কৃষক আব্দুল সত্তার এর ধানের জমিনের সকল ধান কেটে ফেলা হয়েছে।

    এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে এলাকার নারী পুরুষ সহ ৩০/৪০ জন ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার বিবরণ দিতে থাকে। এ সময় সবাই অভিযোগ করে বিবাদীরা খুব খারাপ চরিত্রের। এদের যন্ত্রণায় এলাকাবাসীরা আতঙ্কে দিন যাপন করেন।

    ঘটনার ব্যাপারে আব্দুল সত্তার (৫৫) বলেন, আজ সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে দেখি আমার বাড়ির পাশে আমার ৪৫ শতক ধানের জমিনে কমপক্ষে ২০/৩০ জনের একটি দল জমিনের কাচা ধান কেটে ফেলতেছে।আমি আরেকটু কাছে গিয়ে দেখি আসমত আলী,আব্দুল রহিম,আব্দুল হক,রুপন মিয়া,তোফিক, শফিক মিয়া,কালাম মিয়া,আছমত আলী,আব্দুল শাহিনসহ আরোও অনেকের হাতে ধারালো দা কাঁচি দিয়ে ধানের ক্ষেতে এলোপাতারি কুপিয়ে কুপিয়ে মাটিতে ফেলতেছে।আমরা কাছে গেলে আমাদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করতে ধাওয়া করে।

    আজগর মিয়া (৩২) জানান,গত শুক্রবার পহেলা মে রাতে আছমত আলীর লোকেরা আমার একটি গরু চুরি করে চুনারুঘাট থানার কালেঙ্গাতে নিয়ে যায়। আমরা অনেক খোজাখুজির পর জানিতে পারি যে মো. রফিক মিয়ার ছেলে (১) মো. সোহেল মিয়া (৩০) মো. মানিক মিয়ার ছেলে (২) মো.সোহেল মিয়া (২৫) আসতম আলীর ছেলে রুশন মিয়া (৩০) ও মো.মাহমুদ উল্লাহ ছেলে মনা মিয়া (৩২) তারা আমার গরু চুরি করে নিয়ে যায়।আমরা তাদের চুরির বিষয়ে জানতে পারায় তাদের বাপ চাচারা মিলে আমাদের এলাকার কৃষক আব্দুল সত্তার এর ধানী জমিনের কাচা ধান কেটে ফেলে । এতে ২০/৩০ জনের একটি দল অংশ গ্রহণ করে। আমরা তাদের বাঁধা দিতে আসলে তারা আমাদের কে উল্টো হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রসহ আমাদের ক্ষেতে হামলা চালাতে তাড়া করে।প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

    কাটা ধান ক্ষেতের পাশেই পেঁপের এই জমিন নিয়ে মালিক নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে  হোসেন পোষণ করেছেন।

    অপর দিকে ধান ক্ষেতের পাশে থাকা পেঁপে বাগানের মালিক মো. হোসেন মিয়া (৪১) জানান,আমি আমার পেঁপে বাগান নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি তারা আমার ফসল যে কোন সময় নষ্ট করে দিতে পারে। এদের বিশ্বাস করা আর না করা সমান।আসমত আলীরা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক এরা এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

    এদের নামে শ্রীমঙ্গল থানাসহ কোর্টে চুরি, ডাকাতি,নারী নিযার্তন ও মার্ডার মামলা রয়েছে।এরা সীমান্ত দিয়ে গরু চুরি ও বিভিন্ন বেআইনী অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে।এদের কাছে এলাকার মানুষ জিম্মি।

    অভিযুক্ত মো. আসমত আলী ও অভিযুক্ত শফিক মিয়ার সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

    এ ব্যাপারে এলাকার ৬নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মো. তারেক মিয়া বলেন,আজ থেকে ২ বছর আগে আমি গিয়েছিলাম তাদের জায়গার দাগ নিয়ে সমস্যা ছিল। আমরা ক’জন বসে শালিশ করেছি।দাগ নিয়ে সমস্যা ছিল আমরা আমিন নিয়ে মেপে জমিনের দাগ নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা ছিল কিন্ত তারা দুই পক্ষই বিবাদে জড়িয়ে পরে। এতে আব্দুল সত্তারের ছেলের ডান হাতে কুপিয়ে গুরুতর ভাবে জখম করে।এনিয়ে বর্তমানে কোর্টে মামলা বিচারাধীন আছে।আজকের বিষয়ে আমাকে কেহ এখনো জানাইনি আমাকে। আর গরু কারা চুরি করেছে তাকে আমরা এখনও শনাক্ত করতে পারি নাই। তবে গরু কোথায় আছে আমরা খবর পেয়েছি গরু উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

    এ ব্যাপারে স্থানীয় থানার ওসি আব্দুছ ছালেক জানান অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।